ঝড়ের সময় মেঘেরা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়, তাতে প্রচন্ড শব্দ সহকারে বৈদ্যুতিক ঝলক তৈরি হয়ে মাটিতে এসে পড়ে। আর জের টানতে হয় মানুষ ও অন্যান্য প্রাণিকে।
বাংলাদেশে এপ্রিল–মে মাসে কালবৈশাখী ঝড়ের প্রকোপ বাড়ে এবং এ সময় বজ্রপাত খুব সাধারণ একটা ঘটনা। তবে এ বছর মার্চ মাসেই কয়েকদিন কালবৈশাখী ঝড়ের কবলে পড়েছে দেশবাসী এবং শেষ দশদিনে সারাদেশে বজ্রপাতে মৃত্যু হয়েছে ৩০জনের। এদের মধ্যে আবার শুধু ৩১শে মার্চ সাত জেলায় মারা গেছেন ১৩জন।
এর আগে ২০১৩ সালের ৬ই মে সারাদেশে ২৪জন মারা যান। ২০১২ সালের এপ্রিল–মে মাসে মোট ১৫২জনের মৃত্যু হয় আর ২০১১ সালের মে মাসে প্রাণ হারান ৫৮জন।
সুতরাং বুঝতেই পারছেন এদেশে বজ্রপাতে মৃত্যুর ঘটনা কতোটা বেশি। কারণটাও সহজে বোধগম্যঃ সচেতনতার অভাব।
খবর বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে, বজ্রপাতে নিহত ও আহত ব্যক্তিদের মধ্যে মাঠে কর্মরত কৃষকের সংখ্যাই বেশি। এছাড়া খোলা জায়গায় থাকার কারণে বা ধাতব পদার্থের সংস্পর্শের কারণে অনেকেই মৃত্যুবরণ করেন।
কিছুদিন আগে বজ্রপাত সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করতে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি ফেসবুকে একটি ফটোপোস্ট দেয় যা প্রায় সাড়ে ৪হাজার শেয়ার হয়। তাছাড়া বিভিন্ন সাইটে বজ্রপাত থেকে রক্ষার উপায় সম্পর্কে প্রাপ্ত তথ্যগুলোকে এখানে দেয়া হলো। নিজেরা সাবধান হোন এবং অন্যদের সচেতন করুন।
# বাড়িকে বজ্রপাত থেকে নিরাপদ রাখতে আর্থিং সংযুক্ত রড স্থাপন করুন;
# খোলা ও উঁচু জায়গা এড়িয়ে চলুন;
# নিচু হয়ে বসুন, কিন্তু মাটিয়ে শুয়ে পড়বেন না;
# পাকা দালানের ছাদের নীচে আশ্রয় নিন;
# টিনের ছাদ এড়িয়ে চলুন, স্পর্শ করবেন না;
# নদী, পুকুর বা কোন জলাশয় থাকলে দূরে সরে যেতে হবে;
# আশপাশে উঁচু কোন গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি, টাওয়ার থাকলে দূরে সরে যান;
# গাড়ির ভেতরেও নিরাপদ, তবে ধাতব বডির সাথে শরীরের সংযোগ না থাকলেই হলো;
# ঘনঘন বজ্রপাতের সময় ঘরের ভেতরে ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার না করাই ভালো;
# বজ্রপাতের সময় বাড়িতে থাকলে জানালার কাছাকাছি থাকবেন না, জানালা বন্ধ রাখুন;
# চামড়ার ভেজা জুতা বা খালি পায়ে থাকা খুবই বিপজ্জনক, রাবারের জুতা সবচেয়ে নিরাপদ;
# কেউ আহত হলে বৈদ্যুতিক শকে আহতদের মতো করেই চিকিৎসা করতে হবে, শ্বাসপ্রশ্বাস ও হৃৎস্পন্দন ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।