যমুনা গ্রুপের অধীনে পরিচালিত এই জিন্স তৈরির কারখানাটি তাদের রাসায়নিক-মিশ্রিত পানি পরিশোধন যন্ত্র থাকলেও তা না চালিয়ে নদীতে ফেলছিল। পাশাপাশি ফ্যাক্টরিটি পরিবেশ ছাড়পত্র নবায়ন করেনি গত ১০ মাসেও। তাছাড়া গত ৩ বছরেরও বেশি সময় ধরে এদের সাবধান করার পরেও দূষন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়নি কারখানা কর্তৃপক্ষ।
মুনীর চৌধুরির এই অভিযান আমরা পত্রিকার লোকেরা প্রায়ই দেখি, হয়তো ব্যবসায়িরা যারা টাকা বাচাঁতে গিয়ে পরিবেশের উপর যাচ্ছেতাই অত্যাচার করছে তারাও দেখে। কিন্তু পাত্তা দেয় না। নইলে বারবার পাহাড় কাটা থামাতে পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের কেন সারাদেশ ঘুরে দেখতে হবে? কেন একের পর এক ফ্যাক্টরি বন্ধ করে দেবার পরেও ব্যবসায়িরা বর্জ্যপানি পরিশোধন যন্ত্র চালাচ্ছে না? অনেকেই তো এখনও সেটা কি জিনিস তা হয়তো জানেইনা।
কেননা এদের লোক আছে সরকারি অফিস ও রাজনৈতিক নেতা মহলে, যারা অনিয়মের তথ্য ফাঁস না করতে ঘুষ খায়, আর বিপদে পড়লে জেল-জরিমানা থেকে বাচাঁতে পারে।
পরিবেশ অধিদপ্তরেও নিশ্চয়ই এমন অনেক কর্মকর্তা আছেন যারা চোরের পক্ষে কথা বলছেন। নইলে দেশের পরিবেশের এই বেহাল দশা কেন?
নানান দুষণে যখন সাধারন মানুষের নাভিশ্বাস, যখন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে সরকারের সবচেয়ে উচ্চতম মানুষটিও সোচ্চার, তখন এসব কুকর্ম কি করে ঘটছে? আরো ঘটবে যতদিন না সরকার নগরায়ন আর শিল্পায়নের দোহাই দিয়ে ব্যবসায়িদের ছাড় দেয়ার চিন্তা থেকে সরে আসছে।
তার মানে কি আমরা ডায়লগবাজ জাতি?
হা, তা বলা যায়।
কেননা, ১৬ কোটি মানুষের এই দেশে, যেখানে শিক্ষার হার কম, পরিবেশ অধিদপ্তরের অফিস আছে মাত্র ২১টি। পরিবেশ দূষন অর্থ্যাৎ বায়ু, পানি, শব্দ ইত্যাদি ক্ষেত্রে শাস্তি দিতে ও মনিটরিং-এ নিয়োজিত আছেন মাত্র ২জন ম্যাজিস্ট্রেট। মুনীর চৌধুরি একজন পরিচালক পদমর্যাদার কর্মকর্তা হিসেবে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা রাখেন। তাহলে হলো ৩জন।
তাছাড়া বাজেট ও মানবসম্পদও কম। এই অবস্থায় কিভাবে তারা সারাদেশের গাড়ি, ইটের ভাটা ও ফ্যাক্টরি থেকে নির্গত হওয়া ধোঁয়া; পানিদূষনের জন্য ব্যক্তি ও কারখানার বিরুদ্ধে এবং শব্দ দূষনের জন্য গাড়ি, ত্রুটিপূর্ণ যন্ত্র যারা চালায় তাদের বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর কিভাবে নিয়মিত ব্যবস্থা নেবেন?
শুধুমাত্র ব্যক্তিক দূষনের কথা নিয়ে আরেকটি লেখা লিখতে হবে।