‘কাজী অফিস’ একটি আইন বহির্ভূত শব্দ

কাজী মাহমুদুর রহমান
Published : 6 Dec 2017, 04:56 AM
Updated : 6 Dec 2017, 04:56 AM


ছবিসূত্র: http://kaichapurup.mymensingh.gov.bd (কৈচাপুর ইউনিয়ন)

বিবাহ আইনের কোথাও 'কাজী অফিস' বলে কোন শব্দ নাই। আছে 'নিকাহ ও তালাক নিবন্ধন অফিস'। বাংলাদেশে বিবাহ ও তালাকের ক্ষেত্রে যে সকল আইন প্রচলিত, সেগুলো হলোঃ

০১. মুসলিম বিবাহ ও তালাক (রেজিস্ট্রীকরণ) আইন, ১৯৭৪ (The Muslim Marriages and Divorces Act-1974)

০২. খ্রিস্টান বিবাহ আইন -১৮৭২ (The Christian Marriage Act-1872)

০৩. বিশেষ বিবাহ আইন-১৮৭২ (The Special Marriage Act-1872)

০৪. হিন্দু বিবাহ আইন -২০১২ (The Hindu Marriage Act, 2012)

মুসলিম আমলে বিবাহ ও তালাক হতো কোর্টে। কোর্টের বিচারপতি ছিলেন কাজী। চিফ জাস্টিসকে বলা হতো কাজী-উল-কুজাত। রাষ্ট্রের সম্পদের হিসাবও কাজীর কাছে থাকতো। তাই কাজীর আদালতে বিবাহ ও তালাক নিবন্ধন সম্পন্ন করা হতো।

ছবিসূত্র: http://dhormapurup.feni.gov.bd (ধর্মপুর ইউনিয়ন)

ব্রিটিশ আমলে কাজীদের বাদ দিয়ে বিচারক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় অল্পবয়সী ইংরেজদের, যাদের দ্বারা মোটেও বিচার কাজ চালানো সম্ভব ছিল না। তাই তারা জুরি র্বোড তৈরী করে ও প্রাক্তন কাজীদের নিয়োগ দেয় জুরি বোর্ডে। বিবাহ ও তালাক নিবন্ধন দয়িত্বটা কাজীদের কাছ থেকে সরিয়ে না ফেললেও অরিজিনাল কাজীরা বিবাহ নিবন্ধন করা থেকে সরে পরে।

মুসলিম ও ভারতীয় কর্মী উন্নয়নে বংশগত বিষয়টা গুরুত্ব দেয়া হতো। ফলে কামারের ছেলে কামার ও কুমারের ছেলে কুমার, কিংবা কাজীর ছেলে কাজী হবে এমনটাই ছিল কর্মপ্রথা। বিবাহ-তালাক নিবন্ধন অফিস হোক সার্বজনীন। যেন সকল ধর্মের মানুষ তাদের বিবাহ-তালাক নিবন্ধনের কাজটা সহজে সম্পন্ন করতে পারে বিবাহ- তালাক নিবন্ধন অফিসে।

কাজী মাহমুদুর রহমান
এলএলএম, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল উইনিভার্সিটি