বিদেশে নারী গৃহকর্মী প্রেরণ না যৌন দাসী প্রেরণ

রাফসানযানি প্রীতম
Published : 5 April 2015, 07:51 PM
Updated : 5 April 2015, 07:51 PM

বাংলাদেশ ভারত ফিলিপাইন ও ইন্দোনেশিয়া থেকে প্রতি বছর বিশাল সংখ্যক দারিদ্র পিরীত নারী গৃহকর্মী হিসাবে উপসাগরীয় দেশগুলোতে সরকার ও বিভিন্ন রিক্রুটিং এজেন্সি গুলোর মাধ্যমে যেয়ে থাকে ৷ দারিদ্রতা থেকে মুক্তি পেতে এরা বিদেশ গমন করলেও তাদের বেশীর ভাগ নারীর গৃহকর্মী হিসাবে কর্মে নিয়জিত থাকা অবস্থায় তাদের নির্যাতনে অভিঙ্গতা নিয়ে দেশে ফিরতে হয়৷উলেখ্য এই সকল গৃহকর্মীদেরকে তাদের কর্তা নরপশু গুলো হরহামেসই যৌন নির্যাতন করে থাকে এই অবলা নারীগুলো দেশে ফিরলে তাদের মুখ থেকেই তা শোনা যাই যা আমাদের কারও অজানা নয় ৷ তাদের কর্তা নর পশু গুলোর নির্যাতনে এই অবলা নারী গুলো নানা প্রকার যৌন মরন ব্যাধিতে আক্রান্ত হয় এবং দুঃসহ মানসিক যন্ত্রনা আজীবন বয়ে
বেড়াতে হয় কিছু দিন আগে জার্মানীর রাষ্ট্রীয় গনমাধ্যম ডয়চে ভেয়েলে প্রকাশিত হয় ইন্দোনেশিয়ান এক নারীর দুঃসহ নির্যাতনের কথা যা বিশ্ব মানবতাকে অপমানিত করে যে নারী এক সময় সৌদি আরবে গৃহকর্মী হিসাবে কর্মরত ছিল এখানে হুবহু তার অংশবিশেষ তুলে ধরা হলো –
এখানে সে নারী বলে 'মানুষ আমাকে মনে করে আমি খুব শক্ত মেয়ে৷ কিন্তু মানুষ জানে না ভেতরে ভেতরে আমি ভেঙে খান খান হয়ে যাচ্ছি৷ আমি গোপনে অশ্রু ফেলি, কিন্তু কাউকে আমি আমার কান্না দেখাতে চাই না'৷ কথাগুলো বললেন সুনারশি৷ এটা অবশ্য তার আসল নাম নয়৷ ১৫ বছর আগে৷ সুনারশির বয়স তখন ১৭৷ খুব গরিব ঘরের মেয়ে৷ স্কুলের ফি দেয়ার মত কোন টাকা না থাকায় এক সময় স্কুলের গন্ডি আর পেরুতে পারলেন না৷ সেই সময় তার চিন্তা এলো বিদেশে যাবার৷ অভিবাসী শ্রমিকদের নানা সাফল্যের কথা শুনে তিনিও সিদ্ধান্ত নিলেন
এই কাজ করবেন৷ চলে গেলেন একটি প্রশিক্ষণ কোম্পানিতে৷ সেখানে গিয়ে গৃহকর্মের প্রশিক্ষণ নিলেন৷ সংগ্রহ করলেন পাসপোর্ট৷ একদিন ঐ কোম্পানি জানালো এক আরব তার বাসার কাজের জন্য এমন একজনকে খুঁজছেন যে হবে একজন কুমারী, বাদামী বর্ণের গায়ের রং, লম্বা৷ স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে সুনারশি বললেন: 'আমি অন্য আরও অনেকের সঙ্গে এই
চাকুরির জন্য তালিকাভুক্ত হলাম৷ তারপর আমাদের নেয়া হলো ইন্টারভ্যু৷ একশ মেয়ের মধ্যে আমাকে পছন্দ করা হলো৷ আমার বন্ধুরা আমার নির্বাচিত হওয়ায় ঈর্ষান্বিত হল! নির্বাচিত হবার দুই সপ্তাহ পর আমাকে এক আরব নিয়ে গেলেন, তার বাড়িতে, সৌদি আরবে৷ এখান থেকেই শুরু হলো দু:স্বপ্নের৷

আমাকে যে ব্যক্তি তার বাড়িতে নিয়ে গেলেন, সে আমার আসল নিয়োগকর্তা নয়৷ আসল নিয়োগকর্তা তার পক্ষাঘাতগ্রন্থ বাবা৷ তার শরীরের নিম্নাংশ অবশ৷ সেই বৃদ্ধ আমাকে বললো ভাইব্রেটরের সাহায্যে তার পুরুষাঙ্গে মালিশ করতে৷ আমি বললাম, না৷ আমি পারবো না৷' ক্ষেপে গেলো ঐ ব্যক্তি৷ নানা ভয়ভীতি দেখালো৷ তাকে ঐ বাড়িতেই বন্দি করে রাখা হলো৷ কেবল ঐ ব্যক্তিই নয়, তার নয় পুত্রও পালাক্রমে তাকে দিয়ে মালিশ করাতো৷ করতো নানা যৌন অত্যাচার৷ এর পাশাপাশি তাকে রান্নাও করতে হতো৷ একদিন সুযোগ পাওয়া গেলো সেই
বাড়ি থেকে পালানোর৷ ঘরের দরজার তালা লাগানো ছিল না৷ বাড়ির পিছনে দিয়ে পালানোর চেষ্টা করতেই ধরা পড়ে গেলো সে৷

আসলে এটা ছিল একটি ফাঁদ৷ তাকে এবার বিক্রি করে দেয়া হলো ১৩০০ ডলারে৷ 'আমি এবার কুমিরের মুখ থেকে পড়ে গেলাম সিংহের মুখের সামনে৷ নতুন এই ব্যক্তি আসলে একজন দালাল৷ যখন কোন খদ্দেরের মেয়ে প্রয়োজন হতো আমাকে পাঠিয়ে দেয়া হতো৷ আমি হলাম এক যৌনদাসী৷ এক বছরেরও বেশি সময় আমার উপর যৌন অত্যাচার চালানো হয়৷ আমার
সঙ্গে পশুপাখির মতো ব্যবহার করা হতো৷ কিন্তু আমার জন্য প্রচুর অর্থ নিতো সেই দালাল," বলেন সুনারশি৷ এক সময় সৌদি পুলিশ তাকে আটক করে৷ ছয় মাস কারাভোগের পর মুক্তি পান
সুনারশি৷ তাকে পাঠিয়ে দেয়া হয় নিজ দেশে৷ এখন সেই সুনারশির বয়স চল্লিশ৷ তিনি জানেন না তাঁর ভবিষ্যৎ! অপর দিকে এই অবলা নারীগুলো নির্যাতিত হলোও উপসাগরীয়
রাষ্ট গুলোর কর্তা ব্যাক্তিরা ব্যাপার গুলোকে এড়িয়ে যায় ৷ এবং অনেক অংশে তার গৃহকর্মীদেরকে যৌন নির্যাতন করা তাদের কর্তাদের অধিকার হিসাবে গন্য করে ২০১১ সালের জুন
মাসের ৭ তারিখে ডেলি মেইলে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়, যেখানে কুয়েতের একজন নারী রাজনৈতিক ও টিভি উপস্থাপক সালওয়া আল মুতাইরি বলে যে, পুরুষদের জন্য যৌনদাসী রাখার বৈধতা দেয়া হলে সেটা তাদেরকে ব্যাভিচারের হাত থেকে রক্ষা করবে।" তাই বলা যাই বিদেশে নারী গৃহকর্মী প্রেরন করা অপ্রয়োজনীয় যা পূর্বে প্রেরিত কর্মীদের অভিঙ্গতা থেকে প্রমানিত