সব মাছে বিষ্ঠা খায়, নাম হয় সুরঞ্জিতের!

ভন্ডের বচন
Published : 18 April 2012, 03:03 PM
Updated : 18 April 2012, 03:03 PM

হতচ্ছাড়া ডেসটিনি একটা বড় বাজেটের পত্রিকা আনিতে গিয়া প্রথম আলোর কোপানলে পড়িয়া গেল। শুরুতেই ডেসটিনির প্রতি শোক জানাইয়া আজিকার লেখা শুরু করিতেছি। তবে কেউ ভাবিয়া বসিয়েন না, আমি ডেসটিনির লোক। গেঞ্জির ওপর টাই পড়া আমার অভ্যাস নয়, প্রচন্ড গরমে টাই পড়িয়া এক্সিকুটুব হওয়ার কোন খায়েশ আমার নাই।

আমরা ভন্ড সমাজ সমাজের সর্বত্র আছি এবং থাকিব। আমাদের উচ্ছেদ করিতে হইলে বহু সুশীলের অস্তিত্ব যাইবে, বহু রাজনৈতিকের পদ যাইবে, বহু সম্পাদকের সম্মান যাইবে। তাই আমাদের কেউ উচ্ছেদ করিতে পারিবে না। তবে বাবু সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ৭০ লাখ টাকার কেলেঙ্কারি লইয়া যেভাবে মাতামাতি হইতেছে তাতে এখন একটি প্রবাদই মনে আসিতেছে, 'সব মাছে গু খায়, নাম হয় রাগা মাছের'।
সত্যিকারভাবেই বলিতেছি বাবু সুরঞ্জিত মন্ত্রিত্ব ফিরিয়া পাওয়ায় আমি আনন্দিত হইয়াছি। তিনি ৭০ লাখ নয়, ৭০ কোটি টাকা দুর্নীতি করিয়াও যদি আমাদের রেলটাকে সময় মানিয়া চালাইতে পারেন, উন্নতি করিতে পারেন, লাভে নিতে পারেন তাহলে দুর্নীতির অভিযোগ মেনে নেব। এটা শুনিয়া হয়ত সুশীল বাবুরা লাফাইয়া উঠিয়া আমাকে একচোট গালাগাল করিয়া নিতেছেন। আপনাদের উদ্দেশ্যে একখান কথা, 'বাংলাদেশ স্বর্গ নয় যে এখানে কোন অন্যায় হইবে না। সুরঞ্জিতের বদলে অন্য কেউ আসিলে ৭০০ কোটি টাকার দুর্নীতি হইবে, কিন্তু কোন উন্নতি হইবে না-এমন নিশ্চয়তা কে দেবে? আমাদের আমও যাইবে, ছালাও যাইবে, গাছ থেকে নামিয়া দেখিব স্যান্ডেল জোড়াও নাই।'

আপনারা কি দেখিতে পাইতেছেন পশু মন্ত্রী লতিফ বিশ্বাসকে। যিনি কোন কাজই করিতেছেন না। মুরগীর দাম বাড়িতেছে, ডিমের দাম বাড়িতেছে, আর উনি ঘুমাইতেছেন আর হ্যাচারি মালিকদের কাছ থেকে টাকা খাইতেছেন।

যাই হউক, বাবুর চাকুরি গেল অথবা তিনি পদত্যাগ করিলেন। আমাদের সুশীলরা বলিতে শুরু করিলেন- আগে কেন করেন নাই। তিনি যে করিয়াছেন তার কোন শুকুর নাই। শেখ হাসিনা তাকে পদত্যাগ করিতে বলিয়াছেন কিনা-জানা নাই। কিন্তু আমরা দেখিতে পাইয়াছি তিনি তা করেছেন। এটা বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। স্বীকার করিতে দোষ কী?

যারা ব্লগ লেখেন, ভাইয়েরা, আপনাদের বলছি, কোন কিছুর একটা অংশ নিয়ে বিবেচনা করবেন না। আর বাংলাদেশকে ইউরোপ ভাববেন না। সামগ্রিকভাবে সব কিছু চিন্তা করুন। অন্য সরকারের আমলের সঙ্গে তুলনা করে দেখুন এখন পরিস্থিতি ভাল কিনা। যদি ভাল হয় তবে সেটাও স্বীকার করুন।

বাংলাদেশের প্রত্যেকটা মন্ত্রণালয়ে কম বেশি দুর্নীতি হয়। আমাদের দেশে এই সিস্টেম দাড়িয়ে গেছে। সরকার ক্ষমতায় এলে কিছু মন্ত্রীর দায়িত্বই থাকে তহবিল গঠন করার। আবুল হোসেন সেই দায়িত্বই পেয়েছিলেন। নইলে আগামী নির্বাচনের অর্থ আসবে কোথা থেকে? বাবু সুরঞ্জিত হয়ত আগামী নির্বাচন করার জন্য কিছু তহবিল গঠন করছিলেন। কিন্তু তাকেই কেন সবার পাপের দোষ একা নিতে হবে? বাংলাদেশে আর কি দুর্নীতিবাজ নেই? যুবরাজ আর তাদের ইয়ার বন্ধুদের কথা ভুলে গেলেন।

শেষে একটা কথা, খুব আবেগ(!) তাড়িত হইয়া লেখাটি লিখিয়া ফেলিলাম। সাধারণত জামাতের বিরুদ্ধে ছাড়া অন্য সময় আবেগতাড়িত হইনা। যাদের উদ্দেশ্যে লেখাটি লেখা তারা তো নিরপেক্ষ নন। তারা তো কোন না কোন রাজনৈতিক মতাদর্শ দ্বারা তাড়িত এবং নিরপেক্ষভাবে কোন কিছু বিশ্লেষণ করেন না। আসলে জগতে আমি ছাড়া কেউ ভাল না(!)।

বিচার ছাড়াই যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি চাই। '৭১-এ যখন কোন বিচার বোধ ছিলনা, তবে এখন কেন এত বিচার বা আন্তর্জাতিক মান রক্ষার প্রশ্ন। সঙ্গে সুশীলদের ফাঁসি চাই- যারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে আন্তর্জাতিক মান নেই বলে প্রচারণা চালায়।

নোট- আমি তো আমাকে ভালই বলিব। কিন্তু আপনারে ভাল বলে ভাল সেই নয়। পরামর্শ- ভোট দেওয়ার সময় একটু বিচার করুন। মার্কা নয়, ভাল লোককে ভোট দিন।