রাজধানীর জলজটে ফেসবুকেও বৃষ্টি, বিড়ম্বনায় নগরবাসী!!

রাজিব রাজ
Published : 2 Sept 2015, 06:59 PM
Updated : 2 Sept 2015, 06:59 PM

চারিদিকে বৃষ্টি আর বৃষ্টি, সাথে নগরীর জলাবদ্ধতা ও ভোগান্তির চিত্রগুলোও বৃষ্টিরুপে ছড়িয়ে পড়েছে সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে আলোচিত সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক জুড়ে। তারই বদৌলতে আমার আজকের এই লেখনী।

ঢাকা শহরজুড়ে ফ্লাইওভার নির্মাণ, রাস্তা খোঁড়া-খুঁড়ি সহ নানাহ কারণে তীব্র যানজটের কবলে পড়ে বিপর্যস্ত জনজীবন। তার উপর একটু বৃষ্টি হলেই সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতার। কমতি থাকেনা, শ্রমজীবি ও সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন চলাফেরায় ভোগান্তির।

গত সোমবার হতে চলতে থাকা বৃষ্টিতে আজ ৩য় দিনের মত নাগরিক জীবনে দুর্ভোগ অব্যাহত রয়েছে। গতকাল কিছুটা কম থাকলেও আজ বুধবার ভোর থেকেই থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। এতে নগরীর বিভিন্ন সড়কে জলাবদ্ধতা সহ চিরচেনা সেই যানজটও দেখা দিতে ভুলেনি। এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে, এই বৃষ্টি আগামী সাত দিনও চলতে পারে। যেখানে ৩দিনের বৃষ্টিতে শহরের এ বেহাল দশা, আগামী ৭দিন হলে সেটা কি করে সামাল দেবেন মাননীয় মেয়ররা!!!

অতিরিক্ত জলাবদ্ধতার দরুন রাস্তায় পাবলিক পরিবহন চাহিদানুযায়ী না থাকায়, স্কুলগামী শিক্ষার্থীসহ অফিসগামীদের ঘন্টার পর ঘন্টা বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। বিকল্প হিসেবে রিক্সা বা সিএনজি'র দ্বারস্ত হলে গুণতে হচ্ছে দ্বিগুণ বা ততোধিক ভাড়া। কেউবা আবার প্যান্ট গুঁটিয়ে পায়ে হেঁটে চলেছেন নিজ গন্তব্যের উদ্দেশ্যে। সকালে অফিসের উদ্দেশ্যে বের হয়ে দুপুর নাগাদও অফিসে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছেনা অনেকের। আবার ঘরে ফেরার পথে পোহাতে হচ্ছে চরম ভোগান্তি।

যেখানে ২-৩ ঘন্টার বৃষ্টিতে পুরো ঢাকা শহর ডুবে যায় এবং ১ঘন্টা দূরত্বের রাস্তা পার হতে যেখানে সময় লেগে যায় ৩-৫ ঘন্টা, সেখানে এ শহর কতটুকু বসবাসের উপযোগী, সেই বিবেচনা আপনারা পাঠকরাই করুন।

এত কিছুর পরেও রাজধানীতে সদ্য হয়ে যাওয়া দুই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নির্বাচিত মেয়রদ্বয় কী করছেন!! সরেজমিনে না হোক, প্রযুক্তির বদৌলতে ফেবুকে বৃষ্টির মতো ছড়িয়ে পড়া এসব ভোগান্তির চিত্র কি ওনাদের নজর কাড়েনি, নাকি চোখেই পড়েনি!! যদিবা নজরে না এসে থাকে, তাহলে অনুগ্রহ পূর্বক সেই ফেবুক বৃষ্টি থেকে আমার সংগৃহীত ৩৫টি ছবিকে ৩টি ছবিতে রুপান্তরের মাধ্যমে এ লেখনীর সহিত সংযুক্ত করা ছবি ৩টি এক নজরে দেখে নিতে ভুলবেননা, তাতে হয়তো আমরা নগরবাসী আপনাদের কৃপা বর্ষণে কৃতার্থ হবো।

নির্বাচনী ইশতেহারেতো আমরা ভুরি ভুরি আশ্বাসের বাণী শুনে থাকি, বাস্তবে তার ফলাফল কতটুকু, তা আমার বোধগম্য নয়। সম্প্রতি ভোটকেন্দ্রে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েও ভোটে অংশগ্রহণ না করে ফিরে আসিনি, শুধু স্বপ্নীল ও প্রশান্তিময় নগরী পাবার প্রত্যাশায়।

গতকাল ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাহেব তাঁর ফেবু ফ্যান পেইজে লিখেছিলেন, "ঢাকাকে বিশ্বমানের কাতারে এগিয়ে নেওয়াই আমার লক্ষ্য", ধন্যবাদ জানাই ও সাধুবাদ জানাই নগরবাসীকে বিশ্বমানের কাতারে নেওয়ার এমন প্রত্যাশার জন্য; তবে আমার অনুরোধ লোক দেখানোর জন্য নয়, কাজ করতে হবে জনগণের জন্য। ব্যক্তিগত বা দলীয় ক্ষুদ্র স্বার্থগুলোকে বিসর্জণ দিয়ে, জনগণের বৃহৎ স্বার্থের দিকে মাথা রেখে, বাস্তবতার নিরিখে সময়োচিত মোকাবেলার মাধ্যমে পরিকল্পিত নগরী গড়ে তুলতে ঢাকাবাসীর পক্ষে আমি সম্মানিত মেয়রদ্বয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।