২০০৬ সালের ঝুলন যাত্রা, দিনটি ছিলো ৫ আগষ্ট ২০০৬ খ্রিঃ (২১ শ্রাবণ ১৪১৩ বাং) শনিবার একাদশী তিথি। একাদশী থেকে চাঁদপুর পুলিশ লাইনে কর্তব্যরত অবস্থায় সকাল সকাল প্রস্তুত হচ্ছিলেন পুরান বাজার ইসকন্ মন্দিরে গিয়ে ভগবানকে দোলে উঠাবেন বলে। কিন্তু না, সে অপেক্ষা আর ভগবান করেননি; ভগবানকে দোলে উঠানোর ঠিক সেই মুহূর্তেই সকলকে কাঁদিয়ে আমাদের মহান এই জন্মদাতা পিতা পৃথিবী থেকে চিরমুক্তি নিয়ে যাত্রা করলেন ভগবদ্ধামের উদ্দেশ্যে।
আজকের এই ১০ম মহাপ্রয়াণ দিবসে বাবাকে জানাই গভীর ভালোবাসা সহ বিনম্র শ্রদ্ধা এবং এরই সাথে উৎসর্গ করলাম নিচের কবিতাটিও।
"তুমি নেই-তবু আছো"
আজকে তুমি নেই গো পাশে
তবু যেন আছো,
তোমার মায়ারই সেই আঁচলে
কল্পে ভালোবেসো !
দূর আকাশের তারা হয়ে
আমায় যেন দেখো,
তোমার আশীর্বাদে ঐ বিধির হাতে
ভাগ্য আমার লিখো !
প্রভাতে কেউ ঘুমের ঘোরে
থাকলে বিছানাতে…
তার বাবা যখন শাসন ভরে
ডাকে সেই প্রভাতে-
তখন বাবা তোমার সে শাসন
বড্ড মনে পড়ে !
যেন তুমি আজ করতে শাসন
আবার এলে ফিরে !
খুব যতনে আপন মনে
বিদ্যালয়ে দিতে,
বাবা যখনই চুমু আঁকে
ছেলের কপালেতে-
মনে পড়ে তোমার আঁকা বাবা
সেই যে চুমুখানি !
যে চুমুতে সুখের ছোঁয়ায়
মুছতো কষ্ট-গ্লানি !
দুপুর বেলার ভরা রোদেও
খেলে যখন শিশু,
ডাকে যখন ভাত খেয়ে যা
আয়রে বাবা রাজু-
মনে হয় বাবা ডাকছো তুমি
যেন আমায় এসে,
খাইয়ে দিতে ভাত দু'খানা
মায়ার সে আবেশে !
দেখি যখন বিকেল বেলা
খেলাধুলোর শেষে,
বাবা ছেলেকে হাত-পা ধুয়ে
পড়াতে যায় বসে !
মনে হয় বাবা তুমিও আমায়
বলছো এসে ডেকে,
আয়রে খোকা পড়তে এখন
সবকিছুকে রেখে !
রাতের বেলা একা কারো
ঘুম না এলে চোখে !
বাবা যখনই ঘুম দিয়ে যায়
মাথায় হাতটি রেখে,
আমি তখন ভাবতে থাকি
তুমি যে মাথার পাশে,
আদর করে দিচ্ছো আমায়
ঘুমপাড়ানির দেশে !
এমন করে দিন কি রাতে
অনুভবেই থেকো,
কে বলে বাবা আমাকে তুমি
দূরে দূরেই রাখো !
এমনি করে আর ক'টা দিন
কল্পে থেকো পাশে,
তার পরে বাবা তুমি আর আমি
থাকবো ভীষণ কাছে !