বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থা বাস্তবভিত্তিক ও বৈষম্য দূরীকরণে সহায়ক

আহমাদ রাসেল
Published : 25 May 2018, 06:22 AM
Updated : 25 May 2018, 06:22 AM

দেশের অধিকাংশ মানুষই বর্তমানে বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থা (জেলা কোটা, নারী কোটা, মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কোটা ও প্রতিবন্ধী কোটা) বহালের পক্ষে।

বর্তমান কোটা ব্যবস্থা কোনো ভাবেই সমাজে বৈষম্য সৃষ্টি করছে না, বরং বৈষম্য দূর করতে সহায়তা করছে। বৈষম্য দূরীকরণে কোটা ব্যবস্থা বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। কোটা ব্যবস্থা যে বাস্তবভিত্তিক তা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাও বিগত সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন।

কোটা ব্যবস্থার কারণে কোনোভাবেই অমেধাবীরা সুযোগ পাচ্ছে না। কারণ কোটা প্রয়োগ করাই হয় প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় সাধারণভাবে সকলে উত্তীর্ণ হওয়ার পরে। যেমন বিসিএসের ক্ষেত্রে সকল পরীক্ষায় মেধার ভিত্তিতে উত্তীর্ণ হওয়ার পরে কোটা পদ্ধতির ব্যবহার করা ক্যাডার বন্টনের সময়। এমনকি যা আবার কোটার প্রার্থী না পাওয়া গেলে সাধারণ প্রার্থী দিয়ে পূরণ করা হয়।

এখানে একটি বিষয় উল্লেখ না করলেই নয়; কোটা এবং মেধা বলে নতুন করে দুটো শব্দ আবিষ্কার করা হয়েছে। যা বর্তমান উন্নয়নবিরোধী ষড়যন্ত্রে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে শব্দ দুটি হবে কোটা ও সাধারণ। যারা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন নিঃসন্দেহে তারা সকলেই মেধাবী।

কোটা ব্যবস্থার অনুপস্থিতিতে বৃদ্ধি পাবে বৈষম্য। চরমভাবে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। কোটা ব্যবস্থা না থাকলে বিভিন্ন জেলার মানুষ ব্যাপক ক্ষতি ও বৈষম্যের শিকার হবেন। পিছিয়ে পড়বে নারীরা। এসডিজি অর্জন স্বপ্নই রয়ে যাবে। গ্রাম ও শহরের বৈষম্য আরও বৃদ্ধি পাবে। সুষম উন্নয়ন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না। থমকে যাবে চলমান উন্নয়নের মহাসড়কে আমাদের যাত্রা।

বর্তমানে একটি গোষ্ঠী যারা বাংলাদেশের উন্নয়নের বিরোধী, বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন বিরোধী ছাড়া কেউই বর্তমানে বিদ্যমান কোটা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে নয়। জেলায় জেলায় যখন যাচ্ছি, তখন সাধারণ মানুষ আশংকা ব্যক্ত করছেন যে কোটা ব্যবস্থা না থাকলে তাদের এলাকার মানুষ চাকুরি পাবেন না। সবচেয়ে বেশি আতঙ্ক বিরাজ করছে গ্রামের সাধারণ ছাত্রীদের মধ্যে। যারা কোটা ব্যবস্থার কারনে উন্নয়নের মূলধারায় প্রবেশের অপেক্ষায় ছিল।

আক্ষেপ বিরাজ করছে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে। তারা অপমানিত বোধ করছেন। রক্তক্ষরণ হচ্ছে তাদের হৃদয়ে। বাংলাদেশের উন্নয়ন বিরোধী গোষ্ঠী তাদেরকে প্রকাশ্যে গালিগালাজ করছে। অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা দুঃখের সহিত বলেন, এই অপমানের চেয়ে তাদের মৃত্যু শ্রেয়।

জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করে, নারীদের অগ্রযাত্রা রোধ করে, বিভিন্ন জেলার বৈষম্য সৃষ্টি করে, দেশের উন্নয়নের মহাসড়কের যাত্রা থমকে দিয়ে দেশবিরোধী শক্তি প্রিয় বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানানোর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

দেশের সকল মুক্তিকামী মানুষকে অনুরোধ করছি, দেশের উন্নয়ন বিরোধী এই ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়ান। জনগণই আমাদের শক্তি। জাতির জনকের ভাষায় বলছি, 'কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না'।