ফেসবুকে নোংরামি ছড়ানো বন্ধ হোক

আফজাল চৌঃ
Published : 21 Jan 2018, 02:29 AM
Updated : 21 Jan 2018, 02:29 AM

তরুণ সমাজ যেকোন দেশের প্রাণ। আবার একটা দেশের জন্য ইন্টারনেট এবং বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যম কত কিছুরই তো দরকার। বাংলাদেশও তার ব্যতিক্রম নয়। ফেইসবুক শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো বিশ্বেরই সহজ যোগাযোগ মাধ্যম। মুহূর্তেই তো কত কিছু হয় ফেইসবুকে। তবে এবার দেখার বিষয় আমাদের অগ্রসর তরুণরা কতটা ভাল আর খারাপে আছেন ফেইসবুক নিয়ে। অবস্থা এতটা বেগতিক না হলে আজ আমি কিছু লিখতমান না।

সালমান মুক্তাদির আর জেসিয়া ইসলাম বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের জনপ্রিয় মুখ, সন্দেহ নেই। কিন্তু সম্প্রতি এদের দু'জনকে নিয়ে যা হচ্ছে তাতে চমকে যেতে হচ্ছে। কি হচ্ছে এসব! সম্প্রতি এক তরুণ মেয়েদের প্রকাশ্যে ধূমপান নিয়ে যাচ্ছে তাই ভিডিও আপলোড করেছিল যার প্রেক্ষিতে সালমানও অন্যসবার মত ফেইসবুকে মতামত দিয়েছেন। যদিও মতামত প্রকাশেরর পর সে আরো আক্রমণের শিকার হয়েছে। আফ্রিদি যে কিনা সালমানের ঘনিষ্ট মানুষ সেও সালমানের সাথে লাইভ ভিডিও গুলো আপলোড করেছে। বিষয়টা হয়েছে এমন ফেইসবুক খুলে কাঁদা ছোড়াছোড়ি দেখতে হয়েছে সালমান আর আফ্রদির। তার মাঝে আবার জেসিয়া নিয়ে টানাটানি। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের অনুসরণীয় তরুণদের উদ্ভট সব ভিডিও কাঁদা ছোড়াছোড়ি দেখে মনে হয়েছে ফেইসবুক কি মানুষের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে নোংরামির জায়গা?

মোদ্দাকথা, আমরা তরুণরা ফেইসবুকটাকে অন্তত ভাল কিছু রাখার স্পেইস দেই। সালমান আর জেসিয়া অথবা যেই হোন না কেন যাদের ফ্যান ফলোয়ার অনেক তারাই যদি এমন সব নোংরামিকে সামনে আনেন, তাহলে আর যাই হোক, ভবিষ্যতে তাদের ফ্যান ফলোয়ার অথবা সম্মানের জায়গাটা থাকবে না।

বাংলাদেশ আর শ্রীলঙ্কার খেলা দেখছিলাম গত কাল ফেইসবুক লিঙ্কে গিয়ে। সেখানেও মানুষ একজন আরেকজনের জেলা নিয়ে, ব্যক্তিগত চরিত্র নিয়ে জঘন্য সব মন্তব্য করছিল। খেলা দেখব না নোংরামি মন্তব্য দেখব ভেবে তো হতবিহবল হওয়া ছাড়া কোন উপায় ছিলনা। আমরা তো একই দেশের মানুষ, লজ্জা করে না তাদের যে এমন করে যে মানুষগুলো!!

সম্প্রতি আরেকটা জিনিস বেশ আলোচনার জন্ম দিচ্ছে। বিভিন্ন এলাকার নামে ফেইসবুক পেজ খুলে সেখানে লাইভ আনা হয় তথাকথিত সুন্দরী তরুণীদের। আর তা নিয়ে এক জেলার মানুষ অন্য জেলার মানুষকে অকথ্য ভাষায় গালি দেন, যা কোন সভ্যতার ভেতরে থাকছেনা। এসব কোন ধরনের সংস্কৃতি তা বোঝার ক্ষমতা সাধারণ মানুষের হবার কথা নয়।

সবমিলিয়ে ফেইসবুক নিয়ে সরকারী হস্তক্ষেপ এতটাই জরুরী মনে হচ্ছে, যা না মনে হবার কারণ নেই। কারণ ব্যক্তি স্বাধীনতা আর নোংরা ব্যক্তি স্বাধীনতা দুই জিনিস।

আমরা ভুলে যাই ফেইসবুকটা সব বয়সের মানুষরা ব্যবহার করি আর সেটাই সবচেয়ে ভয়ঙ্কর। আমাদের চেয়ে ছোট বয়সের মানুষরা কি ভাববে আর কি অনুসরণ করবে? আর আমাদের মুরব্বিরা তো কি ভাবছেন তা তো আন্দাজ করতে পারিই আমরা।

সালমান, জেসিয়া আর যে পাবলিক ফিগারই হোননা কেন রেহাই দেন আমাদের। আর ভালো না লাগলে ফেইসবুক থেকে বের হয়ে আমাদের রেহাই দেন। বাংলাদেশের সবার শ্লোগান হওয়া উচিত- ভদ্র, রুচিশীল তরুণরা ফেইসবুক ব্যবহার করুক, আর অশালীনরা চিরতরে হারিয়ে আমাদের রেহাই দিক।