নিজ বইয়ের আত্ম-স্লোগান

রিয়েল আবদুল্লাহ আল মামুন
Published : 4 Feb 2018, 06:27 PM
Updated : 4 Feb 2018, 06:27 PM

নিজে বই কিনুন অপরকে কিনতে উৎসাহিত করুন । প্রিয়জনকে বই উপহার দিন । ২০১৮ বইমেলায় পাওয়া যাচ্ছে আমার স্মৃতিফেরা নস্টালজিক জীবনের অর্থাৎ কিশোর বেলাকার সোনাঝরা দিনগুলোকে নিয়ে লেখা কবিতার বই, 'হৃদয়ে বালিপাড়া রোড" । প্রকাশক-ফজলুর রহমান বকুল,প্রচ্ছদ করেছেন-অনন্ত আকাশ, প্রকাশনি-নব সাহিত্য প্রকাশনি (স্টল নং-৬২৪ ) । বই সম্পর্কে দুটি কথা না বললেই নয় যা আমাকে সর্বদা আন্দোলিত করে এবং তা পাঠককে করবে অবশ্যই।

'——রাতের অন্ধকার কেটে না যেতে যেতে ফজরের আযান দিলে সুবেহ সাদিকের আলো-আঁধারিতে জায়নামাযে বসে বাবা পড়েন কোরান শরীফ-তখন  কেমন যেন একটা সুগন্ধ ছড়িয়ে পড়ে সারা ঘরময়। চিরচেনা সুরে মগজের ভেতরে পবিত্রতার একটা ঢেউ খেলে যায়।

কলাবনের ফাঁক গলে আসে ভোরের রোদ। সকালের সোনা সোনা রোদের আভায় পিঠ এলিয়ে খবরের কাগজ দেখতে ভালো লাগে খুব-মা গরম ভাত রেঁধে ডাকেন-আয় বাবা আয় খেয়ে যা। সোনা মনিরা বিড়াল ছানার মতো বুকে-মাথায়-কোলে এসে নাচানাচি করে। আর তখন সুবর্ণ বধু আমার ভেজা চুলে মিষ্টি হেসে চোখ টিপে গুটিগুটি পায়ে আড়ালে চলে যায়….

জন্মাবধি যেখানে আমার কাঁচের বাসর। সময়ের স্রোতের সাথে অবিরাম চলন। যেখানে হৃদয়ের মাসোহারা দিয়ে ফেলতে হয় না চোখের জল। হাসি-কান্না-আনন্দ-বেদনা যেখানে নিত্যদিনের সাথী।  তার ভেতরেও যেখানে এক চিলতে রোদ এসে হামাগুড়ি দিয়ে সারাদেহে চুমো খেয়ে যায়।

সবুজ পাতার আড়ালে কালোকূহক ডেকে ডেকে ক্লান্ত হয়ে অন্যত্র ফিরে যায়। সোনালী শঙ্খচিল নীল আকাশে ঘুড়ির মতো উড়ে। বাঁশবনে শিমুলের ডালে বসে কোড়া ডাকে । চাতকীর প্রেমে বিভোর চাতক ডেকে ডেকে উজার করে তোলে মাতাল দুপুর ।

আর যখন ছেলে বাহিরে যায়, মা পিছু ডাকে-পথচলার উপদেশগুলো পুনঃ উচ্চারণে মন কিছুটা খারাপ হলেও তা যেন আয়ু বাড়িয়ে দেয়। বাবা রাস্তার বামপাশ দিয়ে যেয়ো-বড়ো গাড়িতে মাঝে করে যেয়ো-ঝুলে যেয়ো না-কারো দেয়া কিছু খেয়ো না-ঝগড়া করো না-সন্ধ্যার আগে বাড়ি ফিরে এসো-এসব যেনো নিত্যদিনের কথা । আমি যে এখন আর সেই ছোটটি নেই, মায়ের তা মনে থাকেনা। আমার জন্য যে আরেকজন পথ চেয়ে থাকে মায়ের তা মনে থাকে না। মায়েরা চিরন্তন-চির ধ্রুবক হয়-এইই সত্য।

মায়ের ভালোবাসা, বাবার আদর, বধুর প্রেম, সোনামনিদের দুষ্টুমি, বন্ধুদের সাহচর্য সব মিলিয়েই আমার এই জীবন। জীবনের নানা দিকগুলো কবিতায় তোলে আনার প্রচেষ্টামাত্র। বর্ণাঢ্য নষ্টালজিক জীবনের সামান্য নষ্টালজিক সুখ পাঠকদের জন্য রেখে যাওয়া। যেনো পাঠক বন্ধুরা আমার এই হৃদয়ে বালিপাড়া রোড  কাব্যগ্রন্থখানি পড়ে সামান্য হলেও ফিরে যেতে পারেন নিজস্ব ভূবনে। যেখানে কেবলি তালপাতা সুখ আর সুখ ।—''

বইটির বহুল প্রসার কামনা করছি।