পাথুরে নদীর জলে (থানচি টুর প্রথম পর্ব)

রেজাউল মাসুদ
Published : 11 March 2016, 06:00 PM
Updated : 11 March 2016, 06:00 PM

মিয়ানমার সীমান্তবর্তী বান্দরবানের থানচি উপজেলার বড় মদক এলাকায় পাহাড়ে এ নদীর জন্ম,বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যে কয়টি নদীর উৎপত্তি তার মধ্যে সাঙ্গু নদী অন্যতম।এলাকার মানুষ শঙ্খ বলে ডাকে।আমাদের দেশ নদীমাতৃক দেশ,পদ্মা মেঘনা যমুনা ব্রম্মপূত্র কত নামে নদী,প্রায় ৭০০টির মত নদী এই শ্যামল বাংলাদেশের উপর দিয়ে বয়ে গেছে।নদী দেখেননি এমন মানুষ বোধ হয় পাওয়াই যাবেনা।তারপরও বলতে হয় যারা সাঙ্গু নদী দেখেননি তারা হয়ত এই নদী সম্পর্কে সঠিক ধারনাও করতে পারবেনা।আশ্চার্যজনক এক ভয়ঙ্কর সৌন্দর্যের অপরূপ নদী সাঙ্গু নদী।

সাঙ্গু নদী বান্দরবান জেলার প্রধানতম নদী। জেলার জীবন-জীবিকার সাথে এ নদী ওতপ্রোতভাবে জড়িত।পাহাড়ী জনপদের যোগাযোগের ক্ষেত্রে এ নদী একটি অন্যতম মাধ্যম।জেলা শহরের পূর্বপাশে পাহাড়ী ঢালে বয়ে চলা সাঙ্গু নদী দেখতে দারুন দৃষ্টিনন্দন।ওপরে খোলা আকাশে রৌদ্র-মেঘের লুকোচুরি আর নিচে খরস্রোতা এই নদীর ধেয়ে আসা ছল ছল শব্দ। সব মিলিয়ে এ যেনো স্রষ্টার এক অপরূপ সৃষ্টি।

চাকুরি সূত্রে বান্দরবান জেলায় রয়েছি এখন৷ তাই কাছ থেকে দেখছি পাহাড়, নদী, ঝর্ণা আর পাহাড়িদের৷ ঘুরছি এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে৷যোগ্য সঙ্গী পপি লাবিবা , সাথে যুক্ত হয়েছে আলাস্কা অগষ্টাসহ ব্যাচমেট অনির্বানের পুরো পরিবার।আমরা সকাল সাতটার মধ্যেই রেস্ট হাউজ থেকে থানচি ঘাটে পৌছে যাই।ওসি থানচি তিনটা নৌকা আগে থেকেই রিজার্ভ করে রাখে।অনাকাঙ্খিত বিপদ এড়াতে প্রটেকশনের জন্য ইউনিফর্মের সাত পুলিশ সদস্যের একটা গ্রুপও আমাদের সাথে নিই।সময় বাচাতে সকালের নাস্তা নৌকাতেই সম্পন্ন করি।

নৌকা বয়ে চলছে পাহাড়ে ঘেরা বাংলাদেশের এক প্রাকৃতিক রহস্যময় জেলার ভিতর দিয়ে।আমাদের যাত্রা তিন্দু,রাজা পাথর হয়ে রেমাক্রিতে।মাঝি জানায় রেমাক্রীতে পৌছতে ঘন্টা চারেক লেগে যাবে।সকালের কুয়াশার চাদর ভেদ করে গহীন অরন্যের পথে আজ শুধুই ছুটে চলা।সকালের মিষ্টিমাখা সোনালী রোদ যখন পাহাড়ের খাজ, বড় বড় গাছের ফাক দিয়ে চুইয়ে পড়ে উষ্ঞতার উনুন দিচ্ছিল কি যে এক প্রশান্তিময় আবহ, অপরূপ দৃশ্য তা বর্ণনার তুলিতে আঁকা অসম্ভব।প্রকৃতির এমন নির্মল বন্ধুত্ব যে কারোর মন ভাল করে দেবে মুহুর্তেই।

 

আমরা বুঝতে পারছিলাম স্রোতের প্রতিকূলে তিন্দুর দিকে ধীরে ধীরে উপরে উঠতে হচ্ছে নৌকার গতি বাড়িয়ে।উপরে উঠতে হয় এই কারণে যে বস্তত নদীটা রেমাক্রী হতে থানচির দিকে ধীরে ধীরে ঢালু হয়ে এসেছে, আর এই কারণে এখানে সবসময় স্রোত থাকে।নদীর কিছুদুর পরপর ১-২ ফুট এমন কি কোথাও ৪-৫ ফুট পর্যন্ত ঢালু হয়ে নিচে নেমেছে।

চলবে…….