কত সফলতা অর্জন করলে সম্মান পাবে দেশের নারী ক্রীড়াবিদরা?

রিফাত কান্তি সেন
Published : 9 Sept 2016, 01:17 AM
Updated : 9 Sept 2016, 01:17 AM

মেয়েরা দশটা দিয়ে ও লাঞ্ছিত, ছেলেরা পাঁচটা খেয়েও পুরস্কিত। কেনো তোরা এতটা অর্জন করলি? দেশের ভাবমূর্তি এতটা বাড়ালি? তোরা কি জানিস না এদেশের চাটুকাররা সম্মান দিতে জানেনা। এএফসি অনূর্ধ্ব ১৬ বাছাই পর্বের ফুটবলে তোরা যখন ১০টা গোল দিস তখন জাতীয় দলের ছেলেরা ৫টা খেয়ে আসে! ওরা এসি বাসে চলে, তোরা লোকাল বাস। এর একটাই কারণ তোদের খেলোয়ার নয় তোদের নারী চোখে দেখে লোকে।

এর আগেও মাবিয়া -স্বর্নারা যখন সোনা জয় করে এসেছিলো তখনো আমরা তাদের যথাযত সম্মান প্রদর্শন করতে পারি নাই! সেই রোকেয়ার আমলে শুনেছি মেয়েদের ঘরের বাইরে যেতে দিতো না! আর আজ তো দেশের রাজত্বই নারী। আর থাকবেই না কেনো নারী তার যোগ্যতার বলে সে যোগ্য জায়গায়। আজ যখন দেশের ছেলেদের ফুটবলে শুধুই হারের মহড়া, ঠিক সে সময় অপ্রতিরোধ্য তোরা। সানজিদা,তাসলিমা,তোহরা,মার্জিয়া,কৃষ্ণা রানীরা কেনো লাঞ্ছিত জবাব চাই?

একজন শিক্ষক যিনি জ্ঞানের আলো ছড়াবেন তিনি কি না করছেন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড! তাসলিমার নিরীহ বাবাকে বেধড়ক পিটিয়েছে।এটা সত্যি দেশের বড় লজ্জা। এ লজ্জা রাখি কোথায়? এ লজ্জার অংশিদার পুরো জাতি। লোকাল বাসে চড়ে নিজ গ্রাম কলসিন্দুরে যাচ্ছিলেন আমাদের বীর বাঘিনীরা। দূর্ভাগ্য মূর্খ মানবের ভয়াল ইভটেজিং এর স্বীকার আমাদের বাঘীনিরা।

এরপর তাদের স্কুল থেকেও তাদের বহিস্কারের হুমকি! ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার কলসিন্দুর উচ্চ বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আগামি ১৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সংবর্ধনা ও সাফ ফুটবলের চ্যাম্পিয়নশিপ ক্যাম্পের ব্যস্ততার কারণে ৪৫তম গ্রীষ্মকালীন ফুটবল প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্বে খেলতে অস্বীকৃতি জানানোয় তাদের করা হয়েছে লাঞ্ছনা। ১৬ তারিখ এই ৯ তরুণীকে কুমিল্লায় গ্রীষ্মকালীন ফুটবল প্রতিযোগিতায় স্কুলের হয়ে লড়তে বাধ্য করা হচ্ছে। অথচ ১৭ তারিখ নাকি বাফুফে তাদের সংবর্ধনার আয়োজন করেছে।

আর এ প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাদের অভিবাবকদের স্কুল কর্তৃপক্ষ ডাকে। পত্র-পত্রিকার বয়ান দিয়ে জানতে পারলাম তাদের পরিবার রাজি না হওয়ায় তাসলিমা (দ্বিতীয় গোলরক্ষক) পিতাকে রাতে বেধড়ক পিটিয়েছে সে স্কুলের ক্রীড়া শিক্ষক জোবেদ আলী।

আমরা কি এখনো পিছিয়ে রাখতে চাই আমাদের মেয়েদের? ওরা অভিযোগ করে বলেছে সামনে তাদের এসএসসি পরীক্ষা। এ মুহূর্তে তাদের বহিস্কার করলে তাদের জীবনে কতটা ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে তা ভেবে তারা বিস্মিত। জোবেদা প্রধান গোলরক্ষক তারও একই অভিযোগ।

এখন প্রশ্ন জাতির এত বড় সম্মান বয়ে আনা এই অগ্নিকণ্যাদের এত লাঞ্ছনা কি সহ্য করার মত? আর  জোবেদ আলীকে এত বড় পাওয়ার দিছে কে যে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের পিতাকে আঘাত করে। ওই স্কুল কতৃপক্ষের বিচার দাবী করছি।অচিরেই সেই স্কুলের বিরুদ্ধে এ্যাকশান নিবে প্রশাসন এটাই প্রত্যাশা। এ মুহূর্তে শুনেছি জোবেদ আলীকে পুলিশ ধরতে সমর্থ্য হয়েছে।

আর বাফুফের কাছে জানতে চাই ওই গারো পাহাড়ের পাদদেশে বেড়ে ওটা কিশোরীদের জন্য কি একটি প্রাইভেট গাড়িও ব্যবস্থা করার ক্ষমতা ফেডারেশন এর হয়নি? অগ্নিকন্যাদের এতটা অপমান!