এগিয়ে যাচ্ছে চাঁদপুরের স্বনামধন্য কড়ৈতলী উচ্চ বিদ্যালয়

রিফাত কান্তি সেন
Published : 30 Dec 2016, 07:17 PM
Updated : 30 Dec 2016, 07:17 PM

১৯৬৬ সালে স্থাপিত হয় চাঁদপুরে'র ফরিদগঞ্জ উপজেলার কড়ৈতলী উচ্চ বিদ্যালয়টি।ঐতিহ্যের দিক থেকে বিদ্যালয়'টি এখনো অনন্য ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।মরহুম রাজা মিয়া স্যারে'র আমল থেকে'ই বিদ্যালয়টি বেশ পরিচিতি লাভ করে এসেছে।এ স্কুল থেকে'ই অনেক প্রতিভাবান শিক্ষার্থী জ্ঞানর্জন করেছেন,বর্তমানে ও করে যাচ্ছে। এ স্কুলকে ঘিরে হরিপদ চক্রবর্তীর অবদান ও অনিস্বীকার্য, এ স্কুলের শিক্ষক ছিলেন শীতল চৌধুরী, ভলুন স্যার সহ আরো অনেকেই।

এক অজোঁপাড়া-গাঁয়ে'র স্কুল কড়ৈতলী উচ্চ বিদ্যালয়। বর্তমান দৃশ্যপট অনেকটা'ই পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিদ্যালয়টিতে অনেক উন্নয়নের ছোয়া লাগলে ও ভবনের অভাবে পাঠ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। অনেক কষ্ট করে শিক্ষার্থীরা পাঠক্রম চালাচ্ছে। বিদ্যালয়ে'র শিক্ষরা ও ভবন সংকটের কারনে শিক্ষার্থীদে'র আধুনিকতার অনেক ছোঁয়া যেমন একটি বিজ্ঞানাগার, কম্পিউটার রুম সহ স্কুল ক্যান্টিনের ও ব্যবস্থা করতে পারছেন না।


বর্তমান প্রধান শিক্ষক সমরেন্দ্র মিত্র বলেন, ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কড়ৈতলী উচ্চ বিদ্যালয়।আমি ও এ স্কুলে'র ছাত্র ছিলাম,এখন প্রধান শিক্ষক। বিদ্যালয়টি প্রায় ছয়'শ এর মত শিক্ষার্থী পাঠক্রম চালাচ্ছে।রেজাল্টের দিক থেকে প্রায় ৯৫% পাশ করছে বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা।এস,এস,সি-জে,এস,সি'তে ও ভাল সাফল্য অর্জন করে আসছে বিদ্যালয়টি।শিক্ষকরা ও আন্তরিকতার সাথে পাঠক্রম চালাচ্ছেন।


২০১৬ জুনিয়ার স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় ৯৭.৬% ছেলে-মেয়ে পাস করেছে। এ+ পেয়েছে দুইজন রোকসানা বিথী এবং হাওয়া আক্তার। এছাড়া এস, এস, সি তে ও প্রায় ৯০ ভাগ পাসের রেকর্ড রয়েছে স্কুলটির। রয়েছে স্কুল প্রধানমন্ত্রী শাকিল শেখ। কিন্তু অনেক সাফল্যের পরও পর্যাপ্ত ভবন না থাকার কারনে স্কুলের শিক্ষার্থীদের পাঠদানে হিমশিম খেতে হচ্ছে।


কড়ৈতলী উচ্চ বিদ্যালয় ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত প্রায় ৬০০ এর মত শিক্ষার্থী।এই ছয়'শ শিক্ষার্থীর জন্য তিনটি ভবন রয়েছে। দূর্ভাগ্য একটি ভবনে শুধু'ই ইট শাটানো, প্লাস্টার ও করা নেই, অনেকটা ঝুঁকিপূর্ন বলা বাহুল্য।

দোতালা ভবনটির চারটি কক্ষ, নিচের দুইটি কক্ষের একটি প্রধান শিক্ষক ও লাইব্রেরী, আরেক'টিতে বিদ্যালয়ে'র সহকারী শিক্ষকদের জন্য ব্যবহার যোগ্য।

উপরে'র দুইটি কক্ষে শিক্ষার্থীদের পাঠক্রম চালানো হয়। নিচের পুরনো বিল্ডিংটিতে তিন শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের পাঠক্রম চলে।


এছাড়া বাকী যে একটি অপরিত্যাক্ত, বিল্ডিং রয়েছে তাতে গ্রুপের বিষয় গুলো নেয়া হয়। মাঝে মাঝে বিদ্যালয়টির মাঠেও ক্লাস করানো হয়।

বিদ্যালয়টি'তে প্রতি বছর ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে কত কয়েক বছর উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের আমন্ত্রন জানানো হয়।

এ পর্যন্ত কয়েক জন ইউ,এন,ও স্কুলটি ভ্রমনে আসেন, যাদের মধ্যে উল্লেখ্য এনামুল হক, সাহেদুল ইসলাম, সর্বশেষ আসেন জয়নাল আবেদিন।

স্কুলের শিক্ষার্থীরা মনজ্ঞো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপহার দেন। কড়ৈতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রবীণ শিক্ষকদের মধ্যে রয়েছেন জাহাঙ্গীর পাটওয়ারী, সালাউদ্দিন পাটওয়ারী, মিজানুর রহমান,মোজাম্মেল হোসেন, আনোয়ার হোসেন,শোয়ায়েব পাটওয়ারী।নতুনদের মধ্যে রয়েছেন হারুনুর রশিদ, পঙ্কজ শর্মা, শাহাদাৎ হোসেন, শিউলী দাস এরা সকলে'ই এমপি ও ভূক্ত শিক্ষক।


বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিশ্বদ্যালয়টিতে মনরোম পরিবেশে পাঠ দান দেয়া হয়।তারা জানান আমাদের ভবনের খুবই প্রয়োজন।একটি ভবন বদলে দিতে পারে আমাদের স্কুলের চিত্র।


শিক্ষা মানুষকে আলোকিত করে, শিক্ষক জাতির মেধা গড়ার কারিগড়। পাঠদানে যেমন ভাল শিক্ষক প্রয়োজন তেমনি পাঠদানে ভাল পরিবেশের প্রয়োজন।প্রয়োজন ভাল ভবনের।


কড়ৈতলী উচ্চ বিদ্যালয়টির সাফল্যের গল্প শুনে যতটা মনে হলো এ বিদ্যালয়টি ভবিষৎ খুবই উজ্জ্বল,তবে প্রয়োজন ভবন আর নানাবিধ শিক্ষা উপকরণের। সরকারী সহযোগিতা যেমন প্রয়োজন, তেমনি ব্যক্তিগত সহযোগিতার প্রয়োজন। এই কড়ৈতলী স্কুল থেকে বিদ্যার্জনকারী অনেকে আজ বিত্তশালী। হয়তো তাদের সন্তানেরা পড়ছে না বিদ্যালয়টি'তে।কিন্তু গ্রামের মধ্যেবিত্ত, নিন্মবিত্ত কিংবা গ্রামীণ পরিবেশে বেড়ে উঠা শিশুরা ঠিকই পড়ছে বিদ্যালয়টিতে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের যেমন এগিয়ে আসা উচিত তেমনি গ্রামের বিত্তবানদের ও এগিয়ে আসা উচিত, কেননা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠানের উন্নতি হলে এলাকার ও উন্নতি অনিবার্য।আপনার না হোক আপনার এলাকার শিশুরা তো পড়ছে বিদ্যালয়টিতে।তাই বিদ্যালয়টির একটি ভবন ও নানাবিধ শিক্ষাউপকরণ দানে প্রশাসনের যেমন দৃষ্টি আকর্ষণ করছি,তেমনি বিত্তবানদের ও বলবো শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে আসুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নতির কথা চিন্তা করি। এগিয়ে আসি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে।