নতুন বইয়ের গল্প নতুন বই হাতে পাওয়ার আনন্দ

রিফাত কান্তি সেন
Published : 4 Jan 2017, 02:49 AM
Updated : 4 Jan 2017, 02:49 AM

[স্যার, আমাগো ছবি কি শেখ হাসিনা দেখবো? কথাগুলো বলছিলো প্রাথমিকের ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা]


[ব্লগ ডট বিডিনিউজ২৪ ডটকম এর নাগরিক সাংবাদিক রিফাত কান্তি সেন এর সাথে বই উৎসবে মাতোয়ারা প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা]

তখন জানুয়ারি, এমন কি ফ্রেব্রুয়ারিও প্রায় শেষ হতে চললো তবু কেনা হয়নি বই! কিংবা বড় ক্লাসের, বড় ভাইদের বই ধার করে চলেছে শিক্ষা জীবন। এমন অনেক শত গল্পই আমাদের জানা আছে। এমন কি আমি নিজেও বই কিনতে মাস পার করে দিয়েছি। সব বই হাতে পেতে প্রায় চার-পাঁচ মাস সময় লেগে যেতো। অনেক সময় বইয়ের মাঝে নতুনত্বের ছোঁয়া পেতাম না। প্রাথমিক সমাপনী, মাধ্যমিক উভয় সময় বই হাতে পৌঁছাতে অনেক সময় লেগে যেত। ঠিক মত সিলেবাস শেষ করতে পারতাম না। কিন্তু বর্তমান সরকার, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিনামূল্য প্রাথমিক, এবতেদায়ী ও উচ্চমাধ্যমিকের বই পহেলা জানুয়ারিতেই শিশুদের হাতে পৌঁছে দিতে সক্ষম হচ্ছে।


নতুন বই পাওয়ার আনন্দ সব সময়ই মধুর। সেই আনন্দ উপভোগে ব্যস্ত বর্তমান প্রজন্মের প্রাক-প্রাথমিকের শিশুরাও। তাইতো নতুন বই হাতে পেয়ে উল্লাসে ফেঁটে পরেন কড়ৈতলী সরকারি প্রাথমিকের একঝাঁক শিশু। নতুন বইয়ের গল্প জানতে চাইলে প্রাথমিকের এসব শিক্ষার্থী জানায় এটা একটা বাঁধ ভাঙা উল্লাস। নতুন বই পাওয়ার পর তারা শুধু এর ঘ্রাণই নয় বইয়ের প্রতিটা শব্দ খুব যত্ন সহকারে পড়তে চেষ্টা করেছে। যদিও বই হাতে পাওয়ার পর বইকে ছুঁয়ে দেখার আনন্দ তাদের পাগল করে দিয়েছে।


নতুন বই, বইয়ের পড়া সকল শিক্ষার্থীর হৃদয়ে নতুনত্বের স্পন্দন যুগিয়েছে। এছাড়া বইয়ের পেছনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বই বিতরণের দৃশ্য শিশুদের আকৃষ্ট করে তোলে। অনুপ্রাণিত করে। বইয়ের পেছনে আরো রয়েছে উপদেশমূলক বাক্য। যেখানে শিশুদের মেধা বিকাশে অন্যতম ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন শিক্ষাবিদরা।


বইয়ের গল্প শুনতে কথা হয় চাঁদপুর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আইসিটি শিক্ষা আবদুল হাই এর সাথে। সেদিন গুলোর কথা খুব আবেগের সাথে স্মরণ করেন তিনি। বই কেনা হয়নি, বড় শ্রেণীর ভাইদের কাছে ধার করে চলেছিলো শিক্ষা কার্যক্রম। এডিসি আবদুল হাই চর ভৈরব সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পড়াশুনার হাতেখড়ি নেন। সেখানেই প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন।

শিশুর মেধা বিকাশে বইয়ের বিকল্প নেই, সেই বই পেতে একসময় দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হতো। আর সেই অপেক্ষার প্রহর গুণতে মাসের পর মাসও লেগে যেতো। সেখান থেকে অনেকেই ছিটকে পড়তো। আবার অনেকের বইয়ের অভাবে শিক্ষার্জন করাটা দুঃসাধ্য হয়ে দাঁড়াতো। ঠিক সেখান থেকে সকলের শিক্ষা, বিশেষ করে প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে শিক্ষামন্ত্রনালয় তথা সরকারের এমন উদ্যোগ সত্যি প্রশংসার দাবি রাখে।