না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন সাংবাদিক প্রিন্স

রিফাত কান্তি সেন
Published : 2 July 2017, 09:09 AM
Updated : 2 July 2017, 09:09 AM

না ফেরার দেশে চলে গেলেন প্রেসক্লাব ফরিদগঞ্জের সাধারণ সম্পাদক রহিত উল ইসলাম (প্রিন্স)। এক সময় যিনি মানুষের খবর লিখেছেন আজ তার খবরই লিখতে হচ্ছে। তবে এ খবরটা খুব বেশি সুখকর নয়।

গতকাল ০১-০৭-২০১৭ ইং, তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে যান এক ভিন্ন জগতে। যেখান থেকে কেউই আর ফিরে আসে না। সাংবাদিক প্রিন্স দূরারোগ্য ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু কাছে পরাজিত হয়ে ওপাড়ে পাড়ি জমান।

সাংবাদিক প্রিন্স কে কামাল নামেই সকলে চিনতো। একাধারে শিক্ষক, সাংবাদিক, থিয়েটার কর্মী ও নাগরিক কর্মী হিসেবে বেশ পরিচিত ছিলেন তিনি।

আরাধনা একাডেমিতে প্রিন্সিপাল হিসেবে শিক্ষকতা করতেন। এছাড়া ফরিদগঞ্জ কিন্টারগার্ডেন এ্যাসোশিয়সন এর সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

অনেকটা স্বাধীনচেতা মানুষ ছিলেন তিনি। কারো সাথে বাক-বিতান্ডায় জড়াতেন না খুব সহজে। একসময় তুখোড় ছাত্র নেতাও ছিলেন তিনি। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ, ছাত্রলীগের রাজনীতি করেছিলেন প্রিন্স।

মঞ্চ নাটকও করেছিলেন ফরিদগঞ্জ নাট্য থিয়েটারের হয়ে।

নানা গুণে গুনান্নীত প্রিন্স কামাল আজ আর আমাদের মাঝে নেই। শিক্ষক, সাংবাদিক, নাট্যগোষ্ঠী ও ফরিদগঞ্জের অপামোর জনগনের মাঝে আজ শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার সহকর্মী, জুনিয়র-সিনিয়র সাংবাদিকরাও গভীর শোক প্রকাশ করছেন।

কীর্তিমানের মৃত্যু নেই, হয়তো তার এই নিরহংকারী কীর্তির জন্যই চিরকাল আমাদের মাঝে স্মরনীয় হয়ে থাকবেন তিনি এটাই প্রত্যাশা।

আমি সব সময় এ কথাটি বলি- ধরণীতে আমরা দুইটি টিকেট নিয়ে এসেছি। এক আসা, দুই যাওয়া। মাঝে মাঝে মনে হয় পৃথিবীটা খুবই বড়, আর এখানে আমৃত্যু কাটাতে পারলে হয়তো ভাল হতো। কিন্তু নিয়তি তো নিষ্ঠুর,আমাদের সকল আশা নিয়তির কাছে হার মানতে হয়।

প্রিন্স কামাল ভাইকে চিনতাম শিক্ষক, সাংবাদিক দুই হিসাবেই। আরাধনা নামক একটি একাডেমির দায়িত্বে ছিলেন তিনি। সে সুবাধে কড়ৈতলী উচ্চ বিদ্যালয়ে ছিলো তার অবাদ বিচরণ। আসলেই আড্ডার ছলে অনেক কথা হতো। একদিন কথায় কথায় বলে ফেললো, শুনলাম লেখালিখি করেন? বললাম- না তো! তারপর বললাম, মাঝে মাঝে লিখার চেষ্টা করি। বলে উঠলো, চমৎকার জবাব। এ কথাটাই অনেকে স্বীকার যায় না। বললো, কার্ড আছে? কইলাম না, এখনো হয় নাই। আর আমার তো দরকার হয় না। আমি ফ্রিল্যান্স জার্নালিজম চাই। কারো ধারধারী নই। এর পর বললো, সাংবাদিক নামক পাস আনতে প্রেসক্লাব থেকে। কইলাম ঠিক আছে। এরপর আর যোগাযোগ হয় নাই। ব্যস্ততায় কথাও হয়নি।

কামাল ভাই, আজ সত্যি করে বলছি, কার্ডের আগে নিজেকে তৈরি করা চাই এমন ভাবে যাতে লোকে তোমার মৃত্যুর পরও স্মরণ করে। এই আপনি ছাত্রনেতা ছিলেন আজ জানলাম।

ওপাড়ে ভাল থাকুন এই কামনা। বিদায় পৃথিবী, মানুষ মানেই মৃত্যুর স্বাদ একদিন গ্রহণ করতে হবে।