সরকারের কাছে আমরা জিম্মি!

সৈয়দ রায়হান আলী
Published : 21 Sept 2011, 04:43 AM
Updated : 21 Sept 2011, 04:43 AM

আমরা বাংলাদেশের জনগনেরা সরকারের কাছে জিম্মি। যখন কোন ব্যক্তি বা দল সরকার পদে আসে তখন তারা আমাদের সাধারণ মানুষের দেয়া আয়কর, দ্রব্যমূল্য কর ও নানান জাতীয় করের টাকায় তারা দেশ পরিচালনা করে। এমনকি তারা আমাদের টাকায় সুখ, ভোগ-বিলাসিতা করে। তাদেরকে একরকম কোন কিছুই ক্রয় করতে হয় না, কারন তারা সরকারী ব্যবস'াপনা থাকা, খাওয়া, চিকিৎসা, যাতায়াত, নিরাপত্তা, বিদেশ ভ্রমন, গাড়ী ও গাড়ীর জ্বালানী তেল-গ্যাস, যন্ত্রাদী, বাড়ী ও বাড়ীর বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, এসি, হিটার, গিজার ইত্যাদি সুবিধাদি আমাদের পক্ষ হতে দেয়া হয়। যতদিন তারা ক্ষমতায় থাকে ততদিন তারা উপরোক্ত আরাম-আয়েশ পেয়ে জনদূর্ভোগ এর কথা আর দেখেও দেখে না আর শোনালেও শুনে না এটাই নিয়ম। হ্যা শুনবে, অবশ্যই শুনবে- তখন, যখন তাদের ক্ষমতা আর থাকবে না, যখন তারা নিজেরাই ক্ষমতাহীন বিরোধীদল হিসেবে আখ্যা পাবে তখন। তখন তারা সেই ভোগ-বিলাস, আরাম-আয়েশ থেকে বঞ্চিত হবে এবং পূনরায় আমাদেরকে সাথে নিয়ে তাদের নিজেদের স্বার্থ-স্বিদ্ধি করার লক্ষ্যে জনগনকে আই-ওয়াশ করে বুঝাবে যে আসলেই সাধারণ মানুষের জনদুর্ভোগ চরমে।

চাল, ডাল, পেয়াজ, রসুন, আদা, চিনি, আটা-ময়দা, তেল, শাক-সবজি, সব ধরনের মসল্লা, বিদ্যুৎ বহুদফা দরবৃদ্ধি, জ্বালানী তেলের বহুদফা দরবৃদ্ধি, জ্বালানী গ্যাসের বহুদফা দরবৃদ্ধি, বাস-অটো-ট্যাক্‌্ির ভাড়া বৃদ্ধি, বাসা ভাড়া বৃদ্ধি, খাদ্য দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি, লোডশেডিং বৃদ্ধি, চিকিৎসার মানের অবনতি, শিক্ষার মানের অবনতি, দুনর্ীতিতে অবনতি ও সয়লাব, যোগাযোগ ব্যবস'ার অবনতি, রাস-া-ঘাটের অবনতি, জনরপ্তানী শূন্যের কোঠায় ও বিদেশে দেশীয় দুতাবাসের দুর্নীতিতে দিশেহারা সাহায্য র্প্রাথীরা, মধ্যবিত্তরা নিন্মবিত্তের সারিতে ও নিন্মবিত্তেরা ভিক্ষুকের সারিতে দাঁড়ানো, শেয়ার বাজারে দুর্নীতি ও কারসাজি, শেয়ার বাজারের জনগনের হাজার হাজার কোটি টাকা আত্নসাৎ ও চিহ্ণিত দলীয় চোর বাটপারদের জনগনের বিচারের কাঠগড়ায় না আনা,দেশকে আমদানী বৃদ্ধি ও নির্ভর করা, দেশের পন্য বিদেশে রপ্তানী কমে যাওয়া, রেমিট্যান্স কমে যাওয়া, নদী ভাঙ্গন বৃদ্ধি পাওয়া ও ভাঙ্গন রোধে ব্যবস'া না নেওয়া, খালি জায়গা দেখলে জমি-পুকুর-খাল দখল ও ভরাট করা, আইন-শৃঙ্খলার অবনতি এবং সেটা অস্বীকার করা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে জনগনকে জুলুম ও অত্যাচার করা, অর্থনৈতিক ভাবে দেশকে পঙ্গু করে দেয়া, টাকার মানের কঠিনতম অবনতি হওয়া, পোশাক-শিল্প ও কল-কারখানার উৎপাদিত পন্যেও বিদেশি ক্রেতা কমে যাওয়া, পর্যটন ব্যবস্যার উন্নয়ন না হওয়া ও বিদেশি পর্যটকদের আমাদের পর্যটন এলাকা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া, যানজন বৃদ্ধি হওয়া ও নিরসনের কোন সু-ব্যবস্যা করতে ব্যর্থ হওয়া, সরকারী সমস্ত মন্ত্রনালয়ে ও ছোট-খাট সরকারী অফিস-আদালতে সব জায়গাতেই অ-ব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতিগ্রস- বৃদ্ধি হওয়া, অদক্ষ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-সচিব পরিষদ, দুর্ভিক্ষ, দেশের জনগনের হক্কের রূপালী ইলিশ দেশের মানুষকে না খাইয়ে বিদেশীদের খাওয়ানোর জন্য ৫০০ টন এর বেশি রপ্তানী, উফ্‌ফ এরকম আরও অনেক অনেক ব্যর্থতা আছে যা হয়তো বলে শেষ করা যাবে না। এসব ব্যর্থতার কারনে জনগনের নাভিশ্বাস হতে হতে তিক্ততা চলে এসেছে। দেশে এখন ভুমিকম্প হওয়ার আগেই গনভুমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা আমি করছি এবং সেটা হলে অসম্ভব কিছু অন-ত: আমার কাছে মনে হবে না। জানি না দেশের জনগন এর নিকট কিরূপ প্রতিক্রিয়া হবে?

বাংলাদেশের একজন সাধারন নাগরিক

সৈয়দ রায়হান আলী