আজ বিজয়া দশমী। বাংলার ঘরে ঘরে, সকলের অন্তরে অন্তরে বাজছে বিষাদের সুর। মা দূর্গা স্বর্গ থেকে মর্ত্যে এসেছিলেন, পাঁচদিনের আনন্দ সফর শেষে আজ মায়ের ফিরে যাওয়ার পালা। আমরা মর্ত্যবাসী মায়ের বিদায়ের দুঃখে কাতর। ঢাকের বোলে শুনি বিসর্জনের কান্না, যেনো বলছে,
"ঠাকুর থাকবে কতক্ষন, ঠাকুর যাবে বিসর্জন"!
কান্নাতেই শেষ নয়, কান্নাকাটি শেষে বাঙ্গালী আবার স্বপ্ন দেখে, পরের বছর মায়ের পুনরাগমনের। ঢাকের বোল পালটে যায়,
"বাজে ঢোল নরম-গরম তালে তে
বিসর্জনের ব্যথা ভুলি, আগমনীর সুরেতে"!!
আজ দশমী পূজা শেষে হবে দেবী বিসর্জন। ঢাকের বাদ্যির তালে তালে বাঙ্গালী সন্তানের কাঁধে চড়ে মা দুর্গা যাবেন উনার পিত্রালয় ছেড়ে শ্বশুরালয়ে। দেবীমূর্তি নদীতে বিসর্জনের ভেতর দিয়েই হবে এ বছরের দূর্গা পূজার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি। দেবী দুর্গা জগজ্জননী, বিশ্বমাতা রূপে বিশ্বের সর্বত্র বিরাজিত। এককোষী প্রাণী থেকে শুরু করে জগতের প্রতিটি জীবের তিনিই মাতা। দেবী মঙ্গলময়ী, সর্ব মঙ্গলা।
প্রতি বছরের ন্যায় স্বর্গবাসীনি মা আমাদের এবছরেও মাত্রই দিন পাঁচেকের জন্য মর্ত্যে নেমে এসেছিলেন। সাথে নিয়ে এসেছিলেন উনার স্বর্গের গোটা সংসার। আমরা উনার অধম সন্তান, যতটুকু সাধ্যে কুলোয়, সেটুকু দিয়েই মায়ের পূজা করেছি, মা'কে আপ্যায়নের চেষ্টা করেছি মাত্র। মায়ের চরনে মাথা ঠুকে কেঁদেছি জগতের সকলের দুঃখ দূর্দশা দূর করে দেয়ার আর্তি নিয়ে। মা সন্তানের আকুতিতে নিশ্চয়ই সাড়া দিবেন, সেই আশাতেই মায়ের কাছে কায়োমনোবাক্যে প্রার্থণা করেছি, " মা গো, জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক, সকলের মঙ্গল হোক" এই স্নেহাশীর্বাদটুকু আমাদের দিয়ে যাও। আগামী এক বছর যেনো আমরা সকলেই ভায়ে ভায়ে, বোনে বোনে, পিতা-পুত্রে, মাতা-কন্যায়, বন্ধু-স্বজন, আত্মীয়-অনাত্মীয়ে, ধনী-গরীবে মিলে মিশে দিনের প্রতিটি সুখ-দুঃখকে ভাগাভাগি করে নিতে পারি। আগামী বছর তোমার পুনরাগমনের প্রতীক্ষায় থাকবো, আমরা মর্ত্যলোকের সকল সন্তানেরা।
বলো বলো, দূর্গা মাই কী~~~~ জ- অ- অ-অ-য়!!!!
আজকের এই শুভ ক্ষণে, সকলকে জানাই শুভ বিজয়ার শুভেচ্ছা!! ঘরে-বাইরে, দেশে-বিদেশে অবস্থানরত প্রত্যেককে জানাই 'শুভ বিজয়ার' শুভেচ্ছা! দেখা হবে আগামীতে! সকলেই ভালো থেকো, সকলের মঙ্গল হোক!