মাছে-ভাতে বাঙালির ঘুরে বেড়ানোর স্বপ্ন এবং আমাদের পর্যটন ব্যবস্থা

রোদেলা নীলারোদেলা নীলা
Published : 16 Jan 2016, 08:58 PM
Updated : 16 Jan 2016, 08:58 PM

যারা তিন বেলা ঠিকই অন্ন বস্ত্র এবং বাসস্থানের চাহিদা ঠিকঠাক পূরন করতে পারেন তাদের মধ্যেই দেশ -বিদেশ ঘুরে বেড়ানোর বাড়তি চাহিদা মাথার ভেতর বসত করে। আর এই চাহিদাটা কেবল মধ্যবিত্ত এবং উচ্চবিত্তদের বেশি মাত্রায় আগ্রহী করে তোলে, কারন বছর শেষ হলেই বাচ্চাদের স্কুলের ছুটি তার সাথে নতুন বছরে কিছু যদি বোনাস পাওয়া যায় তবেই ঘোরাঘুরিটা খুব আরামদায়ক হয়।উচ্চবিত্তরাতো সারা বছরই বিমানে করে কখন ইউরোপ, কখোনবা আমেরিকা চষে বেড়াচ্ছেন, কিন্তু মধ্যবিত্তের তালিকায় ঘুরতে যাওয়ার খায়েশটা অত সহজে যোগ হয় না,তারা ইচ্ছে করলেই ল্যাগেজ গুছিয়ে বিমানে চড়ে বসতে পারে না,আবার বউ -বাচ্চা নিয়ে নিরাপদে সড়ক পথে পাড়ি দেবে তার সাহসও পায় না, আর বিদেশ যাবার স্বপ্ন তো চিরকাল স্বপ্নই রয়ে যায়।

প্রতি বছর ৩১শে ডিসেম্বর আমরা গুটি কয়েক বন্ধু মিলে ঘরের ভেতরেই আড্ডা দিয়ে কাটিয়ে দেই। কিন্তু এবার পরিকল্পনা ছিল একটু বাইরে ঘুরে বেড়াবার,জানা গেল সরকার খোলা ময়দানে আনন্দ উল্লাশে পালন করতে নিষেধ করেছেন।আমার ধারনা ছিল এই নিষেধাজ্ঞা বুঝি কেবল ব্যস্ত শহরেই, কিন্তু পর্যটন শহরেও এই আইন চালু হবে তা আগ থেকে বুঝতে পারিন।২০১৬ সালকে পর্যটন বছর হিসেবে উল্লেখ করে অনেক আগেই মেগা বীচ কার্নিভালে জমকালো অনুষ্ঠানের কথা ঘোষনা করা হয়েছিল। সুতরাং , আর যেখানে যাই হোক অন্তত কক্সবাজারের বেলাভূমিতে আনন্দ উল্লাশ করে ঠিকি কাউন্ট ডাউন করে নেওয়া যাবে।এহেন আশা নিয়ে আমারা গ্রীন লাইন কাউন্টারে হাজির হলাম।বিমানে যাবার অভিজ্ঞতা আমার খুব একটা ভালো ছিল না,আর আকাশ পথে রাস্তা-ঘাট দেখা যায় না মন মতো-এটাও একটা কারন ছিল, তাই বাসে যাবার সিদ্ধান্ত নিলাম।প্রতি বছরই ডিসেম্বরে একটা হিউজ প্রেশার থাকে কাউন্টারে,কিন্তু এবার দেখা গেল বিজনেস ক্লাস বা ইকোনমী কোনটাতেই একটা সীট খালি নেই।শেষের দিকে যাও বা একটা আছে, কাউন্টার থেকে আওয়াজ এলো-দ্রুত না নিলে এটাও হাতছাড়া হয়ে যাবে।যেহেতু আমার জন্য প্রবাল মোটেলে রুম বুকিং দেওয়া ছিল, তাই প্রাধান্য পেলাম আমি -তার মানে ৩১ তারিখ সকাল ৯টার গাড়িতে আমি একাই কক্সবাজার রওনা করছি।

রাতের বাসে ভলভোতে যাবার অনেক অভিজ্ঞতা আছে, ভোরের আলোয় যখন বাস কলাতলীতে প্রবেশ করে তখন কিযে একটা মিষ্টি বাতাস সাগরের পাড় থেকে উড়ে এসে জড়িয়ে রাখে তা বর্ণনাতীত। দম বন্ধ করা এসির মধ্যে বসেও এমন হিমেল পরশ পাওয়া যায় না, আমি সেই আনন্দ আর একবার পাবো বিধায় অপেক্ষা করে আছি একটি সূর্যাস্তের জন্য। কিন্তু বিকেল গড়িয়ে অন্ধকার নেমে এলো, বাস চট্রগ্রাম আটকে আছে।দেশের হাজার হাজার পর্যটক এখন কক্সবাজারের পথে , হেঁটে যাবার জন্যও এইটুকুন জায়গা নেই।আর এতো শংকুল রাস্তা চট্রগ্রাম থেকে, অন্ধকারে বুঝতেও পারছিনা কালুরঘাট ব্রিজ পাড় হলাম কিনা। এদিকে বাসে ছোট ছোট বাচ্চা নিয়ে বেশ কয়েকটা ফ্যামিলি, যার ঢাকা থেকে স্টার্ট করেছে তাদের মুখ শুকিয়ে পাটিশাপটা।

কারণ কুমিল্লাতে ২০ মিনিটের ব্রেক ছিল, ওখানে কিছু খেতে পেরেছি সেটা ১২টায় , এখন প্রায় সাতটা বাজতে চললো-চট্রগ্রামে এসে একটা চিপ্স কিনেছিলাম, ওই দিয়ে কি পেট ভরে।এসি বাস সব জায়গায় দরজাও খুলবে না, যতোক্ষন পর্যন্ত সিরিয়াস কিছু না ঘটবে এভাবেই বসে থাকতে হবে। ইনানি রেস্টুরেন্ট যেতে আরো ঘন্টা দুই। ঢাকার ট্রাফিক জ্যাম সম্পর্কে আমরা সবাই অবগত,কিন্তু এই দূর্গম এলাকায় আমরা ঘন্টার পর ঘন্টা আটকে আছি এক বুক আশা নিয়ে -আহা বিচে গিয়ে কতো মজাই না করবো। তখনই খবরটা কানে এলো, এনটিভির এক সাংবাদিক বন্ধু জানিয়ে দিল-উদ্বোধনী অনুষ্ঠান খুব জমকালো হয়েছে, বিচে পায়রা-বেলুন উড়িয়ে মেগা বিচ কার্নিভাল উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল মুহিত। ১৬ ডিসেম্বরের পর থেকেই ওখানে লক্ষ মানুষের সমাগম, কিন্তু নগর বাউল জেমসের গান পরিবেশনার কিছুক্ষণ পরেই কনসার্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, সন্ধ্যার পর আগামি দুই দিনেও আর কোন কনসার্ট হবে না। নৃত্য পরিবেশনা, ঘুড়ি উৎসব, প্রদর্শনী, বিচ ক্রিকেট, সার্ফিং, ফুটবল, বালু ভাস্কর্য, প্রদর্শনী, আলোক চিত্র প্রদর্শনীসহ ৬৯টি ইভেন্ট সবগুলোই চলতে থাকবে রোস্টার অনুযায়ী। সব প্রোগ্রাম দিনেই সাড়তে বলা হয়েছে।

আমার পাশে বসা তরুণী বেশ মজাই পাচ্ছে আমার মুখের দিকে চেয়ে-আপা, আমরা বান্দরবানের ট্রিপ বাদ দিয়ে ডাবল টাকায় হোটেল বুকিং দিলাম,বাচ্চাদের নিয়ে একটু মজা করবো বীচে তাই ভেবে।কিন্তু হঠাত জানলাম সরকার সব জায়গাতেই রাতে কনসার্ট বন্ধ করে দিয়েছে।সারাদিন বাসে বসে থাকলাম আর হোটেল ভাড়া দিলাম-কি অদ্ভূত তাই না? আমি কি উত্তর করবো বুঝতে পারছিনা।আমার টাকার উপর দিয়ে কিছু যাবে না,যাচ্ছে জানের উপর দিয়ে-এতো কষ্টের জার্নি পুরাই মাটি।

মনের ভেতর নিভে যাওয়া তারাটা ক্লান্তির সাথে পাল্লা দিচ্ছে,বাস কলাতলীর প্রবেশ দ্বারেই থেমে গেল।হতভম্ব যাত্রীরা তখন বিরক্ত-কি হলো,ঝাউতলা যাও,আমরা ওখানেই নামবো।ড্রাইভার দেখিয়ে দিল পথ রোধ করে দাঁড়িয়ে আছে পুলিশ।পাশের যাত্রী আবার বলে উঠলো-বলেনতো আপু,এই দেশে কবে রাতের অন্ধকারে কেউ হামলা করে ?সবইতো দিনের বেলা হয়। রাত বাজে দশটা ,এখন এই বাচ্চাদের নিয়ে কিভাবে হোটেলে যাবো,আমিতো থাকবো শহরের ভেতর।

এবার আমার টেনশনের পালা শুরু, একে তো আমি একদম একা তার উপর বিরাট ল্যাগেজ। শীতের কাপড় দিয়ে পুরা ঠাসা, কিন্তু টেনশনে প্রচন্ড গরম লাগছে। আমি বাস থেকে নেমে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করলাম।শহরের ভেতর যাতে পর্যটকরা নির্বিঘ্নে হাঁটাহাঁটি করতে পারে সেই জন্য বাইরের কোন বড় বাস আর ঢুকতে দেওয়া হবে না।সব বাস সাড়া রাত এই চিকন পথেই এসে থামবে,সকাল হলে নিজস্ব ঠিকানায় যাবে। চারদিকে একবার চোখ বুলালাম সবাই কেবল হাঁটছে,রেস্টূরেন্ট গুলো একদম উপচে পড়ছে ভিড়ে, তিন চাকার ব্যাটারি গাড়ি চলছে। আর ক্রমাগত বেড়েই চলছে পুলিশ ভাইদের লাঠিচার্জ।এদের দেখলে আমার খুব মায়া হয়-দেশে যতো বড় সমস্যাই ঘটুক, কোথাও আর্মি বা র‍্যাব দেখা যায় না।যা ঝড় ঝাপটা আসে সব যায় পুলিশের উপর দিয়ে,আর ছোট ছোট পদে যারা আছে তারা বেশ টু পয়সা কামিয়ে নেয় আর বদনাম হয় পুরো পুলিশ জাতির, বাকী আর্মস বাহিনী দিয়ে জাতির কি উন্নতি হবে তা কেবল রাষ্ট্র প্রধান বলতে পারেন। আমি এবার রাষ্ট্রের চিন্তা বাদ দিয়ে নিজের জন্য অটো ডাকলাম,এরমধ্যেই প্রবাল মোটেলের ইনচার্জ মা টিনটিনের ফোন-ম্যাডাম, আপনি কোথায়?

আমি তাকে বিস্তারিত জানালাম,সে বললো অটোকে ফোন দিতে।অটো কিছুতেই ২০০ টাকার নীচে যাবে না, অবশেষে বলে কয়ে ১৫০ টাকায় রাজি করালাম।অটো যখন শহরের পথ ধরলো আমি জিজ্ঞেস করলাম-ভাই,কলাতলী থেকেতো প্রবাল হাঁটা রাস্তা আপনারা ২০০ টাকা করে নিচ্ছেন কেন যাত্রীদের কাছ থেকে? সে হেসে উত্তর দিল-এই টাকা কি পুরোটাই আমাদের পকেটে যায় আপনার মনে হয়? আমিতো আরো অবাক-তাহলে কে ভাগ বসায় এই টাকায়? ড্রাইভার কি যেন একটা বললো, শব্দটা কি রাতের অন্ধকারে কোথাও লুকিয়ে গেল? আমি ঠিক ধরতে পারলাম না।

প্রবালে নেমেই আমি সব কষ্ট ভুলে গেলাম। একজন রাখাইন ভদ্রমহিলা ফুল নিয়ে আমার জন্য অপেক্ষা করছেন। আমাকে দেখেই অনাবিল হাসি দিয়ে বললেন-অনেক কষ্ট করে আসলেন ম্যাডাম, সারাদিন অনেক অনুষ্ঠান হয়েছে।এখন সবাইকে দেখে মনে হচ্ছে কক্সবাজারে নামাজ পড়তে আসছে,কোথাও কিছু করা যাবে না।আমি খুব মজা পেলাম কথাটায়-করা যাবে,তবে দরজা বন্ধ করে।সায়মনে বিরাট পার্টি হচ্ছে,জন প্রতি তিন হাজার।আমাদের জীবনের গ্যারান্টি থাকলে ঠিকি যেতাম,কিন্তু শেষ রাতে মোটেলে ফেরার কোন গ্যারান্টি নেই তাই যাব না। মা টিন টিন বললেন- কোন টেনশন করবেন না, অনেক কষ্ট করে আসছন, কাল আমরা খুব মজা করবো।

আমি একটি সুন্দর নতুন বছরের স্বপ্ন চোখে নিয়ে ঘুমুতে গেলাম। মা টিনটিন এখানকার ম্যানেজার, তিনিই সব কিছুর ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন। সকাল ৯টায় তার ফোনেই আমার ঘুম ভাংলো,ততোক্ষনে সমুদ্র তীরে আয়োজন করে গান বাজনা আরম্ভ হয়ে গেছে আর এনটিভি সরাসরি তা প্রচারো করছে। কিছুক্ষণের মধ্যে ম্যানেজার আমাকে অবাক করে দিয়ে একটি রাখাইন ড্রেস হাতে উপস্থিত হলেন। এতো অল্প পরিচয়ে কেউ এতোটা আন্তরিক হতে পারে ভাবাই যায় না। ড্রেসটা সত্যি আমার গায়ে ঠিক মানিয়ে গেল, আমি অনেকটা উড়তে উড়তে মা টিনটিনকে সাথে নিয়ে ঘুরতে বের হলাম। রাতের এতো বড় জার্নির কোন ক্লান্তিই আমার ছিল না,  প্রথমেই মঞ্চের সামনের দিকের ছবি তুললাম। তারপর গেলাম পেছনে, দেখা হলো এনটিভির প্রডিউসার জাহাঙ্গীর ভাইয়ের সাথে। জাবির বড় ভাই, আমাকে দেখেই চমকে উঠলো-তুই এই ড্রেসে? আমি হাসলাম-গিফট।

পুরো সমুদ্র সৈকত সাজানো হয়েছে বেলুন আর নানা রঙের ফেস্টুনে, কিযে নতুন লাগছে সব কিছু। ধীরে ধীরে মানুষ বাড়ছে, শুনেছি এই অনুষ্ঠান দেখতে ৩ লাখ মানুষের সমাগম ঘটেছে কক্সবাজারে। মঞ্চে গান চলছে, আমি চলছি আপন গতিতে, সাথে চলছে ক্যামেরার ক্লিক ক্লিক।

এই বিচ কার্নিভাবালের অন্যতম টার্গেট বিদেশি পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। সব দিক থেকেই বলা যায় -আয়োজন জমকালো,কিন্তু সন্ধ্যার পর কনসার্ট বন্ধ করা ,তার সাথে বড় গাড়ি শহরে ঢুকতে না দেওয়া ,এই ধরণের বাড়তি নিরাপত্তা দিতে গিয়ে রাষ্ট্র দেশের পর্যটকদের মনোযোগ হারিয়ে ফেলছে কিনা সেটা ভালো করে আগে বিবেচনায় আনা দরকার।

দেখতে দেখতে দু'দিন কিভাবে কেটে গেল নিজেও বুঝতে পারিনি। অল্প চেনা মানুষ কখনো কখনো এমন আন্তরিকতা নিয়ে পাশে দাঁড়ায় যে তখন সব কিছু কেবল দায়িত্বের মধ্যেই থাকে না, দায়িত্বের বাইরে গিয়েও মানুষ মানুষের জন্য অনেক কিছুই করতে পারে। আর পর্যটকদের কাছে টানতে হলে আন্তরিকতা থাকা দরকার, ২০০ টাকার মাছ ৪০০ টাকা হাঁকলে আপনার রেঁস্তোরায় দ্বিতীয়বার কেউ আসবে না,এই লাভ আপনার একবারই হবে-এই সহজ কথাটা কেউ বোঝে না।

নীলাঞ্জনা সমুদ্রকে পেছনে ফেলে আবার ফিরে আসতে লাগলাম চেনা শহরের পথ ধরে। হাতের মুঠোয় ধরা থাকলো সীমাহীন আনন্দের অনেক নজরকাড়া হঠাৎ গ্রীন লাইন আটকে গেল ফেনীতে।কি হলো ,কি হলো করতে করতেই এক ঘন্টা,এমন একটা গ্রামে এসে আটকালাম যেখানে কোন ভালো রেস্টুরেন্ট নেই,টয়লেট ব্যবস্থাতো দূরে। বের হয়েছি সকাল আটটায়, এখন বাজে চারটা।কেবল ইনানী রেস্তোরায় ব্রেক ছিল।

মেয়েরা একজন একজন করে গ্রামের ভেতর একটা অচেনা বাড়ির ভেতর গিয়ে প্রয়োজনীয় কাজ সাড়ছে। হেল্পার জানালো-আর একটা গাড়ি কুমিল্লা থেকে এসে আমাদের নিয়ে যাবে।তাকে যতোই বলি গ্রীন-লাইনের মতোন বাস সার্ভিস যদি ঠিক মতোন গাড়ি মেইন টেইন করতে না পারে তাহলে সাধারণ যাত্রীরা কি ভাবে জার্নি করবে? বাসের হেল্পার বোঝায়-যন্ত্রতো যন্ত্রণা করবেই।

আমরা যন্ত্রটাকে ধাক্কাধাক্কি করে বাজারের সামনে নিয়ে গেলাম।সেখানে হোটেল আছে,খেয়ে নিলাম আগে। কখন নতুন বাস আসবে আর কখোন ঢাকায় ফিরবো-কে বলতে পারে। শুরু হলো দীর্ঘ অপেক্ষা।

রাত তখন একটা যখন বাস ঢাকায় প্রবেশ করে। অনেক বলে কয়ে, হেড অফিসে ফোন দিয়ে গ্রীন লাইনকে কলাবাগান অব্দি আনলাম।না হলে আমাদের রাজারবাগেই নামতে হতো,এই মাঝ রাতে ওখানে সি এন জি দিয়ে মিরপুর যাওয়া খুব মুশকিল।আমি আগেই আমার এক কলিগকে বললাম-ভাই, আপনি যদি সারারাত বাড়ি ফিরতে নাও পারেন তবু আমারে আগে বাসায় দিয়া তারপর অফিস থেকে ফিরবেন।এমন বিস্বাসী মানুষ সবার কপালে জোটে না,আমার জুটেছিল বলেই রক্ষা।উনি রাজারবাগে এসে উপস্থিত হলেন।আমরা কলাবাগান পর্যন্ত গিয়ে একটা সি এন জিতে উঠলাম,কিছুক্ষন পর একজন পুলিশ ভাই ভেতরে উঁকি দিলেন।কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই আমি হাতের টিকেট তার চোখের সামনে মেলে ধরে বললাম-ভাই, কিছু বলবেন? খুব ক্লান্ত , এবার বাড়ি যাই। তিনি কিছুই বললেন না, কেবল উৎসুক চেয়ে থাকলেন।

সিএনজি ড্রাইভার মধ্যরাতের খালি রাস্তা পেয়ে একরকম উড়তে উড়তেই মিরপুর পৌঁছে দিল। আর এই পুরো পথটা আমি আগামি মার্চে সাজেক যাবার পরিকল্পনা ঠিকঠাক করে নিলাম।