ব্যস্ত নগরের হাত ছেড়ে একটু অবসর…জাহাঙ্গীরনগর

রোদেলা নীলারোদেলা নীলা
Published : 8 Nov 2017, 07:14 PM
Updated : 8 Nov 2017, 07:14 PM

কার্তিকের এমনি এক সোনা ঝরা দিনে বেলা গড়িয়ে তখন বারোটার ঘর ছুঁই ছুঁই। নবীনগরের বাস গিয়ে থামলো ডেইরি ফার্ম গেইটে। আজ থেকে প্রায় বিশ বছর আগের কথা। সেদিনই প্রথম জানলাম বিস্তীর্ণ সবুজ ঘেরা যে লাল লাল দালান  দূর থেকে দেখা যাচ্ছে ওটাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় । এ অব্দি কেবল বড় বোনদের মুখে শুনে এসেছি আবাসিক হল যাপনের দিনলিপির কথা। সেদিন প্রথম এম এইচ মাঠের খোলা ময়দানে পা রেখেই মনে হলো, এমন নীলচে আকাশের নীচে যদি দাঁড়াতে না পারি তবে তো ছাত্রী  জীবনটাই বৃথা!

প্রধান ফটক থেকে প্রত্যেকটা ফ্যাকালটি বেশ দূরে দূরেই। যেতে হয় রিক্সায় অথবা দীর্ঘ পথ পায়ে হেঁটে। সবাইকে দেখলাম রিক্সাওয়ালাদের মামা বলেই সম্বোধন করছে। আমি আর পিছিয়ে থাকবো কেন? রিক্সা মামাকে নিয়ে দু'ধারে উপচে পড়া হলদে ফুলের রাজ্যের মধ্য দিয়ে ছুটে চললাম প্রশাসন ভবনে যেখানে ভর্তির আবেদন করতে হবে।

ট্রান্সপোর্ট নামে পরিচিত যে জায়গাটি সেখান থেকেই ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য ঢাকার বাস বরাদ্দ থাকে। আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হলেও ঢাকা থেকে অনেক স্টুডেন্ট এবং টিচার সকালে আসেন। ক্লাস শেষ করে বিকেলেই ফিরে যান। কিন্তু আমার বাড়ি ঢাকাতে হলেও মনে মনে ধরেই নিলাম  কোন ভাবেই বেলা শেষে ফিরছি না। এমন পাখির অরণ্য থেকে কি ফিরে যাওয়া যাবে? বেলা যতো বাড়ছে দেশি–বিদেশি পাখি দিয়ে ভরে যাচ্ছে রাস্তার দু'ধারের লেক। তার ঠিক গা ছুঁয়ে নানা জাতের বড় বড় সারিবদ্ধ গাছ। লাল লাল শাপলা বড় বড় চোখ করে কেবল আমাকেই ডাকছে। এ যেন ক্লান্ত পথিকের জন্য বিছিয়ে রাখা এক টুকরো শান্তির ছায়া ।

কবির আহমেদ বাবুর ক্যামেরায় লেকের অতিথি পাখি

ভর্তির আবেদনের জন্য অফিসের দিকে পা বাড়াতেই একদল প্রজাপতি কোথা থেকে যেন উড়ে এসে চুলের ওপর বসলো। এতো স্বস্তি আর নিরাপদ এরা এই অরণ্যকে ভাবে সেটা  নিজ চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। নভেম্বরের শুরু থেকেই যে সব দেশে তুষারপাত ঘটে সেখান থেকে অতিথি হয়ে ওদের পাখিরা এই দেশে আসে। দেশের হাওর অঞ্চল ছাড়াও ঢাকার খুব কাছে এই বিশ্ববিদ্যালয়কেই তারা নিরাপদ মনে করে। সরালী, পিচার্ড, গার্গেনি, মুরগ্যাধী, মানিকজোড়, কলাই, নাকতা, চিতাটুপি, লাল গুরগুটি এমন অনেক নাম না জানা পাখিরা সারাদিন বিচরণ করে ছোট বড় প্রায় ১৭টি লেকে। তাই তো প্রতি বছর ঘটা করে পালিত হয় পাখি মেলা এবং প্রজাপতি মেলা। দেশ এবং বিদেশ থেকে লক্ষ লক্ষ দর্শনার্থী সমবেত হয় এখানে। চলতে থাকে ছবি আঁকার প্রতিযোগিতা। শিশু এবং ছাত্র-ছাত্রীরা এতে ভীষণ রকম উৎসাহিত হয়।

কবির আহমেদ বাবুর ক্যামেরায় রঙিন প্রজাপতি

ট্রান্সপোর্টের রাস্তা ধরে হেঁটে সোজা এম এইচ হলের দিকে এলে  হাতের ডান পাশেই আছে বোটানিক্যাল গার্ডেন। ওটার পেছনেই বয়ে গেছে ছোট্ট একটি নদী। সেখানেও প্রচুর পাখি দেখা যায় আর সবুজ বনানী ছুঁয়ে উড়তে থাকে নানা প্রজাতির প্রজাপতি। সে এক মুগ্ধ করার মতোন দৃশ্য! যেন তানপুরার কোন এক তারে সুর তুলে শিল্পী ভুলে গেছেন পরের সুর বাঁধতে। একটানা বেজেই চলেছে। ঝুপঝাপ পড়তে থাকা শুকনো পাতার সেই সুরে ছন্দ তুলে চলেছে নানাবিধ।

এবারই প্রথম এই লেকগুলোতে সরালী জাতীয় হাঁসের দেখা মেলে। সবগুলো লেক না ভরলেও ধীরে ধীরে ডিসেম্বর আসলে দেখা যাবে একটি লেকও আর খালি নেই। সবুজ গোল গোল পাতার মাঝখানে ছোট বড় পাখিরা উঁকি দিচ্ছে। সেদিন ভর্তি ফর্ম হাতে নিয়েই প্রতিজ্ঞা করেছিলাম –অন্য কোথাও যাই পাই, পড়তে আমি এখানেই আসবো। প্রিয় নাট্যকার সেলিম আল দীন স্যার ছিলেন তখন নাট্যতত্ব বিভাগে। খুব ইচ্ছে থাকলেও বাবার কড়াকড়িতে শেষ অব্দি নাটক নিয়ে পড়তে পারলাম না। ভর্তি হতে হলো অংক নিয়ে। কিন্তু মন তো আমার প্রজাপতি। কোনো দিন ঠিকঠাক ক্লাসে বসেনি।

কবির আহমেদ বাবুর ক্যামেরায় লেখক। ট্রান্সপোর্ট লেক এবং  বোটানিক্যাল গার্ডেনে।

জাহাঙ্গীরনগর থেকে পাশ করে গেছেন যেসব নামী মানুষ তাদের নাম খুব মনে পড়ছে এ মুহূর্তে। সেলিম আল দীন স্যারতো আছেনি, তাছাড়াও  হুমায়ুন ফরীদি, শহীদুজ্জামান সেলিম, আব্দুল্লাহ আল মামুন, মুশফিকুর রহিম,আনু মুহাম্মদ, ড. সৌমিত্র শেখর, মাশরাফি বিন মর্তুজা, সুমাইয়া শিমুর নাম উল্লেখযোগ্য । এছাড়াও সংগীত অঙ্গনে বেশ ক'জনের নাম আছে। আছেন দেশ বিখ্যাত অনেক লেখক-কবি-প্রাবন্ধিক। নাম লিখতে গেলে লিস্ট খানা অনেক বড় হয়ে যাবে ।

মুক্তমঞ্চ সম্পর্কে জেনেছি পত্রিকা পড়েই। কিন্তু সেটার থাক থাক সিঁড়ি দেখে আমি কিছুতেই চোখ সরাতে পারছিলাম না। মঞ্চটা একপাশে রাখা থাকলেও চারপাশে খোলা। সন্ধ্যায় যখন নাটক শুরু হলো দেখলাম সব পাশ থেকেই অভিনয় শিল্পীরা মঞ্চে প্রবেশ করতে পারছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রাণকেন্দ্র এই সেলিম আল-দীন মুক্তমঞ্চটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮১ সালে। শিল্পী মোস্তফা মনোয়ার, নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু ও প্রয়াত নাট্যকার সেলিম-আল দীনের পরিকল্পনায় নির্মিত ক্যাম্পাসের এই প্রধান সাংস্কৃতিক বলয়টি  উদ্বোধন করেন তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী। ওই দিনই মুক্তমঞ্চে পরিবেশিত হয়েছিল প্রয়াত নাট্যকার সেলিম-আল দীনের রচনায় কাইজার আহমেদের নির্দেশনায় নাটক 'শকুন্তলা'। চমৎকার নির্মাণশৈলীর এ মঞ্চটির স্থপতি আলমগীর কবীর। মুক্তমঞ্চটি নির্মিত হয়েছিল Sublimation of Sobhabatheb আদলে। লাল ইট দ্বারা নির্মিত এ মঞ্চটির রয়েছে ১৪টি সিঁড়ি এবং ১ হাজার ২০০ আসন।

একুশ শতক .কম থেকে নেওয়া মুক্তমঞ্চের ছবি

এ মঞ্চে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও খ্যাতনামা নাট্য সংগঠনের নাটক পরিবেশিত হয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চটি পাহাড়ের পাদদেশে না হলেও এটি ওই আদলেই তৈরি এবং গ্রিক নাটকের সঙ্গে এর ঐতিহ্যগত সম্পর্কও রয়েছে। এটাকে বলা হয় থিয়েটার অব এপিটোরাস। গ্রিক এরিনা বা ওপেন এয়ার মঞ্চের আদলে মুক্তমঞ্চের স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বিখ্যাত ব্যক্তিদের পদচারণা হয়েছে জাবির এই মুক্তমঞ্চে। মুক্তমঞ্চের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, এটি নির্মাণ করা হয়েছে এমনভাবে যেন মুক্তমঞ্চের স্টেজ থেকে সংলাপ বললে সামনের ও  পেছনের সারিতে বসে সমানভাবে শোনা যায়।

খুব ক্ষুধা পেয়ে গিয়েছিল হেঁটে হেঁটে। এতো বড় জায়গা আগেতো কোন দিন পাইনি। বড় আপুরা নিয়ে গেল আল বেরুনী হল সংলগ্ন রাস্তায় যাকে বটতলা। বললেই সবাই চেনে। টিনের চাল দিয়ে ঘেরা কয়েকটি  অভিনব হোটেল। কী নেই সেখানে! সাদা ভাত, খিচুখি,গরুর মাংস, দেশি মুরগি, রুই মাছ, শাক, ছোট মাছ আর কতো কি ভর্তা! এতো কম দামে ভাত খাওয়া যায় সেটাও আমার জানা ছিল না। বড় আপুদের লেজ ধরে থাকার জায়গাটা দেখবার জন্য জাহানারা ইমাম হলে ঢুকে পড়লাম। ভেতরে পা রাখতেই এক রাশ বিস্ময় আমাকে গ্রাস করলো। এর আগে দেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে গিয়েছিলাম। কিন্তু হলের ভেতর আস্ত বাগান আর ফুলের সমারোহ চোখে পড়েনি। শুধু তাই না,  প্রীতিলতা এবং জাহানারা ইমাম হল নির্মাণ করা হয়েছে প্রজাপতি আদলে। লনের উপর উঠে চারপাশে তাকালে দেখা যায় ঘন সবুজ গাছেরা পাহারায় মগ্ন ।

প্রজাপতি আদলে  মেয়েদের দুটো হল। ছবি  কৃতজ্ঞতা ঃ static.wixstatic.com

মন ভোলানো পূর্ণিমা আলোয় কতো রাত যে হলের ভেতর জেগে কাটিয়েছি তার সঠিক হিসেব আমার জানা নেই। পিঠা উৎসব, নবান্ন উৎসব, পয়লা বৈশাখ থেকে থার্টি ফাস্ট নাইট –কতো যে মজার স্মৃতি! আমি প্রীতিলতা হলে থাকবার সুযোগ পেয়েছিলাম এবং কাকতালীয় ভাবে এম ফিল করা এক আপুর রুমে থাকতাম। আপু বেশিরভাগ সময় ঢাকায় থাকতেন। আমার লেখালেখির প্রথম সাক্ষী প্রীতিলতালার খোলা ছাদ,  যার স্থাপতি ফয়সাল মাহবুব এর কাছে আমার আজন্ম কৃতজ্ঞতা ।

যে বিশ্ববিদ্যালয় ঘিরে আমার এতো আবেগ-ভালোবাসা তার সম্পর্কে  আরো একটু জেনে নেই । ১৯৭০ সালে জাহাঙ্গীরনগর মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলেও  ১৯৭৩ সালে এটির নামকরণ করা হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। ঢাকা শহরের মুঘল আমলের নাম 'জাহাঙ্গীরনগর' থেকে এই নামকরণ করা হয়। রাজধানী ঢাকা থেকে ৩২ কিমি দূরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পশ্চিম পার্শ্বে প্রায় ৭২০ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত এই বিশ্ববিদ্যালয়। প্রথম ব্যাচে ১৫০ জন ছাত্র নিয়ে ৪টি বিভাগ চালু হয়। বিভাগগুলো হচ্ছে অর্থনীতি, ভূগোল, গণিত এবং পরিসংখ্যান।

১৯৭১ সালের ১২ জানুয়ারি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় উদ্বোধন করেন। তার আগে ১৯৭০ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য নিযুক্ত হন অধ্যাপক মফিজ উদ্দিন। উপাচার্য ড.ফারজানা ইসলাম বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রথম নারী উপাচার্য হিসেবে ২০১৪ সালের ২রা মার্চ থেকে দায়িত্ব পালন করছেন।

উয়ারী ও বটেশ্বরে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের খননকার্য, দেশীয় নাট্যচর্চায় নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের অবদান, বিদ্যায়তনিক নৃবিজ্ঞান চর্চায় নৃবিজ্ঞান বিভাগের পথপ্রদর্শন সুবিদিত। ইতিহাস বিভাগের 'ক্লিও', নৃবিজ্ঞান বিভাগের 'নৃবিজ্ঞান পত্রিকা', বাংলা বিভাগের 'ভাষা ও সাহিত্য পত্র', ইংরেজি বিভাগের 'হারভেস্ট', দর্শন বিভাগের 'কপুলা'সহ ২৬টি বিভাগের ভিন্ন ভিন্ন প্রকাশনা গবেষণায় উল্লেখযোগ্য স্বাক্ষর রেখেছে। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬টি অনুষদের অধীনে ৩৫টি বিভাগ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট হল সংখ্যা ১৬টি, এরমধ্যে ছাত্রদের জন্য ৮টি এবং ছাত্রীদের জন্য ৮টি হল রয়েছে।

সূর্যাস্তে বাড়ি ফেরা,ছবি ঃ কবির আহমেদ বাবু

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন ও লেখক-শিল্পী-সাংস্কৃতিক কর্মীদের সমন্বিত সামাজিক-রাজনৈতিক জোট বা সংগঠন। জোট ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে এই জোটে ১২টি সংগঠন রয়েছে- জাহাঙ্গীরনগর থিয়েটার, ধ্বনি, চলচ্চিত্র আন্দোলন, জলসিঁড়ি, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, জহির রায়হান চলচ্চিত্র সংসদ, জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ডিবেট অর্গানাইজেশন, আনন্দন, জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ফটোগ্রাফিক সোসাইটি ।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন সেবামূলক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কাজ করে। এছাড়া রয়েছে বিভিন্ন জেলার ছাত্র কল্যাণ সমিতি। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাব, জাহাঙ্গীরনগর এডভেঞ্চার ক্লাব, লিও ক্লাব অব লিবার্টি, রোট্যারাক্ট ক্লাব অব জাহাঙ্গীরনগর, বাঁধন, জাহাঙ্গীরনগর প্রোগ্রামারস ক্লাব, এক্সপ্লোরার্স, লিও ক্লাব, পিডিএফ, কাশফুল, বন্ধুসভা, স্বজন সমাবেশ, যাযাদি ফ্রেন্ডস ফোরাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, বি.এন.সি.সি. জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কন্টিনজেন্ট, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ভূগোল সমিতি।

কিছু উল্লেখযোখ্য সরণীর নাম লিখতেই হয় ।

কবির সরণী

সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী আন্দোলনে শহীদ ছাত্রদল নেতা হাবিবুর রহমান কবিরের স্মরণে কবির সরণীর নামকরণ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল সড়ক থেকে আ.ফ.ম কামালউদ্দিন হল পর্যন্ত এ সরণী বিস্তৃত ।

মুন্নী সরণী

সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী মুন্নীর স্মরণে আল বেরুনী হলের সামনে রয়েছে মুন্নী সরণি।

জুবায়ের সরণী

বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী অসন্তোষ-কে কেন্দ্র করে ২০১২ সালে খুন হন ছাত্রলীগ নেতা ও ইংরেজী বিভাগের শিক্ষার্থী জুবায়ের রহমান । বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল সড়ক থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল পর্যন্ত এ সরণী বিস্তৃত ।

স্বপ্না সরণী

সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী স্বপ্নার স্মরণে মিহির চত্ত্বর থেকে নওয়াব ফয়েজুন্নেসা হল পর্যন্ত বিস্তৃত এ সরণী ।

প্রত্যেকটা মানুষ কর্ম জীবনে প্রবেশের পর তার ছাত্র জীবন নিয়ে অনেক স্মৃতির মেলা মনের অজান্তে  ভাসায়। কিন্তু সবার জীবনে এমন শিমুল তুলোর মতোন উড়ে যাওয়া সময় হয় না যাকে বার বার দু'হাতের মুঠোয় ধরতে ইচ্ছে করে। জাহাঙ্গীরনগর এমন একটা বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে একবার পা রাখলে যে কারো মনেই হবে –-ফিরিয়ে দাও সে অরণ্য, লও হে নগর। তাই সময় যতই গড়িয়ে চলুক আমরা 'জাবিয়ান' পরিবার সেই অরণ্যের কাছেই বার বার ফিরে যেতে চাই।

তথ্য সূত্র: http://www.juniv.edu/