ভূমিকম্প আমাদের পাপের ফসল এবং ভূমিকম্পে আমাদের কিছু করণীয়তা

রুদ্র আমিন
Published : 27 April 2015, 12:57 PM
Updated : 27 April 2015, 12:57 PM

ভূমিকম্প আমাদের কি শেখায় ?

যারা পাপকর্মে লিপ্ত, যারা আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারণ করে দেয়া সীমানা অতিক্রম করে চলে, তাদেরকে সতর্ক করে দেয়া, পুনরায় তাদেরকে আল্লাহর ইবাদত-দাসত্বের বলয়ে ফিরিয়ে আনার উদ্দেশ্যে ভয় ভীতি প্রদর্শন করা,  দয়াময় পরম দয়ালু আল্লাহ তাআলার  অসীম রহমতের একটি বহি:প্রকাশ। কেননা তিনি এরূপ করে, তাঁর  বান্দাদেরকে তাদের কৃতকর্মের প্রতি ফিরে তাকানোর সুযোগ করে দেন, তাওবা করার সুযোগ করে দেন। এটা নিঃসন্দেহে তাঁর করুণা। নবী সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়াসাল্লামের সাহাবাগণও আল্লাহর সতর্কীকরণকে, এক অর্থে, রহমতস্বরূপই দেখতেন। [দ্র: দারামি-৩০]

আল্লাহর সতকীকরণ ধরন-ধারণে, আকার-প্রকৃতিতে, বিভিন্ন সময় বিভিন্নরূপে আপতিত হয়। কখনো ব্যাপক বিধংসী ঘূর্ণিঝড়ের আকৃতিতে, কখনো নির্বাধ-দুর্দমনীয় বন্যার আকারে, কখনো বা যুদ্ধের আকারে, কখনো প্রচণ্ড ভূমিকম্পের আকারে, আল্লাহ তাঁর বান্দাদেরকে সতর্ক করে থাকেন। কারণ তিনি চান না যে মানুষ অবাধ্য  হয়ে, তার বিধি-বিধানের প্রতি পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে, প্রবৃত্তি চালিত হয়ে জীবনযাপন করুক, যার ভয়াবহ পরিণতি হবে পরকালের দুঃসহ যন্ত্রণাদায়ক জীবন, জাহান্নাম।

অন্য আরেকটি আয়াতে বলা হয়েছে,

ظَهَرَ الْفَسَادُ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ بِمَا كَسَبَتْ أَيْدِي النَّاسِ لِيُذِيقَهُم بَعْضَ الَّذِي عَمِلُوا لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ-

অনুবাদ: 'স্থলে ও জলে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে মানুষের কৃতকর্মের দরুন। এর দ্বারা আল্লাহ তাদের কিছু কিছু কর্মের শাস্তি আস্বাদন করাতে চান, যাতে তারা (সরল পথে) ফিরে আসে' (রূম ৩০/৪১)

সূরা রূম মাক্কী সূরা। আলোচ্য আয়াতটিও মক্কাতে নাযিল হয়েছে। বর্ণনাদৃষ্টে মনে হচ্ছে যেন ঐ সময়েই কেবল সারা পৃথিবীতে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছিল। যেজন্য কুরআন নাযিল করে মানুষকে ছিরাতে মুস্তাক্বীমের দিকে আহবান জানানো হয়েছে। বিষয়টি মূলতঃ তা নয়। বরং এর দ্বারা মানব চরিত্রের একটা স্থায়ী প্রবণতার দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, মানুষ স্বভাবত: ফাসাদ প্রবণ। আবার সে আনুগত্য প্রবণ। সুযোগ পেলে তার অপরাধ প্রবণতা মাথাচাড়া দেয় ও ফাসাদ সৃষ্টি করে। আবার চাপের মুখে সে শান্ত ও অনুগত হয়। এই চাপ দু'ধরনের হয়। এক- নৈতিক ও ধর্মীয় চাপ। যা তাকে ভিতর থেকে দুর্বল করে দেয়। দুই- সামাজিক ও বৈষয়িক চাপ, যা তাকে বাহ্যিকভাবে অনুগত করে। ইসলামী শরী'আত তার অনুসারীদেরকে ভিতর ও বাহির উভয় দিকে চাপ সৃষ্টি করে। ফলে সমাজ বিপর্যয়মুক্ত থাকে।

ভূমিকম্পের আবির্ভাব প্রথমে ব্যাঙ যেমন বুঝতে পারে তেমন সেই ব্যাঙগুলো অনেকটা সাবধানও করে দেয়। আসলে আমরা কেউ বুঝতে পারি না বা বুঝার চেষ্টা করি না। এর কারন আমরা দ্বীন পথে থেকে দূরে সরে গিয়েছি।  ভূমিকম্পের পূর্বাভাস আবহাওয়ার পূর্বাভাসের মত দেয়া সম্ভব নয়। কিছু প্রাণীর অস্বাভাবিক আচরণের থেকে অনুমান করা যেতে পারে। যেমন হঠাৎ করে গর্ত থেকে সাপ, ব্যাঙ, ইদুর বের হয়ে আসলে। গৃহপালিত পশুপাখি অস্বাভাবিক আচরণ করলে। হঠাৎ কোন গ্যাস মাটি ফুরে উপরে আসলে।  ঠিকএমনটি ঘটেছিল ২০০৮ সালে চীনের সিচুয়ান প্রদেশে ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়। ভূমিকম্প আঘাত হানার আগেই হাজার হাজার ব্যাঙ রাস্তায় উঠে এসেছিল। সেটা দেখে কেউ সতর্ক হয়নি। কিন্তু সত্যিই যখন বিপর্যয়টা এসে গেল ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে! প্রায় ৭০ হাজার প্রাণহানি!!

আজও ৬.৭ মাত্রায় ভূমিকম্পন হলো। সৃষ্টিকর্তার অশেষ রহমতে আমরা ভাল আছি। দুর্ঘটনা ঘটলে যদি ক্ষতি না হয় তখন বুঝতে হবে আগামীতে ভয়াবহ কিছু অপেক্ষা করছে। আমাদের দেশে পাপের হাজার জমতে শুরু করেছে। পিতা-মাতার অবৈধ উপার্জন যেমন পরিবারের সন্তান এবং অন্যান্য সদস্যদের উপর প্রভাব ফেলে তেমনি দেশের পাপের বোঝা যদি বেশি হয় তখন সকল জনগণকে এর ভোগ করতে হয়।

মিথ্যা, অবিচারে দেশ ছেয়ে গেছে। মানুষ বলে মানুষ মনে করে না যারা অর্থবিত্ত এবং ক্ষমতার আবরনে ঢাকা থাকে। যেখানে পৃথিবীটাই ক্ষণস্থায়ী সেখানে এই সকল অর্থবিত্ত আর ক্ষমতা কতদিনের ?  ভুলেই যাই সাময়িক ক্ষমতায়। শক্তির ক্ষয় হয় না ঠিক আছে কিন্তু রূপান্তরিত হয়। এখানেই শক্তির পরিবর্তন ঘটে।

গতকাল নেপালের হাজার হাজার মানুষ ভূমিকম্পে নিহত হয়েছে। এসব দেখে আমাদের সাবধান হওয়ার উচিত। আজও আমাদের দেশে ভূমিকম্প অনুভূত হলো সেই ভূমিকম্পন আবার ৬.৭ মাত্রায়। কিন্তু তেমন কোন ক্ষয় ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। আসলে এগুলো সর্তক বার্তা……… সাবধান হওয়ার সংকেত। ভুল পথে থেকে ফিরে আসার অশনী সংকেত।

এ ব্যাপারে কিছু তথ্য তুলে দেয়া যেতে পারে:

১) ৩৭৩ খ্রি. পূর্বে গ্রীসের হেলিস সিটি ভূমিকম্পে ধ্বংস হওয়ার একদিন পূর্বেই ঐ এলাকা ছেড়ে ইঁদুর, সাপ এবং বেজি অন্যত্র চলে যায়।

২) ইউরেকা শহরে Times-Standard newsroom এর ঘটনা (জানুয়ারী ২০০৯)। সফি নামের একটি কুকুর ৬.৫ মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার কয়েক সেকেন্ড পূর্বে ফ্লোরে নাক ঘষে কিছু আন্দাজ করতে পারে। এরপর তার মালিকের সাথে অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে। মালিক সহ সফি বাইরে যাওয়ার পরপরই ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। যা সিসি টিভির ক্যামেরা বন্দি হয়।

৩) Zoological Society of London's Journal of Zoology 'র এক স্টাডি মতে গবেষকগণ জানান কুনোব্যাঙ (toad) এর মাধ্যমে ভূমিকম্পের পূর্বাভাস পাওয়া যেতে পারে।

ইটালীর লা'একুইলা (L'Aquila) সিটিতে ৬.৩ মাত্রার ভূমিকম্পের (৬ এপ্রিল ২০০৯) কয়েকদিন পূর্বে উক্ত স্থান ছেড়ে বেশ কিছু কুনোব্যাঙ তাদের বংশবিস্তার স্থান পরিবর্তন করে অন্যত্র চলে যায়। এই ভূমিকম্পে ১০০ এর মত প্রাণহানি ঘটে। বিজ্ঞানীগণ কুনোব্যাঙের এ ধরনের আচরণ থেকেই এই সিদ্ধান্তে আসেন।

ভূমিকম্পের সময় সাধারনত আমাদের সকলের যা করণীয়:

* ভূমিকম্পের প্রথম ঝাঁকুনির সঙ্গে সঙ্গে খোলা জায়গায় আশ্রয় নিন।

* ঘরে হেটনেট থাকলে তা মাথায় দিয়ে নিন এবং অন্যদেরও দিতে বলুন।

* ঘর থেকে বের হওয়ার সময় আপনার আশপাশে অবস্থানরত অন্যান্য প্রতিবেশীদেরও ঘর থেকে বের হয়ে আসতে বলুন।

* দ্রুত বৈদ্যুতিক ও গ্যাসের সুইচ বন্ধ করে দিন।

* কোন কিছু সঙ্গে নেয়ার জন্য অযথা সময় নষ্ট করবেন না।

* যদি ঘর থেকে বের হওয়া না যায়, সেক্ষেত্রে ইটের গাঁথুনি দেয়া পাকা ঘর হলে ঘরের কোণে এবং কলাম ও বিমের তৈরি ভবন হলে কলামের গোড়ায় আশ্রয় নিন।

* আধাপাকা বা টিন দিয়ে তৈরি ঘর থেকে বের হতে না পারলে শক্ত খাট বা চৌকির নিচে আশ্রয় নিন।

* ভূমিকম্প রাতে হলে কিংবা দ্রুত বের হতে না পারলে সজাগ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘরের কোণে, কলামের গোড়ায় অথবা শক্ত খাট বা টেবিলের নিচে আশ্রয় নিন।

* গাড়িতে থাকাকালে ভূমিকম্প হলে চালককে গাড়ি থামাতে বলুন। মনে রাখবেন, সেতুর ওপর গাড়ি থাকাকালে ভূমিকম্প অনুভূত হলে তাৎক্ষণিক সেতু পেরিয়ে এসে গাড়ি থামান।

* ভূমিকম্প চলাকালে লিফট ব্যবহার করবেন না।

* যদি বহুতল ভবনের উপরের দিকে কোন তলায় আটকা পড়েন এবং সেখান থেকে দ্রুত বের হয়ে আসার কোন পথই না থাকে তবে সাহস হারাবেন না। ধৈর্য হারাবেন না। মনে রাখবেন, বিপদে ধৈর্য রাখা এবং আত্মবিশ্বাস না হারানো বুদ্ধিমত্তার প্রমাণ।

* বিম, দেয়াল, কংক্রিটের ছাদ ইত্যাদির মধ্যে আপনার শরীরের কোন অংশ চাপা পড়লে, বের হওয়ার কোন সুযোগই যদি না থাকে তবে বেশি নড়াচড়া করবেন না। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের মাধ্যমে আপনার বাঁচার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে যেতে পারে।

* ধ্বংসস্তূপে আটকে গেলে কোন অবস্থাতেই নিজের সাহস হারাবেন না। যে কোন উত্তেজনা ও ভয় আপনার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

সতর্কতা ও সচেতনতা

* ভূমিকম্প সম্পর্কে সঠিক ধারণা নিন।

* এর ঝুঁকি ও করণীয় বিষয় সম্পর্কে অবহিত থাকতে হবে।

* ভূমিকম্পের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করতে সার্বক্ষণিক প্রস্তুতি থাকতে হবে।

* এলাকাভিত্তিক সেচ্ছাসেবক দল গড়ে তুলতে হবে।

* ভূমিকম্পে আহতদের জন্য জরুরি চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা করতে হবে।

* বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, সভা, সেমিনার এবং গণমাধ্যমের সাহায্যে জনগণের সচেতনতা বাড়াতে হবে।

* বাড়ি বানানোর প্রকৌশলী, এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি, বাড়ির মালিক ও মেরামতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের যাথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে।

* ভূমিকম্প প্রকৌশল কোর্স চালু করা জরুরি।

* স্কুল, হাসপাতাল ও দমকলের মতো অত্যাবশ্যকীয় প্রতিষ্ঠানের গঠন সুচারুভাবে করা উচিত।

* গৃহীত সব পরিকল্পনার বাস্তবায়ন করতে হবে।

* নির্মাণ আইন অনুযায়ী বাড়ি ও অন্যান্য স্থাপনা তৈরি করলে দুর্যোগ মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।

* বাড়ি বানানোর সময় অবশ্যই ভূমিকম্প সহনশীল করে তৈরি করতে হবে।

ভূমিকম্প একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং এটিকে প্রতিরোধ করার উপায় ও ভূমিকম্প-পরবর্তী দুর্যোগ মোকাবিলার মতো যথেষ্ট ব্যবস্থা এখনো আমাদের হাতে ও দেশে নেই। এর পূর্বাভাস পাওয়ার ব্যাবস্থারও যখন কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই; এ অবস্থায় আমাদের নিজেদের সচেতনতাই পারে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির হার থেকে আমাদেরকে বাঁচাতে।

পৃথিবীতে এলাহী গযব নাযিলের বিধি হ'ল প্রধানতঃ দু'টি। এক- বান্দার  অন্যায় কৃতকর্মের ফলাফল প্রদান। দুই- প্রতিটি অন্যায় কর্মের সাথে সাথে প্রতিশোধ না নিয়ে বান্দাকে তওবা করার অবকাশ দান ও তওবা না করলে শাস্তি প্রদান। যেমন আল্লাহ বলেন, وَمَا أَصَابَكُم مِّن مُّصِيبَةٍ فَبِمَا كَسَبَتْ أَيْدِيكُمْ وَيَعْفُو عَن كَثِيرٍ- 'তোমাদেরকে যেসব বিপদাপদ স্পর্শ করে, সেগুলি তোমাদের কৃতকর্মের ফল। তবে অনেক পাপ আল্লাহ ক্ষমা করে থাকেন' (শূরা ৪২/৩০)

এছাড়াও আরেকটি বিধি রয়েছে, সেটি হ'ল প্রথমে ছোট ছোট আযাব পাঠিয়ে বান্দাকে হুঁশিয়ার করা। অতঃপর বড় শাস্তি নাযিল করা। যেমন আল্লাহ বলেন, وَلَنُذِيقَنَّهُمْ مِنَ الْعَذَابِ الْأَدْنَى دُونَ الْعَذَابِ الْأَكْبَرِ لَعَلَّهُمْ يَرْجِعُونَ- 'গুরু দন্ডের পূর্বে অবশ্যই আমরা তাদেরকে লঘুদন্ডের  আস্বাদন ভোগ করাব, যাতে তারা ফিরে আসে' (সাজদাহ ৩২/২১)। যেমন মূসার দাওয়াত কবুল না করায় হঠকারী ফেরাঊনের কওমের উপর বিশ বছরে পরপর ৭-এর অধিক গযব নাযিল হয়। কিন্তু ফেরাঊন ও তার সভাসদ মন্ডলী এগুলিকে স্রেফ প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলে উড়িয়ে দেয়। অতঃপর বিরাট জনসমাবেশ ডেকে ফেরাঊন বলে,وَمَا أَهْدِيكُمْ إِلاَّ سَبِيلَ الرَّشَادِ- 'আমি তোমাদেরকে মঙ্গলের পথ ভিন্ন অন্য পথ দেখাই না' (মুমিন ৪০/২৯)। আর 'আমিই তোমাদের সর্বোচ্চ পালনকর্তা' (أَنَا رَبُّكُمُ الْأَعْلَى) (নাযে'আত ৭৯/২৪)। ফেরাঊন নিজেকে মানুষের  সৃষ্টিকর্তা দাবী করেনি। বরং 'পালনকর্তা' বলেছিল। কারণ সে রাজা হিসাবে জনগণের রুটি-রুজির ব্যবস্থা করত ও তাদের লালন-পালন করত।

তার উপরেও যে কোন পালনকর্তা আছেন, যিনি আলো দিয়ে, বায়ু দিয়ে, পানি দিয়ে, শস্য ও ফলাদি দিয়ে সৃষ্টিকে লালন করছেন, সে অদৃশ্য জ্ঞান ফেরাঊনের ছিল না। মূসার দেওয়া সে অহি-র জ্ঞান ও বিধান সে গ্রহণ করেনি। কেননা তাতে তার স্বেচ্ছাচারিতা ব্যাহত হয়। ফলে সে অহংকার দেখায় ও তাতেই আল্লাহর গযব ত্বরান্বিত হয়। তার চূড়ান্ত অহংকারের শাস্তি আল্লাহ চূড়ান্তভাবেই দেন এবং তাকে তার সৈন্য-সামন্তসহ সদলবলে সাগরে ডুবিয়ে মারেন। (ইউনুস ১০/৯০)। মযলূম মূসা ও হাযার হাযার নির্যাতিত বনু ইস্রাঈল নিজেরা নাজাত পায় ও যালেম ফেরাঊনের এই করুন মৃত্যুর দৃশ্য স্বচক্ষে অবলোকন করে (বাক্বারাহ ২/৫০)। এই মহামুক্তির শুকরিয়া স্বরূপ মূসা ও তার কওম সেদিন ১০ই মুহাররম থেকে প্রতি বছর আশূরার নফল ছিয়াম শুরু করেন, যা আজও চালু আছে। তবে নিঃসন্দেহে জাহান্নামের শাস্তিই হ'ল সবচেয়ে বড় শাস্তি। যার কোন তুলনা নেই। কাফির-মুনাফিকদের চূড়ান্ত আবাসস্থল হ'ল সেটাই (নিসা ৪/১৪০)