এ কিসের কাণ্ড কারখানা!!

নাদিম সুলতান রুপক
Published : 25 Oct 2012, 09:56 AM
Updated : 25 Oct 2012, 09:56 AM

আমাদের দেশে দূর্নিতি দূর করা নাকি অনেক কঠিন, এমন বক্তব্য প্রায়ই শোনা যায়। পৃথিবীতে সব কিছুরই আপগ্রেডেশন হচ্ছে। আমাদের দেশের চোরগুলো ডাকাতে পরিণত হয়েছে । সরকারি দলের নেতারা (যে দল যখন ক্ষমতায় থাকে) ভিজিএফ কার্ডের চাল তুলে নিয়ে বিক্রি করেন, গ্রামের অনেক মেম্বাররা ভিজিএফ কার্ডের চাল খেয়ে ও বিক্রি করে জীবিন নির্বাহ করেন। ভিজিএফ কার্ড, সারের কার্ড, আটার কার্ড ইত্যাদি কার্ড গরীব মানুষদের দেওয়া হয় টাকার বিনিময়ে এবং এই টাকা গ্রহন করে চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ সরকারি দলের গ্রাম পর্যায়ের নেতারা। আমাদের দেশে নিয়োগ বাণিজ্যের একটা সার্কেল হয়ে গেছে। এক শ্রেণীর লোক বকরা ধরার মত চাকুরী প্রত্যাশী যুবক যুবতীদের খুঁজে বেড়ান, তাদের কাছ থেকে নেওয়া হয় নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ, সেই অর্থের নির্দিষ্ট পরিমাণ রেখে দেওয়া হয় থানা পর্যায়ের নেতাদের, থানা পর্যায়ের নেতারা আবার উক্ত টাকার নির্দিষ্ট পরিমাণ রেখে দিয়ে দেন জেলা বা কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতাদের। শুধু নেতারাই নন সরকারী নিন্ম থেকে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা/কর্মচারীরাদের এ ধরণের দূর্নিতির বড় অংশগ্রহন থাকে। মোটকথা আমাদের দেশে একটা দূর্নিতির জাল ছড়িয়ে আছে গ্রাম থেকে রাজধানী পর্যন্ত , এবং সে জাল অত্যন্ত শক্তিশালী। মাঝে মাঝে বেশ মজার মজার দূর্নিতি হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সরকারী কলেজের পিয়ন জানান, তিনি অনার্সে ভর্তিচ্ছু অনেক ছাত্র/ছাত্রীদের কাছ থেকে টাকা নেন ভর্তি পরীক্ষার আগে , পরে যেসব শিক্ষার্থী চান্স পান না তাদের টাকা ফিরিয়ে দেন, যারা চান্স পান তাদের টাকা দেওয়া হয় না। অথচ এখানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেঊ সম্পৃক্ত নন, নিজ বুদ্ধিতেই এমন দূর্নিতি করছে ঐ পিয়ন। আবার এটা শোনা যায় অনেকে চাকুরি দেবার নামে টাকা নিয়ে সেই টাকা ব্যাংকে রেখে দেন, পরে ঐ চাকুরিপ্রার্থি চাকুরি না পেলে টাকা ফেরৎ পায় অনেক কষ্টে, আর চাকুরী পেলে তো আর টাকা ফেরৎ দেওয়া লাগে না। এ যেন "ঝরে বক পড়ে আর হুজুরের কেরামতি বাড়ে!" বাস/রেলওয়েতে ভাল টিকিট পেতেও আজকাল মিষ্টি খাওয়ার টাকা দেওয়া লাগে। আমরা অনেকে নিজেরাই দূর্নিতেকে উৎসাহিত করি, সামান্য কিছু সুবিধা পেতে। তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার, সচেতনতা, বুদ্ধির ব্যবহার আমাদের দূর্নিতিকে কমিয়ে দিতে পারে। সরকারি সেবা দেওয়া হয় যেখানে যে অফিসে সেই অফিসকক্ষ সহ অফিসের চারিদিকে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপন করে তা সার্বক্ষনিক নজরদারি করা প্রয়োজন। এমন ব্যবস্থা করা প্রয়োজন যাতে যেকোন উক্ত সেবাদানকারী অফিসের হালচিত্র যে কোন সময় উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা/সাংবাদিক নির্দিষ্ট অনেক স্থান থেকে দেখতে পারবে। তাহলে তারা দূর্নিতি করার সাহস পাবে না।