উপকূলের ক্যামব্রিজ নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

নাজমুস সাকিব সাদি
Published : 27 April 2016, 08:14 PM
Updated : 27 April 2016, 08:14 PM

নদী মাতৃক উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষদের নানা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত অতিবাহিত করতে হয়। সেই সংগ্রামী সহজ সরল মানুষদের শিক্ষার প্রসারের জন্য ২২ জুন ২০০৬ সালে পথচলা শুরু নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের।

নোয়াখালী জেলা শহর থেকে ৮ কিমি দক্ষিণে ১০০ একরের সবুজ সমারোহের নিরিবিলি নোবিপ্রবি ক্যাম্পাস। দৃষ্টি নান্দনিক প্রাকৃত সৌন্দর্যের কারণে নোয়াখালীর অন্যতম দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি) অন্যতম।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে অন্যান্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মত অবকাঠামোগত উন্নয়ন তেমন একটা না হলেও একাডেমিক দিক দিয়ে বেশ এগিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের পাশাপাশি বহির্বিশ্বেও কর্মরত আছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। এই প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড এম অহিদুজ্জামান বলেন "উন্নত রাষ্ট্র গড়ার মূল চাবিকাঠি হচ্ছে উন্নত বিশ্ববিদ্যালয়। সেই লক্ষে নোবিপ্রবিকে অক্সফোর্ড/ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মত আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় রূপে গরে তোলা হবে"। উল্লেখ্য সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য একনেক থেকে ২৩৮কোটি ৪৮ লক্ষ টাকার প্রকল্প একনেকে অনুমোদন হয়। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩টি অনুষদ ও ১৭টি বিভাগ আছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বাংলাদেশে ও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানানোর জন্য খোলা হয়েছে "বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ" নামক নতুন একটি বিভাগ।

ভৌত স্থাপনার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশদ্বার সংলগ্ন ফাউন্টেন পেন আকৃতির স্মৃতিসৌধ, মুক্তিযুদ্ধ ভাস্কর্য, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি ভাস্কর্য, উপাচার্য ভবন, অডিটোরিয়াম উল্লেখযোগ্য। পাশাপাশি একটি প্রশাসনিক ভবন, দুটি একাডেমিক ভবন, দুটি আবাসিক হল, একটি অতিথিশালা, ৪টি শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ডর্ম। এছাড়াও নির্মাণাধীন অবস্থায় আছে তিনটি হল ও কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী।

শিক্ষার পাশাপাশি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও সমান তালে অংশগ্রহণ করছে নোবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনের উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ করে আসছে। এর মধ্যে প্রতিধ্বনি, ল্যম্পোস্ট, প্রথম আলো বন্ধু-সভা, নোবিপ্রবি ড্রিমবাজ ফিল্ম সোসাইটি, পরিবেশ বিষয়ক সংগঠন কো'এন, নোবিপ্রবি ব্লাড ডোনার সোসাইটি উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও চিলেকোঠা, ডাকটিকেট, বাঙাল সহ বেশ কয়েকটি ব্যান্ডদল রয়েছে নোবিপ্রবিতে।

সবশেষে বলতে গেলে যথাযথ পরিচর্যা পেলে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও প্রযুক্তির বাতি ছড়াবে দেশ ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও।