আর কত ঠকলে মানুষ শিক্ষা নিবে?

সাদী ডিজিটাল
Published : 9 April 2012, 04:17 AM
Updated : 9 April 2012, 04:17 AM

প্রবাদ আছে ন্যাড়া একবারই বেলতলায় যায়। কিন্তু আমাদের বাংলাদেশের কিছু লোভী মানুষ কে দেখে সে প্রবাদটি মিথ্যা মনে হচ্ছে। বাংলাদেশ গরীব-নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তের দেশ। অভাব এখানে সবসময় হানা দেয়। তাই মানুষ একটু সচ্ছলতার আশায় অনেক ঝুঁকি নেয়। তাদের আশা আকাঙ্ক্ষাকে পুঁজি করে আংগুল ফুলে কলাগাছ হয় কিছু অমানুষ।

টাকা আয় করা কোন সহজ কাজ নয়। ব্যবসা করেও মানুষ বছরে তার পুজি কে দ্বিগুন করতে পারেনা। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে রাতদিন পরিশ্রম করে মানুষ টাকা আয় করে।

আর সেখানে যখন তার সামনে একটি অফার আসে যে তুমি ঘরে বসে শুয়ে শুয়ে ঘুমাবা আর ৬ মাস বা এক বছরেই তোমার টাকা দ্বিগুন হয়ে যাবে। একথা শুনলে বেশিরভাগ মানুষই কিন্তু এই অফার টি গ্রহণ করবে। অবশ্য চিন্তুাবুদ্ধিজ্ঞান সম্পন্ন মানুষের কথা ভিন্ন। কিন্তু কিছুদিন পর যখন দেখবে তার ডাবল হওয়া তো দূরের কথা মুল পুঁজিটিও হারিয়েছে। তখন তার অবস্থাটা কি হবে? স্বাভাবিকভাবে পরবর্তীতে যখন নতুন করে আবার অফারটি নিয়ে তার কাছে আসবে তাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে তাড়ানোই উচিত।

কিন্তু আমাদের দেশে হচ্ছে ঠিক তার বিপরীত। একের পর এক নতুন নাম দিয়ে নতুন খোলস পাল্টিয়ে প্রতারকরা আসছে এবং দেশের কোটি কোটি টাকা নিয়ে যাচ্ছে। এমএলএম এর মুলো ঝুলিয়েই তারা এ অপকর্মটি করছে।
প্রথম যখন ইউনিপেটুইউ আসে চট্টগ্রামে দেখেছি হাজার হাজার মানুষ কোটি কোটি টাকা ইনভেষ্ট করেছে। তারপর আসে ভিসারেভ , স্পীকএশিয়া, টিভিআই এক্সপ্রেস সহ বাহারী নামের কোম্পানী। প্রতারকগুলো বিভিন্ন লোভনীয় অফার দিয়ে মানুষের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

বর্তমানে পত্রপত্রিকায় ব্যপক আলোচনার খোরাক ডেস্টিনি। বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরাতন এমএলএম গুলোর মধ্যে ডেস্টিনি। তারা ২০০০ সাল থেকে টিকে আছে একমাত্র তাদের দীর্ঘ মেয়াদী প্লান এর কারণে। সেই ডেস্টিনিও এখন যাবার পথে। গত বিপিএল এর ক্রিকেট এর লোগো স্পন্সর ছিল এ কোম্পানিটি।

এশিয়া কাপ এর সময় বাংলাদেশ ক্রিকেট খেলোয়াড়দের গায়ে যে জার্সি টি দেখেছেন সেখানে একটি কোম্পানীর নাম দেখেছেন NEWAY নিউওয়ে বাংলাদেশের বহু পুরাতন একটি এমএলএম কোম্পানী। ব্যবহার অযোগ্য কিছু হারবাল জিনিস অবিশ্বাস্য বেশি দামে এমএলএম এর মাধ্যমে বিক্রি করাই তাদের কাজ।

তারা বর্তমানে একটি বিশাল অফার নিয়ে মার্কেট থেকে কোটি কোটি টাকা কালেকট করতেছে। চট্টগ্রামে তারাও একবছরে দ্বিগুন করার অফার দিয়ে টাকা নিচ্ছে। ১ লাখ টাকা দিলে এক বছরে ২ লাখ+ টাকা দিবে। তার জন্য তারা ইর্ষ্টাণ ব্যংকের একটি কার্ড ও দিচ্ছে টাকা তোলার জন্য। প্রতি মাসে ১৬৮৫০+ করে তারা বছরে দ্বিগুন দেবে। কিভাবে সম্ভব ? এমন কোন ব্যবসা আছে যে বছরেই দ্বিগুন হয়?

এত কোম্পানীর হাতে প্রতারিত হবার পরো দেখছি লোভী মানুষ গুলো ওই অফিসগুলোতে ভিড় করছে। আর কত ঠকলে মানুষ শিক্ষা নিবে?