স্বামী থাকতেও ওরা বিধবা!

ম, সাহিদ
Published : 12 August 2011, 05:46 PM
Updated : 12 August 2011, 05:46 PM

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কাজিয়াতল গ্রামের রোকেয়া বেগমের স্বামী গত হয়েছে ৭ বছর আগে। যে বয়সে ছেলে মেয়েদের সঙ্গে গল্প করে সময় কাটানোর কথা সেই বয়সে জীবিকার তাগিদে তাকে বেছে নিতে হয়েছে অন্যের বাড়ী যেয়ে ভিক্ষে করার কাজ। বয়স্ক কিংবা বিধবা ভাতা সে না পেলেও প্রতিবেশী আবুল হাশেমের স্ত্রী পারুল বেগম, (৩৮) বিধবা না হয়েও পাচ্ছে বিধবা ভাতা। রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের কমিশন দেয়ার কল্যাণে এটা সম্ভব হয়েছে বলে পারুল বেগম জানালেন শুধু পারুলই নয়, তার মতো অনেকেই বিধবা না হয়েও পাচ্ছেন বিধবা ভাতা। দারোরা ইউনিয়নের কাজিয়াতল গ্রামের আলী আকবরের স্ত্রী সুফিয়া বেগম বিধবা ভাতা পাচ্ছেন দীর্ঘদিন ধরে। স্বামী আলী আকবর একজন কৃষক। বিধবা না হয়েও বিধবা ভাতা প্রাপ্তির বিষয়ে জানান, তিন হাজার টাকার বিনিময়ে মহিলা ইউপি সদস্য রেহানা বেগমের স্বামী মোস্তাফা কামাল এ সুযোগ করে দিয়েছেন। প্রতি কিস্তির টাকা উত্তোলনের পর তাকে ২০০ টাকা করে দিতে হয়। অনিয়মের কথা স্বীকার করলেও টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করেননি মহিলা মেম্বারের স্বামী মোস্তফা কামাল। একই ইউনিয়নের একই গ্রামের হালিম মিয়ার স্ত্রী নাসিমা বেগম(৩৪) বিধবা ভাতা পাচ্ছেন ছয় বছর ধরে। স্বামী বেঁচে থাকা স্বত্বেও মৃত দেখিয়ে ভাতা দেওয়া হচ্ছে। স্বামী হালিম মিয়া একজন কৃষক। নাসিমা বেগম ১৫০০ টাকার বিনিময়ে এ সুযোগ পেয়েছেন। ওই মহিলা মেম্বারের স্বামীর সহায়তায় স্বধবা হয়েও তিনি বিধবা ভাতা পাচ্ছেন বলে জানালেন নাসিমা বেগম। বিগত জোট সরকারের স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও জন প্রতিনিধিদের সীমাহীন অনিয়ম-দূর্নীতির স্বেচ্ছাচারিতার কারণে প্রকৃতরা বিধবা ভাতা না পেলেও শতাধিক সধবা বিধবা ভাতা পাচ্ছেন বলে জানা গেছে। তবে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল কাদের মোক্তার বলেন, বিগত সময়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে আবার অনেক সময় রাজনৈতিক নেতারা টাকার বিনিময়ে অনেকের নাম ভাতায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রওশন আরা বলেন, জনপ্রতিনিধিদের দেয়া তথ্যমতে বিধবা ভাতা দেওয়া হয়। লোকবলের অভাবে তা যাচাই বাছাই করা সম্ভব হয়না। তদন্ত করে অনিয়ম পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেব।