সৌদি নাগরিকের হত্যায় কে বিব্রত – শুধুই সরকার না পুরো বাংলাদেশ?

ম, সাহিদ
Published : 6 March 2012, 03:16 PM
Updated : 6 March 2012, 03:16 PM

যে কোন হত্যা,গুম,ছাত্র সংঘর্ষ কিংবা রাজনৈতিক হতাহত সব কিছুর পেছনেই থাকে সু নির্দিষ্ট কোন পরিকল্পনা। আর তা কখনও ব্যাক্তি থেকে শুরু করে রাজনৈতিক কিংবা বড় ধরনের অর্থনৈতিক লেনদেনের হিসাব নিকাশের ক্ষুব্ধতার বহিঃপ্রকাশ।কিন্তু কিছু ঘটনার প্রভাব দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও হয় সমান আলোচিত,আর সেই হত্যাকাণ্ডটির শিকার যদি কোন বিদেশী হন তবে তো কোন কথাই নেই।তবে একটি খুন মানেই আমাদের জনজীবনে নিয়ে আসে আতংক,নিয়ে আসে নানা প্রশ্ন,নিয়ে আসে যাদের উপর আমাদের জান মালের নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব অর্পিত তাদের কর্মদক্ষতার উপর এক ঝুড়ি প্রশ্ন।

একটি গনতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থায় প্রতিটি নাগরিকের কিছু মৌলিক অধিকারের মধ্যে জান-মালের নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকারটি অন্যতম।কিন্তু আইন শৃংখলা বাহিনির কর্মপদ্ধতি প্রয়োগ করার পাশাপাশি দেশের সকল রাজনৈতিক দল সর্বোপরি সাধারন জনগনের সহযোগিতা মিলেই অধিকারটি যথাযথ জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হবে এটাই স্বাভাবিক।তবে কোন ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং বিচার প্রক্রিয়ায় ব্যর্থতা দেশের ভিতর একক ভাবে আইনশৃংখলা বাহিনী তথা সরকারকেই বহন করতে হয়। আর তাই এই সব স্পর্শ কাতর বিষয় গুলিকে টার্গেট করে কোন চক্রান্তকারী কর্তৃক পরিকল্পিত ঘটনার দায়ভার সরকারের ঘাড়ে চাপিয়ে সরকার বিরোধী জনমত তৈরি করতে রাখে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা।

আর কোন হত্যাকাণ্ড বা অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটার সাথে সাথে আমাদের বিরোধী দল সরকারের সমালোচনা করবে এটাই গনতান্ত্রিক নিয়ম।তবে সরকার কিংবা বিরোধীদল সবার কাছ হতে প্রতিটি বাংলাদেশী নাগরিক তাদের গনতান্ত্রীক অধিকার প্রতিষ্ঠা অথবা রক্ষায় থাকবে সচেতন এটাই প্রত্যাশিত।

ঢাকায় সৌদি আরব দূতাবাসের খালাফ আল আলী নামের ৪৫ বছর বয়সী এক কর্মকর্তা গুলশানে গুলিতে নিহত হয়েছেন।এই সৌদি নাগরিক সে দেশের দূতাবাসে কনস্যুলার বিভাগে কাজ করতেন।"সোমবার রাত ১২টার দিকে গুলশানের ১২০ নম্বর সড়কের ৯/এ নম্বর বাসার সামনে গুলিবিদ্ধ হন খালাফ আল আলী। স্থানীয়রা তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করে এবং সেখানেই মৃত্যুবরন করেন। আর এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া বলেন-

বিদেশিরাও আজ বাংলাদেশে নিরাপদ নয় এই সরকার বেডরুমে নিরাপত্তা দিতে পারছে না, রাস্তাঘাটে নিরাপত্তা দিতে পারছে না, এমনকি বিদেশিদেরও নিরাপত্তা দিতে পারছে না
'এই সরকার বোবা, কালা, অপদার্থ তাদের ক্ষমতায় থাকার আর কোনো নৈতিক অধিকার নেই'

দূতাবাস কর্মকর্তা হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে সরকারে পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি সাংবাদিকদের বলেন-

আমাদের দেশে এই ধরনের একটি ঘটনা অপ্রত্যাশিত, অনাকাঙ্খিত ও দুঃখজনক। সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
এই ঘটনা দুই দেশের সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে কি না- প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "সৌদি সরকারের আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো। এ ঘটনায় তাদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কে কোনো অবনতি ঘটবে না।

হয়ত সৌদির সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কের কোন অবনতি ঘটবে না কিংবা ঘটবে। এখন সরকারের দায়িত্ব হল এই হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের খুজে আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু বিচার করে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা। আর আমাদের সরকার এবং বিরোধীদল প্রতিটি বাঙ্গালীর বৃহৎ স্বার্থে দুটি কথা মাথায় রেখে কথা বলা। মনে রাখতে হবে সৌদি আরবে আমাদের এই বাংলার সবচাইতে বড় শ্রমবাজার আর সরকারকে দোষারোপ করতে গিয়ে পক্ষান্তরে লাখ লাখ বাঙ্গালী শ্রমিকের ভাগ্য নিয়ে যেন ছিনিমিনি খেলায় মত্ত না হয়ে ওঠি।