পা চাটার ইতিকথা: লাল গোলাপ ও বহুমুখী ট্রানজিট উপকারিতা

ম, সাহিদ
Published : 9 April 2012, 07:10 PM
Updated : 9 April 2012, 07:10 PM

বেশ কিছুদিন ধরেই ব্লগে লিখছি না,কারন-অকারনের মাঝে অলসতাই সবচেয়ে বড় কারন তবে তারই সাথে যোগ হয়েছে কিছু বিরক্তি ও ব্যস্ততা। সে যাই হোক শত ব্যস্ততার মাঝেও নিয়মিত প্রতিদিন অন্তত একটি সময় হলেও ব্লগে আসি এবং সত্যি বলতে ইদানিং নিজের লেখা না থাকলেও বেশ কিছু নতুন-পুরাতন ব্লগারের লেখাগুলি পড়ি এবং মনে মনে অত্যন্ত স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি বিডি ব্লগের বর্তমান পোষ্টাধিক্য দেখে। এর মাঝে অবশ্যই ভাল-মন্দ এবং মোটামুটি তিন পর্যায়ের লেখাই আছে তবে আরো উন্নত থেকে উন্নত পোষ্ট আসার প্রথম শর্ত হিসাবে সব লেখাকেই আমি অত্যান্ত গুরুত্বপুর্ন বলেই মনে করি। আর এ ভাবেই এইসব ব্লগারদের থেকেই সৃষ্টি হবে আগামি দিনের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর এবং সাথে এই লেখকরাই রাখবে সমাজ সচেতনতায় অনন্য অবদান এই প্রত্যাশা সকলের।

বছর দেড়েক আগে শখ করে দুটি খরগোশ ছানা কিনে আনলাম পুষব বলে। আনার পরের দিনই একটি পালিয়েছে বাসার সকলের নজর এড়িয়ে। তো একটিকে খুব কড়া নজরদারিতে রেখেই প্রতিপালন করতে লাগলাম। একদিন বাহির হতে বাসায় ফিরে দেখি ঘরের গৃহীনি অর্থাৎ আমার সহধর্মীনি খাঁচা থেকে খরগোশটিকে ছেড়ে দিয়ে পরম মমতায় খাবার খাওয়াচ্ছে,আমি বললাম খাঁচার বাহিরে রাখলে এটা পালিয়ে যাবে। জবাবে সে বলল যে থাকার সে খাঁচা ছাড়াই থাকবে, আর যে যাবার সে খাঁচা ভেঙ্গেই পালাবে। সে যাই হোক এরপর কেটে গেছে প্রায় বছরখানেক, এখন বাসায় ফিরলে সে বুঝে আমি বাসায় ফিরেছি আর তাই দৌড়ে চলে আসে কাছে। কিছু খাবার না দেয়া পর্যন্ত পিছু পিছু হাঁটবে। আবার কখনও পায়ে মুখ ঘষে জানান দিবে আমি তোমার কাছেই আছি। ঘরের গৃহীনির পিছু পিছু নিজ সন্তানের মত লাফিয়ে দৌড়ানো দেখে মাঝে মাঝে আমার রসিকতায় মুচকি হেসে বলে মা না হয় আমি তবে পিতার দায় তোমাকেই নিতে হবে। তার বসবাস আমার শোবার খাটের নিচে, তাই মাঝরাতে যখন বাথরুমে বা কোন কারনে খাট থেকে নামতেই দৌড়ে বের হয়ে আসে। বাথরুম হতে ফিরে অবাক হয়ে দেখি দরজার কাছেই উন্মুখ হয়ে বসে আছে সে,খাটে ওঠবো ঠিক তখনি পা জড়িয়ে ধরে বোঝাতে চায় আমাকে কি তুমি ভুলে গেলে? আমি মনে মনে হাসি আর ভাবি মনিবের মন ভুলিয়ে কি ভাবে নিজের স্বার্থ হাসিল করতে হয় এই প্রানীটি ঠিকই বোঝে। অগ্যতা আবার উঠে কিছু খাবার দিতেই হয়। হায়রে পা চাটার দল…।

গত দুইদিন আগে আমাদের স্বনামধন্য সাংবাদিক এবং বাংলাভিশনের জনপ্রিয়! টকশো "লাল গোলাপের" উপস্থাপক শফিক রেহমানের লেখা কয়েকটি বইয়ের মোড়ক উন্মেচন অনুষ্ঠান হয়ে গেল বেশ জাঁকজমক ভাবেই। অবশ্য নিন্দুকেরা এটাকে বইয়ের মোড়ক উন্মেচন অনুষ্ঠানের আড়ালে দলীয় সভানেত্রীর মনজয়ের মহড়া বলে গুঞ্জন তুলেছে তবে তাতে কি আসে যায়। পাছে লোকে কিছু বলে এ রকম একটি কবিতার লাইন সব ভুলিয়ে এগিয়ে যেতে যথেষ্ট সহায়ক। সে ক্ষেত্রে বর্তমানে বিএনপির সামনের দিনের রাজনৈতিক অবস্থানগত ক্ষমতার স্বপ্নে অনেকেই বেশ আশাপ্রদ মানসিকতায় ফুরফুরে মেজাজে আছেন এটা আর বলতে। আর তাই যে যার যোগ্য পদ-পদবির দাবী নিয়ে যোগ্যতার পরীক্ষায় ব্রতি তা সাধারন যে কেউ একটু খেয়াল করলে দৃষ্টি এড়িয়ে যাবার কথা নয়। ঠিক তেমনি রাষ্ট্রপতি নামক সোনার হরিন ধরতে ইতিমধ্যে যে দু-একজন মোসাহেবীর পথে হাঁটছেন তাদের পদাংক অনুসরন করেই শফিক রেহমানও হাটছে তা আমি বলতে চাই না তবে তার তৈল মর্দনকর্মে সে সম্ভবনা একেবারেই উড়িয়ে দেবার জো নেই নিন্দুকের এমন কথা যথার্থই আলোচনার বিষয় বৈকি।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর.কম এবং অন্যান্য ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার সংবাদ হতে জানতে পারলাম বাচ্চু (আবুল কালাম আজাদ) রাজাকার বর্তমানে ভারতে এবং তার গন্তব্য পাকিস্তানের পথে। আর এই যায়গাটিতে এসেই আমার তালগোল পাকিয়ে বিচ্ছির অবস্থায় পড়তে হল। শফিক রেহমান ঐ অনুষ্ঠানে লাল গোলাপ প্রদানের মহা রোমান্টিক কর্মের ফাকে একটি উপদেশ দিয়ে বলেছেন আমাদের মাননীয় প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা যেন আমেরিকা বা ভারতে প্রস্থান করার মানষিক প্রস্তুতি রাখতে ভুল না করেন। ট্রানজিট নিয়ে কত কথা শুনলাম বেশ কিছুদিন ধরেই এখন দেখি রাজাকার থেকে শুরু করে খোদ বঙ্গবন্ধু কন্যাকেও সে ভারতের বুক চিরা একই ট্রানজিট ব্যবহার করতে হবে শেষমেশ এটা ভেবেই যত গণ্ডগোল।

ভাবি আর মনে মনে বলি,হায় আমার দুর্ভাগা কপাল!মাঝ রাতব্দি কম্পিউটার স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে নিউজপ্রিন্ট কাগজের বড় অক্ষর গুলি যেমন তেমন ছোট অক্ষরের মাঝে কুয়াশার চাদর ছাড়া আর কিছু দেখতে পাইনা। অগ্যতা চক্ষু বিশারদের স্বরনাপন্ন হয়ে পুরোকাচের ঠুলি পড়ে বেরুতে গিয়ে প্রথম ধাক্কায় ড্রেসিং টেবিলের আয়নায় নিজেকে কেমন অচেনা-অচেনা মনে হল। তার পর দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে অজান্তেই মন বলে চারিপাশে অনেক কিছুই তো অচেনা লাগে এখন না হয় নিজেকেও একটু লাগছে তাতে কী এমন ক্ষতি……।

ছবি-নিজ এবং ইন্টারনেট।