পবিত্র হজ্ব পালনেচ্ছুকগণ: জেনে নিন-১

সাইফ ভূঁইয়া
Published : 26 May 2011, 10:46 AM
Updated : 26 May 2011, 10:46 AM

এরই মধ্যে সরকারি এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় অনেকেই পবিত্র হজ্বব্রত পালনের নিয়ত করে বিভিন্ন প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রেখেছেন অথবা করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ থেকে আগত অধিকাংশ হাজি নানা ভোগান্তি ও কষ্টের মধ্য দিয়ে একসময় জেদ্দা এয়ারপোর্টে এসে পড়েন। হজ্ব ফ্লাইটের অব্যবস্থাপনা ও ফ্লাইট স্বল্পতার কারণে অপেক্ষমাণ হাজিদের দুর্গতির সীমা থাকে না বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই।

আমাদের দেশে হজ্ব পালনেচ্ছুকদের মধ্যে অপেক্ষাকৃত বেশি বয়স্ক আর দুর্বলদেহী মানুষের সংখ্যাই বেশি। আমি একমাত্র ভারত,পাকিস্তান আর বাংলাদেশীদের নানান দুরাবস্থায় পড়তে দেখেছি ; বিশেষ করে যারা বয়সের ভারে ন্যুব্জ,যারা ইনস্যুলিন নির্ভর, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, হাড় ক্ষয় এবং অন্যান্য জটিল রোগে ভুগছেন তাঁরাও আসছেন। যারা পরিশ্রমী নন অথবা কায়িক শ্রমে যথেষ্ট অভ্যস্ত নন তাঁরা কিন্তু বিপদে পড়ে যাবেন – এ কথা বলাই বাহুল্য।

প্রথমেই দেখে নিন আপনাকে হজ্ব-ভিসার (সৌদি আরবের মন্ত্রণালয় কর্তৃক ইস্যুকৃত) মূল কপি দেয়া হয়েছে কী না। লেমিনেটিং করে তা গলায় ঝুলিয়ে নেবেন। এ ছাড়াও আপনাকে বেশ কিছু ডিজিটযুক্ত একটি হ্যান্ড-ব্যান্ড দেয়া হবে (আপনার আইডি'র কম্পিউটার কোড) ; সেটি হাতে পরে নিন। গলায় সব সময় ঝুলিয়ে রাখার মতো একটি ট্রাভেল-ব্যাগ নিতে ভুলবেন না।

মক্কা ও মদিনার যে কোনো হোটেলেই থাকুন না কেন, আপনার আয়োজক, মোয়াল্লেম এর বিজনেস কার্ড / মোবাইল নাম্বার সাথে রাখবেন। তাঁরা দূরে গেলে বা হারিয়ে গেলেও সহায়তার প্রয়োজনে আপনি তাদের কাছে সমস্যা জানাতে পারবেন। ফলে তারা আপনাকে যথাযথ দিকনির্দেশনা দিতে ও দরকারি সহযোগিতা করতে পারবেন।

মক্কায় পৌঁছেই আপনি ধাক্কা খাবেন। কেন না চুক্তি মোতাবেক হয়তো তাঁরা আপনাকে হারাম শরীফের ৫০০ মিটারের মধ্যে আবাসিক হোটেল দেবে বলেছিল, আপনি পেলেন ২ কিলোমিটার দূরে! অতএব পদব্রজ! অথবা দূরে কোথাও(অধিকাংশ হাজিদের আজিজিয়া নামক স্থানে থাকতে হবে); আপনাকে আসতে যেতে হবে হোটেলগুলোর নিজস্ব পরিবহন কিংবা ব্যক্তিগত ব্যবস্থায়।

বাংলাদেশীদের (সরকারি কিংবা বেসরকারি, যে প্যাকেজই হোক না কেন) রাখবে নিম্নশ্রেণীর হোটেলে গাদাগাদি করে। ক্লান্ত, ক্ষুধার্ত আপনার জন্য যে খাবার দেয়া হবে তা দেখে আবারও আপনি ভিরমি খাবেন! খাবার অযোগ্য বার্মিজ রুই মাছ, বিশ্ববিদ্যালয় হল ক্যান্টিন-মার্কা ডাল কিংবা ফার্ম চিকেন। মুখে দিতে পারবেন না। এটি কিন্তু গ্যারান্টেড!

এ সময় চাই অফুরন্ত প্রাণশক্তি আর উদ্দাম। অতএব প্রস্তুতি নিয়ে রাখুন, এই দীর্ঘ সময় আপনাকে হয়তো আধপেটা থাকতে হবে অথবা বিশাল লাইনে দাঁড়িয়ে অ্যারাবিয়ান ফুড কিনতে হবে। আপনাকে আয়োজকরা বোঝাবে, খেতে আসেননি ; এসেছেন আখেরাতের ফায়দা হাসিল করতে!

পটে যান, চুপ থাকেন, সেটিই বোধহয় বেটার।

(চলবে)