প্রসঙ্গ: রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ

সাইফুল আলমসাইফুল আলম
Published : 12 July 2012, 04:11 AM
Updated : 12 July 2012, 04:11 AM

যে কোন ইস্যুতেই আমরা আমাদের প্রধান দুই বিরোধী দলের মতো দুইভাগ হয়ে পড়ি আমাদের সবচেয়ে বড় যে অর্জন আমাদের গর্ব আমাদের স্বাধীনতার সময় ও জাতি হিসেবে আমরা এক হতে পারিনি, জাতি হিসিবে এটা আমাদের সবচেয়ে বড় দুর্ভাগ্য৤ তেমনি সাম্প্রতিক কালে যদি পদ্মা সেতু প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা করতে যাই সেখানে দেখা যাবে সরকার দল এবং বিরোধীদল দুধরনের অবস্থান নিয়ে আছে ৤ তেমনি আমাদের আরো একট সমস্যা রেহিঙ্গা সমস্যা রেহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ নিয়ে আমরা দুভাগ হয়ে পড়েছি, সরকার অনুপ্রবেশের বিপক্ষে কঠোর অবস্থান নিয়েছে ৤ আবার অনেকেই বলছেন মানবিক দিক বিবেচনা করে তাদের আশ্রয় দেয়ার কথা , আর্ন্তজাতিক সম্প্রাদায় রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ করতে দিতে সরকারকে স্পষ্টত চাপ দিলেও সরকার তার অবস্থানে অনড় ৤কারন, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ এবং এ সংকান্ত আমাদের অভিগ্গতা খুব একটা সুখকর নয় ৤তারাতো কোন বহি: শত্রুর আক্রমনের শিকার হয়ে দেশ ছাড়ছেনা, ছাড়ছে নিজেদের জাতিগত দাঙ্গার কারনে তাহলে আর্ন্তজাতিক সম্প্রাদায় মায়ানমারকে চাপ না দিয়ে আমদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে কেন? ,সবার উচিত তাদের সে সমস্যা মেটানো সে জন্য মায়ানমার কে চাপ দেয়া৤
সামন্য সময়ের জন্য আমরা তাদের আশ্রয় দিলে যদি তারা আবার ফেরত যাবে এরকম নিশ্চয়তা থাকতো তাহলে আমরা হয়তো তাদের আশ্রয় দিতে কোন সমস্যা থাকার কথা না৤ কিন্তু, অতীতে আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছি কিন্তু তারা ফেরত যায়নি৤ এখন যারা আমাদের উপর চাপ দিচ্ছে তারা মুখবুঝে থেকেছেন ৤ সর্বপ্রথম বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ শরু হয় 1978 সালে ৤তারপর অনেক দিন বন্ধ থাকার পর দ্বিতীয় দফা 1991-92 সালে আরও একদফা অনুপ্রবেশ ঘটে রোহিঙ্গাদের৤ 1995 সালে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পর রোহিঙ্গাদের পত্যাবর্তন শুরু হলেও সেটা আবার বন্ধ হয়ে যায় 2005 সালে ,এরপর থেকে তারা দেশের অভ্যন্তরে জড়িয়ে পড়ে মাদক ব্যবসা অস্র ব্যবসা সহ বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসায়,তা ছাড়া বাংলাদেশী নাগরিক হিসেবে তালিকা ভুক্ত ও হয়ে যায় অনেক রোহিঙ্গা চেহারা ,গঠন,ভাষাগত কারনে বাংঙ্গালী আর রোহিঙ্গা সহজে আলাদা করা যায়না ৤ আর এ সুযোগটা নিয়ে তাদের অনেকেই তাদের এসব অবৈধ কমৃকান্ড চালিয়ে যাচ্ছ,শুধু মাএ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে তাদের এ কর্মকান্ড সীমাবদ্ধ থাকেনি৤ বাংলাদেশের পাসর্পোট নিয়ে মধ্যপ্রাচ্ছে গিয়ে সেখানেও বাংলাদেশের সুনাম নষ্ট করছে ,আর সেটা আমরা কেন চুপচাপ মেনে নেবো ,এমনিতে আমারা নিজেদের জনসংখ্যার আধিক্যের সমস্যায় ভুগছি ,আমদের জনশক্তি রপ্তানির জন্য আমাদের সরকার প্রধান থেকে আরম্ভ করে সংশিল্ঠ সবাই যে ব্যাপক ভাবে ভুমিকা রাখার চেষ্ঠা করছে সেখানে তাদের অভ্যন্তরীন সমস্যার দায়ভার আমরা কেন নেবো ,রোহিঙ্গা শরনার্থীদের মাধ্যমে এ দেশে আরও একটা জিনিষের অনুপ্রবেশ ঘটে সেটা হচ্ছে ভয়াভহ মাদক ইয়াবা ৤ যার ছোবলে সারাদেশের যুবশক্তি আজ জর্জরিত এখনও এই ব্যবসার বিস্তার তাদের মাধ্যমে ঘটছে৤
1948 সালৈ মিয়নমার স্বাধীনতা অর্জন করে সেসময় তাদের পার্লামেন্টে রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধিত্ব ছিলো কিন্ত সেনা বাহিনী যখন 1962 সালে ক্ষমতা দখল করে তখন থেকে ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত হতে থাকে৤ রোহিঙ্গারা তখন থেকে নিগৃহীত হতে শুরু করে ,সামরিক সরকার তাদের বিদেশী হিসেবে চিন্হিত করে ,তাদের উপর বিধি নিষেধ আরোপ করে তাদের সম্পতি কেডে নেয়া হয় ,তাদের নারীরা রাষ্ট্রীয় কাঠামো অনুমোদিত ধর্ষনের শিকার হয় ৤ তাদের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে তাদের শিকড উপডে ফেলা হয় ,তাদের মায়ানমারের নাগরিক হিসেবে গন্য করা হয়না ,তবে ইতিহাস থেকে আমরা জানতে পারি যে 1784 সাল পযর্ন্ত তাদের ও নিজস্ব স্বাধীন রাজ্য ছিলো যেটার আয়তন ছিলো 22000 বর্গমাইল মিয়ানমারের রাজা বোদাওয়াফা এ রাজ্য দখল করার পর তাদের সে ইতিহাস বদলে যেতে থাকে ,শেষে ব্রিটিশরা যখন এ এলাকা আধ্যিপত্য বিস্তার করে তখন তারা মিয়ানমারের 139 টি ক্ষুদ্র জাতি গোষ্টির তালিকা প্রস্তুত করে যাদের মধ্যে বাদ পড়ে যায় রোহিঙ্গারা ৤এভাবে ইতিহাসের পাতা থেকে তাদের মুছে ফেলা শেষ চেষ্ঠা হিসেবে, সামরিক সরকার তাদের উপর নিপিড়ন চালাতে শুরু করে ৤ সর্বশেষ , ধর্মীয় দাঙ্গার আড়ালে তাদের কে তাদের ভিটে মাটি থেকে উচ্ছেদ করা হয় ৤ অথচ ,আন্তজার্তিক সম্প্রদায় তখন নাকে তেল দিয়ে ঘুমিয়ে ছিলো ,আর আমরা যখনই বললাম আমরা ও আর পারছিনা অন্যদের অনর্থক বোঝা আমরা আর কতদিন বইবো ৤ তখন সজাগ হলো মানবাধিকার সংস্থাগুলো ,অথচ রোহিঙ্গাদের মসজিদ মাদ্রাসা গুলো ভেংগে গেছে যে গুলো সে গুলো সংস্কার করতে দেয়া হচ্ছেনা ,তাদের স্বাধীন ভাবে ধর্ম পালন করতে দেয়া হচ্ছেনা ,এসব যেন মানবাধিকার সংস্থা গুলোর চোখে পড়েনা এ যেন মামা বাড়ির আবদার ,আমাদের কে কেন এ সমস্যার দায়ভঅর একা বহন করতে হবে শুধুমাএ মুসলিম রাষ্ট্র বলে ৤ আমেরিকা এখন মায়নমারের ঘনিষ্ঠ মিএ ,আর মিয়ানমারে বইতে শুরু করেছে গনতন্ত্র ,অংসসান সুচি এখন তাদের জাতীয় নেত্রী ,দাতারা তাদের সদিচ্ছা থাকলে এখনই উপযুক্ত সময় রোহিঙ্গাদের সস্বীকৃতি দেয়ার ,সে ব্যাপরে কোন ভুমিকা না নিয়ে আমাদের ঘাড়ে কেন চাপানোর চেষ্ঠা শুধু বাংলাদেশের ক্যাম্পগুলোতে খাবার সালাইন বিলির ছবি প্রচার করে আর্ন্তজাতিক সম্প্রদায়কে দেখানোর ট্রেডিশান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে এনজিও গুলোকেও ৤
কতটুকু বাধ্য হলে একজন মানূষ তার ভিটে মাটি ছেড়ে পরবাসে আশ্রয় প্রার্থনা করতে পারে সেটা আমরা 1971 সালেই অনুধাবন করতে পেরেছি ৤ ভারত আমাদের আশ্রয় নাদিলে আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাস অন্যরকম হতে পারতো ,কিন্তু আমরা তখন বহিশত্রুর আক্রমনের শিকার হয়ে সেখানে আশ্রয় গ্রহন করেছি এবং স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসাবে সেখানে থেকে আমরা ফিরে ও এসেছি ৤ কিন্তু রোহিঙ্গা শরর্নার্থীরা ফেরত যায়নি ,তাদের মিছিল দিনকে দিন বেড়ে চলছে,সরকারী হিসেবে টেকনাফের নয়া পাড়া ও উখিয়া কুতুবপালং শরনার্থী ক্যাম্পে বৈধ রোহিঙ্গা আছেন 23 হাজার 957জন লেদা রোহিঙ্গা বস্তিতে 10 হাজার অনিবন্ধিত রোহিঙ্গার বসবার উখিয়া কুতুবপালং সহ ভেধ অবৈধ মিলে রোহিঙ্গাদের বর্তমান সংখ্যা প্রায় তিন লাখের ও অধিক ৤ এই চাপ আমাদের পক্ষে সামলানো অসম্ভব৤তাই,আন্তজাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আমাদেরকেই আকর্ষন করতে হবে যাতে করে সবাই মিলে মায়ানমারের উপর চাপ সৃষ্টি করে তাদের আভ্যন্তরীন এ সমস্যা তারাই সামলায় ,পাশ্ববর্তীদেশ হিসেবে আমরা কেলল সহযোগীতা করতে পারি আমাদের সরকার ঠিক পথেই আছে ,অহরহ যেভাবে অনুপ্রবেশ ঘটছে রোহিঙ্গাদের তা এখনি শক্ত হাতে প্রতিহত করতে না পারলে এ সমস্যা থেকে আমাদের কোন দিন ও মুক্তি মিলবেনা ৤