চোর তো চোরই, সে সিঁধেল চোর হোক আর আন্তজেলা চোরের সর্দারই হোক। সব পেশার মতো চৌর্য্যবৃত্তির পরিধিও ব্যাপকতা লাভ করেছে। চুরি এখন রীতিমতো শিল্প, পর্যটন শিল্প কিংবা মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রি- এরা সর্বত্রই বিরাজমান।
কপি, কাট, আর পেস্ট, একজনেরটা থেকে করলে সেটা চুরি আর কয়েক জনেরটা মিলিয়ে করলে সেটা গবেষণা। আর সেই গবেষণাকর্ম খোদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচজন সম্মানিত শিক্ষক করেছেন তাদের রিচার্স পেপারে! সব যখন গুগলেই পাওয়া যায় তো তারা শুধু শুধু পন্ডশ্রম করবেন কেন? অন্যেরটা মেরে দিয়ে নিজের বলে চালিয়ে দিতে চেয়েছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয় এর শিক্ষক, তাও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ভাবা যায়!! মৌলিকত্ব আর সৃজনশীলতা কোথায় গিয়ে ঠেকেছে? ট্যুরিজম এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের পাঁচ জন শিক্ষক একই সাথে এই অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত হলেন।
সু চিকে নোবেল প্রাইজ দিয়ে নোবেল কমিটি যে ভুলটা করেছে ওনাদের ললাট লিখন অতটা সৌভাগ্যে বহন করে আনেনি বলে গলায় ডক্টরেট ডিগ্রিটা আর ঝোলাতে পারলেন না। তার আগেই গোমর ফাঁস। নকল করে পাশ করা কিংবা জাল সার্টিফিকেটধারী একজন শিক্ষক মানুষ গড়ার কারিগর হলে সেই মানবিকতা অাসলেই অমানবিকতার চেয়েও নির্মম হয়ে যায়।
সম্মানিত শিক্ষকদের নিজেরাই তাদের পদত্যাগ পত্র জমা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় এর আঙিনা ত্যাগ করা উচিত।
আইরিন সুলতানা বলেছেনঃ
আমস্তরের অনলাইন লেখকদের অনেককে ‘উইকিপিডিয়া’ থেকে হুবহু যুক্ত করে লেখা বানিয়ে ফেলতে দেখা যায়। অনেকে সূত্র হিসেবে উইকিপিডিয়াকে কৃতিত্বও দিতে পিছুপা হন না।
এক আম লেখক অন্য আম লেখকের লেখা থেকেও মেরেকেটে দিচ্ছেন হরহামেশা।
আর ফেসবুকের ঘাড়ে চেপে রয়েছে ’কালেক্টেড’ ভুত!
এই যখন আমাদের লেখক ও গবেষক হয়ে ওঠার হতদরিদ্র চর্চা, তখন কোনোভাবে ফুকো পাঠ করে ফেলা একজন আপন পাণ্ডিত্যে মগ্ন হয়ে বাকীদের তাচ্ছিল্যজ্ঞান করে ভাবতেই পারেন – কে আর বুঝবে! ওরা তো উইকিপিডিয়া পাতার নীচে থাকা মূল লিংকগুলোই খুলে দেখে না, ফুকো কি খুলে-পড়ে দেখবে!
ফারদিন ফেরদৌস বলেছেনঃ
আমি কিন্তু দলদাস মূর্খ্য এই শিক্ষকদের পদোন্নতি ও ডকটোরেট সবই একসাথে দেখতে পাচ্ছি। এই দেশ তস্কর আর বেহায়াদের। ওরাই এগিয়ে থাকবে। ওদের শিষ্যরাও এগিয়ে থাকবে।
দিলীপ টমাস রোজারিও বলেছেনঃ
হেন অনৈতিক কাজ কোন শিক্ষকের পক্ষেই করা উচিৎ নয়। এমন কাজ করার চেয়ে মৃত্যুকে অধিকতর গ্রহনীয় মনে করা উচিৎ তাদের। যে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করার সুযোগ পাবার জন্য বরাবরই নিজেকে সৌভাগ্যবা ভেবে এসেছি, সে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ এ ধরণের হীন কাজ করাতে আরও বেশী মাত্রায় কষ্ট পেয়েছি।
যেসব শিক্ষক নামের কলঙ্করা এ ধরণের কাজ করতে দ্বিধা বোধ করেননি, তাদের কাছ থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ প্রত্যাশা করা যায় না। তাই কৃর্তৃপক্ষের নিকট জোর অনুরোধ থাকবে, তাদেরকে যেন তাৎক্ষণিকভাবে সাময়িক বরখাস্ত এবং সম্ভব সর্বাপেক্ষা কম সময়ের মধ্যে একটি ন্যায্য তদন্ত করে তদন্তের ফল অনুসারে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়।
ন্যায্য তদন্তের মাধ্যমে পুরোপুরি নির্দোষ প্রমানিত হবার আগে যেন তাদেরকে কোন অবস্থাতেই শিক্ষাদান করতে দেয়া না হয়। তারা এ কাজ করে শিক্ষাদানের নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন।
এহছান খান বলেছেনঃ
ঢাবিতে এখন ‘কপি অ্যান্ড পেস্ট কালচারাল টেকনোলজি’ বিভাগ চালু এখন সময়ের দাবি