মামলার জটে বেরোবির সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ!

সজীব হোসাইন
Published : 6 Oct 2016, 07:50 PM
Updated : 6 Oct 2016, 07:50 PM

মামলার জটে দীর্ঘদিন ধরে আটকে আছে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ। বর্তমানে বিভাগটিতে পাঁচটি ব্যাচের ২৬০ জন শিক্ষার্থীর পাঠদানের জন্য রয়েছে চার জন শিক্ষক। এর মধ্যে একজন আছেন শিক্ষা ছুটিতে। এতে যেমন ব্যাহত হচ্ছে বিভাগটির শিক্ষা কার্যক্রম তেমনি শিক্ষার্থীরা পড়ছেন ভয়াবহ সেশনজটের কবলে।

বিভাগ সূত্র জানায়, ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ। পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ না দিয়েই ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিভাগটির ভর্তি কার্যক্রম শুরু করা হয়।বিভাগটিতে বর্তমানে চারজন শিক্ষক থাকলেও গত ১ মার্চ থেকে একজন শিক্ষক শিক্ষা ছুটিতে যান। ফলে তিনজন শিক্ষক দিয়েই চলছে পাঁচটি ব্যাচের ২৬০ জন শিক্ষার্থীর পাঠদান।

বিভাগটির শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে জানান, ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হওয়া বিভাগটির প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ইতোমধ্যে স্নাতক সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও তারা এখনো রয়েছেন চতুর্থ বর্ষেই। সেশনজটের প্রভাব পড়ছে অপর চারটি ব্যাচেও। দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষার্থীদের চতুর্থ বর্ষে থাকার কথা থাকলেও তারা রয়েছেন এখনো তৃতীয় বর্ষেই। সেশনজট নিরসনে বিভিন্ন সময়ে বিভাগের নতুন শিক্ষক চেয়ে উপাচার্যকে একাধিকবার জানালেও মামলার কারণ দেখিয়ে নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ বিভাগটির শিক্ষার্থীদের।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্র জানায়, সর্বশেষ ২০১২ সালের ১৩ জানুয়ারি বিভাগটির নিয়োগ বোর্ড অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ বোর্ড কর্তৃক তিন জনকে মনোনীত করে নিয়োগের সুপারিশ করা হয় এবং তিন জনের প্যানেল রাখা হয়। কিন্তু সুপারিশকৃতদের মধ্যে প্রথম জন যোগদান না করায় সিন্ডিকেট প্যানেলে থাকা প্রথম জনকে অযোগ্য দেখিয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ব্যক্তিকে নিয়োগ দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্যানেলের প্রথম স্থানে থাকা মাহমুদুল হকের করা রিটের কারনে ২০১৪ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট ওই শিক্ষক পদের নিয়োগ তিনমাসের জন্য বন্ধ ও আবেদনকারীর জন্য সংরক্ষণ করার আদেশ দিয়েছেন। ফলে বিভাগটির শিক্ষক নিয়োগ জটিলতা দেখা দেয়। কিন্তু ঘটনার পর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ব্যাপারে কার্যকর কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় এই জটিলতার নিরসন হচ্ছে না। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ কে এম নূর-উন-নবী দীর্ঘদিন বিভাগটির সভাপতি পদে দায়িত্বে থাকলেও নিয়োগ জটিলতা নিরসনে নেননি কোনো কার্যকরী উদ্যোগ।

কথা বললে বিভাগটির সভাপতি ড. নজরুল ইসলাম বলেন, নতুন শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে উপাচার্যকে বিভিন্ন সময়ে একাধিকবার বিভাগের শিক্ষকেরা জানিয়েছেন। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই তিনি মামলার জটিলতা নিরসন করে নতুন শিক্ষক নিয়োগের আশ্বাস দিয়ে আসছেন।

ডিসেম্বর নতুন আরও একটি ব্যাচ যুক্ত হলে তিন জন শিক্ষক নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যহত সম্ভব হবে না বলেও জানান তিনি।

এ ব্যাপারে কথা বললে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ কে এম নূর-উন-নবী বিষয়টি নিয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।