এ শহরের জলবদ্ধতায় আমিও দোষী

মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান
Published : 6 July 2017, 05:52 PM
Updated : 6 July 2017, 05:52 PM

প্রতি বছর বর্ষার সিজনে আমরা জলাবদ্ধতা নিয়ে খুব সমস্যায় পরে যাই। আমরা নানা জনে নানা ভোগান্তির মন্তব্য করে থাকি এ জলাবদ্ধতা নিয়ে। আসলেই কি বর্ষাকালের এ জলাবদ্ধতা দূর করা সম্ভব? বাংলাদেশ ভাটি অঞ্চলের দেশ তাই এ বর্ষার সময়ে উজানের পানির কারনে এ দেশের সকল প্রকারের জলাধার ফুলে ফেঁপে উঠবেই। তার সাথে যদি অবিরাম ধারায় বৃষ্টি শুরু হয় তাহলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি যেমন হবে তেমনি যে কোন প্রকারের চেষ্টাতে কখনই এ জলাবদ্ধতার সমস্যা দূর করা সম্ভব নয়। এ সময়ে নদি নালা খাল বিলে পানিতে পূর্ণ থাকে বলে বাড়তি পানি ধারণের জায়গা না থাকাতে জলাবদ্ধতা হবেই।

বর্ষা ছাড়া বছরের অন্য সময়ের জলাবদ্ধতার সমস্যা আবার অন্য কারনে। বাংলাদেশের থেকে প্রায় ৫২ গুণ বড় দেশ অস্ট্রেলিয়ায় যেখানে ২.৪৫ কোটি মানুষের বসবাস সেখানে খোদ ঢাকাতেই বসবাস ২ কোটি লোকের। আরও বলতে গেলে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরের আয়তন ১২৩৬৭ বর্গ কিঃমিঃ যার জনসংখ্যা মাত্র ৫০ লক্ষ, ঢাকার আয়তন মাত্র ৩০৬ বর্গ কিঃমিঃ কিন্তু জনসংখ্যা ২ কোটি! সে হিসেবে এখনো ঢাকা শহর টিকে থাকাটা আসলেই আল্লাহ্‌র আশীর্বাদ। মাঝে মাঝে মনে হয় এ শহরের সকল বাসিন্দা একসাথে টয়লেট ব্যবহারে গেলে সম্পূর্ণ পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙ্গে পরবে। এত অল্প সামর্থ্য নিয়ে এত বৃহৎ সংখ্যক বাসিন্দার সেবা নিশ্চিত কিন্তু সহজ কথা নয়। তারপরেও আমরা এ শহরে বেঁচে আছি। আমরা ২ কোটি শহরবাসী যদি সচেতন হতাম এবং নগর পিতারা সন্তানদের জন্য প্রয়োজনীয় দায়িত্বটুকু পালন করত তাহলে কিন্তু সত্যি সত্যি আমরা অস্ট্রেলিয়ার চাইতেও বেশি দক্ষতার পরিচয় দিতে পারতাম। আমরা আমাদের হাতের বোতলটি, পলিথিন ব্যাগটি, ফলের খোসাটি সহ চলন্ত অবস্থায় সকল আবর্জনাই পথের মাঝে ফেলে দিয়ে চলে যাই। এরপর আমরা কেউই আমাদের দায়িত্বটুকু পালন না করে অন্যের আশায় বসে থাকি। ফলে আমরা ২ কোটি অসচেতন মানুষ নিজেদের আবর্জনায় নিজেরাই পানিবন্দী হয়ে থাকি। থাকছি।