বন্যায় ভীতি না ছড়িয়ে অভিজ্ঞতা কাজে লাগান

মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান
Published : 16 August 2017, 07:58 PM
Updated : 16 August 2017, 07:58 PM

পরিবারে যখন প্রথম সন্তান জন্ম নেয় তখন নতুন বাবা মায়ের অনেক কিছু শেখার থাকে। অনেক রকম ভুল অজানা ভয়ের মাঝে দিয়ে প্রথম সন্তান জন্ম নিলেও এর পরের প্রতিটি নতুন জন্ম নেওয়া সন্তানের জন্য সেই বাবা মায়ের ভুল এবং ভয়ের পরিমান যেমন কমে যায় তার সাথে সাথে প্রথম সন্তানের চাইতে তৃতীয় সন্তান জন্মর সময় প্রস্তুতিও থাকে অনেক বেশী। ফলে দুর্ঘটনা সহ যে কোন প্রকারের ক্ষতির মাত্রা স্বাভাবিক ভাবেই কমে আসে।

বাংলাদেশ ভাটি অঞ্চলের দেশ। এ অঞ্চলের বেশির ভাগ সৃষ্টিই হয়েছে হাজার হাজার বছর ধরে উজানের ঢলের সাথে পলি এসে জমতে জমতে। যে প্রক্রিয়া এখনো চলমান এবং এর উদাহরণ হিসেবে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেগে ওঠা নতুন ভূ-অঞ্চলের কথা আমরা বলতে পারি। ভূ-অঞ্চলের অবস্থান গত কারনে এ দেশে প্রতি বছর ছোট বড় বন্যা হয়েই থাকে। যা অনেকটা বাবা মায়ের তৃতীয় বা তারও পরের সন্তান জন্ম নেবার মত ঘটনা।

শুধু যে বন্যা আমাদের দেশের নিত্য সঙ্গী তাও কিন্তু নয়। এর সাথে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসও আমাদের আবহাওয়ার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। যেমন গত এক শতকে উল্লেখ করার মত ২২টি বড় আকারের বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে এ দেশ। এর মধ্যে উল্লেখ যোগ্য ১৯৮৮ সালের বন্যায় দেশের প্রায় ৮২,০০০ বর্গ কিঃমিঃ এলাকা প্লাবিত হয়েছিল এবং ১৯৯৮ সালে দেশের প্রায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার বর্গ কিঃমিঃ প্লাবিত হয়েও ৮৮ সালের মত ক্ষতি হয়নি। অন্যদিকে ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে যেখানে ১,৩৮,০০০ মানুষের প্রাণ যায় সেখানে একই মাত্রার ঘূর্ণিঝড়ে ২০০৭ সালে সিডরে মারা যায় মাত্র ২২১৭ জন। একমাত্র কারন হল দুর্যোগের সময় আমাদের পূর্ব অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো।

এমন পরিস্থিতিতে এ বছরের বন্যার পূর্বাভাস যে একটু অস্বস্তিতে ফেলেছে সেটা অস্বীকার করা যায় না। কিন্তু দেশের সরকার সহ সাধারণ জনগণের পূর্ব সন্তানের জন্মের অভিজ্ঞতায় প্রতি বছর একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্যার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে রাখা উচিৎ বলেই মনে করি। আমরা এখন এমন পরিস্থিতিতে অভিজ্ঞ। তাই ভিতি না ছড়িয়ে পূর্ব অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সকল প্রস্তুতি সহ মোকাবেলা করাই বুদ্ধিমানের। ফলে প্রাণহানি সহ যে কোন প্রকারের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক কমে যাবে।