শুধু ব্লু হোয়েল নয়, আসুন একটু গভীরে তাকাই

সাকিব জামাল
Published : 10 Oct 2017, 05:57 AM
Updated : 10 Oct 2017, 05:57 AM

বয়োঃসন্ধিকালীন সময়ে কিশোর-কিশোরীরা একাকীত্বে ভোগে, নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে ভীষণ বেগ পায় এবং অনেক সময় নিজেকে অপ্রয়োজনীয়ও মনে করে । এই সময়টিতে তাদের বখে যাবার ঝুকিও তাই সবচেয়ে বেশি । অথচ এই সময়টিতেই বাবা-মা এবং অগ্রজ ভাই- বোনেরা কারনে-অকারনে দুরত্ব বজায় রাখেন। আর অভিভাবকদের এই কাজটি বা এই অনুশীলনটি কিছু কিশোর-কিশোরীর জন্য বয়ে আনে দুঃসময়। পড়াশোনায় অমনযোগিতা, প্রেমে পরে ব্যর্থ হওয়া, মাদকাসক্ত হওয়া, স্মার্ট ফোনে বন্দী হয়ে পরা ইত্যাদি অঘটনগুলো এ সময়ই ঘটে।

এখন মূল কথায় আসি। সাম্প্রতিক ব্লু হোয়েল গেমটি আলোচনায় এসেছে আত্মহত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে। সবাই ফেসবুকে এই গেমটির খারাপ দিক তুলে ধরছেন ।অবশ্যই সচেতনা বাড়াতে এটি শুভ উদ্যোগ। তবে কথা থেকে যায়…আসলে, মূল বিষয়টি হলো মানসিক সক্ষমতা। আপনি হয়ত জানেন, ব্লু হোয়েল গেমটির উদ্ভাবকও একজন পড়াশুনা থেকে ঝরে পড়া নিঃসঙ্গ তরুণ। সে মনোবিজ্ঞানের ছাত্রও ছিলো। সুতরাং তার তৈরি করা গেমটির লক্ষ ছিলো তার মত কিশোর-কিশোরীরাই !

কেন? তার কাছেও এই বয়সটিতে অভিযোজনের সক্ষমতার অভাব ছিলো। তাই এই বয়সী সবাইকে – যারা নিঃসঙ্গ এবং আত্মহত্যা প্রবণ এদেরকে আকৃষ্ট করে মুত্যুর মাধ্যমে এই বয়সেই জীবনের সমাপ্তি ঘটানো তার গেমপ্লান! সুতরাং, এটা স্পষ্ট – শুধুমাত্র মানসিক সক্ষমতা বৃদ্ধিই হতে পারে এই বয়সের কিশোর-কিশোরীদের রক্ষা করার উপায়। আর এটি কে করবেন?

হ্যাঁ, লেখার শুরুর দিকেই বলেছি, বাবা-মা এবং অগ্রজ ভাই-বোন, এমনকি কাছের আত্মীয় সজ্বনদের বয়োঃসন্ধিকালীন সময়ে কিশোর-কিশোরীদের সাথে দুরত্ব কমাতে হবে। তরুণ-তরুণীদের ভালোবাসতে হবে, সময় দিতে হবে। এমনকি তাদের সাথে সুসম্পর্ক এবং পারিবারিক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় তাদের সঙ্গী করতে হবে। এসব করলে তাদের মানসিক সক্ষমতা বাড়বে, দায়িত্ববোধ সৃষ্টি হবে আর যেটি কমবে সেটি হলো – আত্মহত্যা করার প্রবনতা ।

শেষ কথা, খারাপ বা নিষিদ্ধ জিনিসের হাতছানি পৃথিবী যতদিন আছে ততদিনই থাকবে ! এর মাঝ থেকেই আমাদের প্রিয়জনদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে – পাশে থেকে,ভালোবেসে – তাদের মধ্যে সুস্থ চিন্তা চেতনা এবং নৈতিক দায়িত্ববোধ সৃষ্টির মাধ্যমে ।

বিশ্বের সব কিশোর-কিশোরী, – তরুণ-তরুণী ভালো থাকুক।