শিরোনামহীন গল্পের তৃতীয় পর্ব-

সেলিম আহমেদ
Published : 14 July 2012, 05:21 PM
Updated : 14 July 2012, 05:21 PM

শিরোনামহীন ব্রিটেনের কাহিনী-তৃতীয় পর্ব

সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ,যুক্তরাজ্য থেকে-

প্রথম পর্বের আপডেট-

শুরুতেই এই পর্যন্ত যে তথ্য হাতে এসেছে,আর তা হলো,প্রথম পর্বের মোহনকে প্রাথমিকভাবে ডাক্তার রিলিজ করেছেন,সে এখন কিছু সময়ের জন্য হাসপাতাল থেকে বাসায় এসে পরিবারের সান্নিধ্যে সময় কাটায়,এরই এক পর্যায়ে,মোহন তার এই রিলিজকালীন সময়ে বাসায় এসে নানান ঝামেলা করে বসে,পুলিশের অধিক পিঠুনী,মাত্রাতিরিক্ত ঔষধের দখল এখনো তার শরীরে রয়ে গেছে,মাথা ঠিক মতো কাজ করতেছেনা,প্রতিবেশী উৎপাত কিংবা পরিবারের ঝামেলা হেতু দু-একবার পুলিশ এসে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে,বর্তমানে পুলিশ প্রহরায় হাসপাতালে।তবে যে প্রশ্নের উত্তর এখনো মিলেনি,হঠাৎ করে এতো অসুস্থ্য একজনকে হাসপাতাল কেন রিলিজ করে দিলো?পুলিশ কেনইবা মানসিক কিংবা সাইকোলজিক্যাল ট্রিটম্যান্ট এর পথ না ধরে একশন ধর্মী পথে চলেছে?বিলকিস-এর ভূমিকা পুলিশের অনুরুপ,অথচ বিলকিস এবং মোহন একে অপরকে এখন খুব ভালোবাসে,কিন্তু কেন বা কিভাবে,কোন কিছুর উত্তর আপাতত মিলছেনা,আগামী সংখ্যায় এর সর্বশেষ আপডেট থাকবে,যদি সহজলভ্য হয়।

প্রিয় পাঠক দ্বিতীয় পর্বে আমরা ছিলাম আবু জিন্দাল ও নাজমার কাহিনীতে,জিন্দাল এখনো লন্ডনের রাস্তায়-রাস্তায়,মাঝে-মধ্যে পুলিশের উৎপাত সহ্য করে চলেছে,কারণ ড্রাগসের মিথ্যে মামলার সন্দেহের তীর এখনো জিন্দালকে বয়ে বেড়াতে হচ্ছে,নাজমার পরিবারের মধ্য থেকে উভয়ের সংসারের আবারো জোড়া লাগানোর চেষ্টা চলছে,হয়তো ইতিমিধ্যে ওরা আবার এক হয়ে যাবে,চলুন এবার শুনে আসি ইংল্যান্ডের অতি পরিচিত,প্রভাবশালী এক রাজনৈতিক,সমাজদরদীর নানা ভয়ানক প্রতারণার বাস্তব কাহিনী।

তিনি একজন রাজনীতিবিদ,সমাজসেবী,কখনো তাবলীগ জামায়াতের সহযোগী,কখনো আবার খেলাফত মজলিস,আবার সময়মতো তিনি আবার খতমে নবুওতের নেতা,কমিউনিটির হেন কোন কাজ নেই,যেখানে তিনি নেই,হউক সেটা সমাজকল্যাণমূলক,কিংবা নিছক কোন গাণের আসর,মদ-জোয়ার আসরেও সমানভাবে তিনি শরীক এবং উদ্যোক্তা,কখনো আদম ব্যাপারী,কখনো কারী ব্যাবসায়ী।তার রয়েছে বিশাল নাম-ডাক,সঙ্গীয় একদল নিজস্ব পেঠোয়া বাহিনী-যে বা যারাই তার বিরুধীতা করবে,সেটা হউক কোন অনুষ্টান কিংবা কোন মজলিসে,তার বাহিনী সেই সব ব্যাক্তিকে শারিরীকভাবে আঘাত করতে সদা প্রস্থুত।মজার ব্যাপার তিনি বেশ ক-বার জেলের ভাত খেয়েছেন,ফিরে এসে স-উদ্যোগে আবারো তার পুরনো এই সব ধান্দা তিনি বহাল তবিয়তে শুরু করে দিয়েছেন।ট্যাক্স মামলা থেকে শুরু করে,প্রতারণা,যৌন হয়রানী,ধর্ষণ,জালিয়াতি সর্বপ্রকারের অভি্যোগ এবং মামলা রয়েছে তার ঝুলিতে,তারপরেও ব্রিটেনের এমনকি বাংলাদেশের নিজস্ব সমাজে তার রয়েছে ব্যাপক উপস্থিতি এবং কখনো কখনো অনেকের হিংসার কারণ।এতোসব কিছুর পরেও তিনি এবং তার গোত্রের লোকজন সবকিছু বেমালূম লোকের মিথ্যে প্রচারণা এবং প্র-পাগান্ডা বলে চালিয়ে যেমন সিদ্দ্বহস্ত,একইভাবে সমাজের নানান পেশার লোকজন এমনকি প্রভাবশালী মাওলানাদের সাথে দহরম-মহরম থাকার কারণে সাধারণ লোকজন তাকে এখনো বেশ সমীহ করে,যদিও তার সব কূ-কীর্তীর কথা আড়ালে-আবডালে বলে বেড়ায়,তথাপি তাকে আবার এতো বিশ্বাসের কারণে তার নিজেকে নিয়ে ক্যারিশম্যাটিক ষ্টোরী বানিয়ে উপস্থাপণের কারণে এখনো অসংখ্য পরিবারকে সে লূটে-পুটে দিব্যি খাচ্ছে,বেশ কয়েকবার ইমিগ্রেশনের হাতে ঢাকা এবং দুবাইতে গ্রেপ্তার হলে বোধগম্য কারণে নানা ফন্দি-ফিকির এর জালে ফেলে ইমিগ্রেশন কর্মকর্তাদের ফেলে সে পার পেয়ে যায়,এমনকি,ঢাকা বিমানবন্দরে যখন সে গ্রেপ্তার হয়,পাসপোর্ট যখন তার সিজ করা হয়ে যায়,তখনো সে তার জাল নেটোয়ার্কের মাধ্যমে ইংল্যান্ড থেকে ডুপ্লিকেট ব্রিটিশ পাসপোর্ট নিয়ে আবারো ইমিগ্রেশনকে ধোকা দিয়ে সে ব্রিটেন চলে এসে কিছুদিন নানান সমাজসেবা এবং চ্যারিটির কাজ করে আবারও তার দূর্ণীতির মাধ্যমে জীবন চালানোর প্রতারণামূলক ব্যাবসা শুরু করে।

তার প্রতারণার জাল বর্তমানে ব্রিটেন থেকে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত।বর্তমানে সে দ্বিতীয় স্ত্রী নিয়ে তার প্রতারণামূলক ব্যাবসা স্বামী-স্ত্রী(দ্বিতীয় কি তৃতীয়)মিলে শুরু করেছে।মানুষকে তার জালে ফেলে ধোকা দেওয়ার ক্ষেত্রে সে এতো সিদ্দ্বহস্ত যে খোদ রাবের মতো এলিট বাহিনীর চৌকস গোয়েন্দারাও তার জালে আটকে যায়।সে এতো দক্ষ যে এম আই ফাইভ-কে হার মানিয়েছে।আদালত থেকে সে সব সময়ই নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে খালাস পেয়ে যায়,টাকা,পেশী শক্তি আর উপর মহলের নেটওয়ার্ক এতো সুবিন্যস্ত যে সে আজ ধরাকে সরা জ্ঞান মনে করে।গল্পের খাতিরে ধরা যাক তার নাম আব্দুল্লাহ বাকী বিল্লাহ।

আব্দুল্লাহ বাকী বিল্লাহ-র উত্থান পর্ব-

শুরুতেই সে ছিলো এক ক্যাটারিং ব্যাবসায়ী,নানান সামাজিক এবং কমিউনিটি সংগঠণের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলো।বন্ধু ও সুধী মহলে সে নেহায়েত এক ভদ্রলোক হিসেবেই বেশ পরিচিত ছিলো।আর এই ভদ্রতার সুযোগে সে বিয়ে করে বসে প্রভাবশালী সনভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের রুপবতী মেয়েকে।বিয়ের পর বেশ কয়েক বছর সে অত্যন্ত সাদা-সিধে জীবন-যাপন পালন করে,চলনে-বলনে বেশ আধুনিক,স্মার্ট,উন্নত রুচির পরিচয় তার খ্যাতি কমিউনিটির সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে।এরই মধ্যে সে তার কর্মদক্ষতা দিয়ে কমিউনিটির নানান সমস্যা,হউক তা ব্যাক্তিগত,গোষ্টিগত,বা দলগত,কিংবা সমস্যা যত বিপদসংকুল হউক না কেন,আব্দুল্লাহ বাকী বিল্লাহ ঝাপিয়ে পড়ে,ঘাটের শ্রম –ঘাম দিয়ে সেই সমস্যা সমাধান করে দিতো।এতে করে বাকী বিল্লাহর নাম-ধাম আরো চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে।আর এই নাম-ধাম-ই তার কাছে একসময় বেশ লোভনীয় হয়ে উঠে,কারী ব্যাবসার দিকে মনোনিবেশ আস্তে-আস্তে ছেড়ে দিয়ে সে শুরু করে তার গোপণ অভিলাষ।কি করে ব্যাবসার পার্টনার,সমাজের উচুতলার মানি-জ্ঞানী লোককে তার বসে এনে একচ্ছত্র তার আধিপত্য কায়েম করা যায়,সে চেষ্টাই সে প্রতি নিয়ত করতে থাকে।এক্ষেত্রে সে তার সহযোগী হিসেবে পেয়ে যায় কতিপয় বাউন্ডেলে যুবক,লাঠিয়াল আর কিছু অনুগত লোক,যারা তার হয়ে হেন কোন কাজ নেই যে না করে থাকে।

কারী ব্যাবসায় প্রতারণা-

বিভিন্ন সময় আব্দুল্লাহ বাকী বিল্লাহ নানান লোভ আর লালসা আর সাক্ষাৎ লাভ দেখিয়ে নিজ সমগোত্রীয় এবং কমিউনিটির নানান স্তরের লোকদের নিয়ে একের পর এক নানান ধরনের রেষ্টুরেন্ট,টেকওয়ে,ব্যাবসা খুলে বসে।দুদিন পর আবার সেই সব ব্যাবসা বন্ধ করে দেয়।আর এই সব করতে গিয়ে সে তার পরিচিতি কাজে লাগিয়ে পার্টনারদের সর্বস্ব লুট করে এবং নানান ছলে-বলে সরবরাহ কারীদের বিশাল-বিশাল বিল ক্রেডিটে এনে পার্টনারদের উপর সেই সব বিল ফেলে নতুন ব্যাবসা শুরু করে।ব্যাবসায়িক শরীকদের সেই সব বিল গুণতে গুণতে দিশেহারা,অথচ আব্দুল্লাহ বাকী বিল্লাহ সেই সবের ধরা-ছোয়ার বাইরে থাকে,কি কমিউনিটির বিচার সভায়,কি আইনের ক্ষেত্রে,সব জায়গায়ই সে এতো সুন্দর আর নাটকীয়ভাবে সমস্ত ঘটনা থেকে পার পেয়ে যায়,যাতে কারো কারো কাছে সে সাক্ষাৎ দেবতুল্য।

ব্রিটেনের আদালতে এবং মিডিয়ার হেড লাইনে বাকী বিল্লাহ-

বাকী বিল্লাহ ব্যাবসা করতে গিয়ে কখনো সরকারকে ট্যাক্স প্রদান করতোনা,যদিও তার ব্যাবসায়িক শরীকদের সব সময়ই সে কাগজে পত্রে হিসাব দেখাতো ট্যাক্স প্রদান করে চলেছে।ট্যাক্সের সাথে ঝামেলা চূড়ান্ত পর্যায়ে যাওয়ার অল্প আগে থেকে বাকী বিল্লাহ সুকৌশলে এবং কথার যাদু ফেলে শরীকদের কাছে কখনো নামমাত্র মূল্যে,কখনো বিনামূল্যে ব্যাবসা বিক্রী করে দিতো।এমনি এক পর্যায়ে ট্যাক্স ওয়ালারা হানা দিয়ে দীর্ঘ তদন্তে দেখতে পায় বাকী বিল্লাহ কাগজে-কলমেই শুধু তিনশত হাজার পাউন্ডের উপরে ট্যাক্স ফাকি দিয়েছে বিভিন্ন প্রতারণামূলক ভাবে।বাকী বিল্লাহর কর ফাকির মামলা আদালতে গড়ালে ব্রিটিশ মিডিয়ার হেড লাইনে হয়ে সে চলে আসে লাইম লাইটে।

আদালত যখন তাকে দূষী সাব্যস্ত করে রায় দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন,তার আগ মুহুর্তেই বাকী বিল্লাহ নিজেকে অর্থনৈতিক ভাবে দেউলিয়া ঘোষণা করে বসে,যা মিডিয়ায় বেশ সহানুভূতির সাথে ফলাও করে প্রকাশিত হয়।এরই সুযোগে বাকি বিল্লাহ বনে যায় পুরোদস্থর তাবলীগ জামায়াতের মুসল্লী,দাড়ি রেখে ল্পম্বা আল-খেল্লা পরিধান করে মসজিদে মসজিদে দাওয়াতী কাজ চালাতে থাকে তাবলীগ জামায়াতের সাথে,লোকে ভাবে বাকী বিল্লাহ এবার দীনের পথে অর্থাৎ সু-পথে এসে গেছে,তাই সহজেই ভুলে যায় তার এতোসব কীর্তি।

বাকী বিল্লাহ কিন্তু মসজিদে মসজিদে থেকে তার কাজ ঠিকই চালাতে থাকে।শুরু করে নতুন ফন্দি-ফিকির,গোপণে বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপণ করে সে কমিউনিটির মধ্যে নানা বিবেধ সৃষ্টি করে,এমন সংঘাতময় অবস্থার সৃষ্টি করে,যে ভাই ভাইয়ের শত্রু বনে যায়,এমনি অবস্থায় সে মসজিদ থেকে বের হয়ে আসে,কমিউনিটির সেবায় নিজেকে আত্ননিয়োগ করতে থাকে,নানা চ্যারিটি মূলক কাজ আর কমিউনিটির সেবার সুযোগে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়।

বাকী বিল্লাহ যখন দেশে-

এমনি অবস্থায় সে দেশে গমণ করে,সেখানে শুরু করে নতুন মিশন।সোনালী ব্যাংকের ব্ল্যাংক চেকের মোটা অংকের কপি দেখিয়ে সমাজসেবা ও গরীবের উন্নয়নের নামে মোটা অংকের ক্যাশ সে আহরণ করে নিজের পকেটে ঢোকায়।একসময় যখন দেখে তার প্রতারণা অনেকের কাছে ফাস হয়ে যেতে পারে,তখন সে শুরু করে বিভিন্ন গোত্রের মধ্যে হানাহানি আর বিভেধ সৃষ্টিতে পারদর্শী বাকী বিল্লাহ সংঘর্ষের এক পর্যায়ে নিজ এলাকার প্রতিদ্বন্ধিকে সুকৌশলে প্রকাশ্যে মারামারিতে খুন করিয়ে বসে।বাকী বিল্লাহ যখন খুনের হুকুম দায়ী আসামী হয়ে যায়,তখন সে তার সমগোত্রীয় সকলকে বুঝায় কেইস চালানোর জন্যতো অনেক টাকা দরকার,তাই সে টাকা উত্তোলনের জন্য লন্ডনে চলে যাবে,নিজের গোত্রের সবাইকে বুঝিয়ে টাকা উঠিয়ে পাঠাবে কেইস চালানোর জন্য ও ক্ষতিগ্রস্তদের দেখ-ভালের জন্য।এতোসব ভেলকিবাজি করে বাকী বিল্লাহ আবার গোপণে লন্ডনে পাড়ি জমায়।

এখানে এসে সে সমগোত্রদের দরদী সেঝে নানা সভা-সমাবেশ করতে থাকে,এতে সে সফলও হয়।মোটা অংকের টাকার যোগাড়ও করে ফেলে।

বাকী বিল্লাহ এবার ধর্ষনের আসামী হয়ে পুলিশ কাষ্টডিতে-

বাকী বিল্লাহ নিজের ফন্দি-ফিকির এতো কিছুর পরেও থেমে থাকেনি।এবার সে ব্রিটিশ স্কুল পরুয়া মেয়ের দিকে হাত বাড়ায়।নাইট ক্লাব থেকে লিফট দেওয়ার নাম করে তাকে গাড়ীতে উঠিয়ে এনে শ্লীলতা হানির চেষ্টা করে বলে মেয়েটি পরে পুলিশে অভিযোগ করলে পুলিশ দীর্ঘ তদন্ত শেষে বাকী বিল্লাহকে গ্রেপ্তার করে।এক্ষত্রেও বাকী বিল্লাহ এতো ধূর্ততার সাথে নিজ পরিবার-আত্নীয়স্বজন,বন্ধু-বান্ধব আর কমিউনিটির লোকজনকে কেধে-কেটে একাকার করে ফেলে যে লোকজন বাকী বিল্লাহ কে বিশ্বাস করে তার জামিনের ব্যাবস্থা করেন।অনেক চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে প্রচলিত আইনের ক্ষেত্রে যা সাধারণত হয়না,এমন এক দৃষ্টান্ত স্থাপণ করলো,স্বনামখ্যাত ব্যারিষ্টার আর ৫০ হাজারের ক্যাশ পাউন্ডের ও বেশী কমিউনিটির ব্যাক্তিদের দ্বারা ও আত্নীয়দের দ্বারা জামানতের গ্রান্টি এস্যুইরিটি প্রদান সাপেক্ষে জজ সাহেব যখন তাকে জামিন প্রদান করেন শর্তসাপেক্ষে,তখন থেকেই বাকী বিল্লাহ তার সমগোত্রীয় কতিপয় বাংলা মিডিয়ার লোকদের মাধ্যমে এবং নিজের লোকদের দ্বারা তার এই অপমানকর কেইসের বর্ণবাদীতার তকমা লাগানোর জন্য উঠে-পড়ে লেগে যায়।

দীর্ঘ শুনানী শেষে বাকী বিল্লাহ নানা ছল-চাতুরী এবং প্রভাবশালী ব্রিটিশ ল-ইয়ার আর মন্ত্রীর সুপারিশের বদৌলতে যখন মুচলেকা দিয়ে খালাশ পায়,তখন জামিনের এস্যুইরিটির পুরো টাকা সে মেরে দেয়,শুধু কি তাই সে এমন গল্প প্রচার করতে থাকে,সেতো ব্রিটিশ আদালতে ৫০০ হাজার পাউন্ডের ক্ষতিপূরণ মামলা করেছে,সে মমলাতে সে জিতবে বলেই মামলার সূরাহা না হওয়া পর্যন্ত জামিনের টাকা সে উত্তোলন করবেনা,তাতে তার ক্ষতিপূরণ মামলার মেরিট অনেক কমে যাবে,এক্ষেত্রে সে দক্ষ ব্যারিষ্টারদের লেটার ও কমিউনিটির অন্যান্য নেতাদের চিঠি প্রদর্শন করে(যা আদৌ সত্যি হয়নি পরবর্তীতে)।

বাকী বিল্লাহর নতুন আদম ব্যাবসা-

এতোসব করে বাকী বিল্লাহর প্রতারণা থেমে থাকেনি।এবার সে শুরু করে ব্রিটেন সহ ইউরোপে মানব পাচার।অবৈধভাবে ১/২ জনকে যখন সে পাচার করতে সক্ষম হয়,তখন তার লোকজন তার নামে কেচ্ছা-কাহিনী ছড়াতে থাকে,যাতে তাকে অতি মানবীয় এক ব্যাক্তিতে রপান্তরিত করা হয়।বাকী বিল্লাহ তার প্রতারণার নেটওয়ার্ক ব্রিটেন সহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়াতে সক্ষম হয়।ফলশ্রুতিতে ব্রিটেন সহ ইউরোপে নেওয়ার নাম করে সে অনেকের কাছ থেকে কম করে হলেও কোটি থেকে দেড় কোটি টাকা সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়।অনেকে টাকা দিয়ে দিনের পর দিন তার দরবারে ধর্না দিতে থাকেন,সে আজ নয় কাল পাঠাচ্ছি করে আর পাঠাতে পারেনা।এমনি এক পর্যায়ে কতিপয় কোমল মতি ছেলেদের সে তার ছেলে বানিয়ে ছবি মিলিয়ে ব্রিটিশ পাসপোর্টে নিয়ে ব্রিটেন ঢোকার প্রাক্কালে দুবাই ইমিগ্রেশন পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে ঢাকা রিটার্ণ করে,ঢাকা ইমিগ্রেশন কতৃপক্ষ তাকে এরেষ্ট করে যখন থানায় নিয়ে যান,তখন তার পক্ষের লোকজন থানায় তদবির করে তাকে ছাড়িয়ে আনতে পারলেও তার ব্রিটিশ পাসপোর্ট রয়ে যায়,বিদেশের ঐ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষের হাতে,যারা বিধিমোতাবেক ব্যাবস্থা নেওয়ার কথা থাকলে বোধগম্য কারণে বিলম্ব করতে থাকে।বাকী বিল্লাহ ও তার এজেন্ট এক্ষেত্রে ছল-চাতুরির আশ্রয় নিয়ে ঢাকা থেকে ব্রিটেনে লষ্ট পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করে ঐ পাসপোর্ট দেশে নিয়ে সে ফ্লাই করে চলে আসে।বিমানবন্দরের অসাধু কতিপয় কর্মচারী তাকে বেশ সহায়তা করে,ফলে তার মামলা ডিপ ফ্রিজে বন্দী হয়ে যায়।

ইতিমধ্যে দেশ-বিদেশে এতো টাকা আত্নসাথ করে সে তার চাল-চলন বেশ রাজকীয় করে ফেলে,যাতে তার প্রতারণার ফাদে আরো নতুন নতুন লোককে ফেলতে পারে।
এদিকে একশ্রেণীর টাউট তার পক্ষ নিয়ে প্রচারণা চালাতে থাকে,যাদের কাজই হলো তাকে নিয়ে নানান রুপকথার জন্ম দিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানো।

বাকী বিল্লাহর নতুন বিবাহ এবং নষ্টামী বাণিজ্য-

বাকী বিল্লাহ লোকের এতো টাকা-কড়ি আত্নসাত করে উপায় খুজতে থাকে কি করা যায়।এই পর্যায়ে মোক্ষম হাতিয়ার চলে আসে তার হাতে।ধনাড্য ব্যাবসায়ীর বিধবা পত্নী,যে কিনা অতীতে নানা কূ-কীর্তির স্বার্থক জন্মদাত্রী,৭/৮ সন্তানের জননী,স্বামীর মৃত্যুর ৪০ দিনের মাথায় আব্দুল্লাহ বাকী বিল্লাহর সাথে প্রেমে মজে যায়।আর এই দুই দুষ্ট এক সাথে মিলে-মিশে শুরু করে প্রতারণার নতুন নতুন কৌশল।উভয়ে মিলে জোয়া খেলতে যায় উন্নত রাজষিক হোটেলে-পানশালায়,যাতে অনেকের কাছে ধান্দা লাগে,নিশ্চয়ই টাকার গাছ ওদের হাতে।এদিকে বাকী বিল্লাহ সমান তালে দেশ থেকে আসা নানান দলের হুজুর,মাওলানাদের খেদমত আর ওয়াজ-নসিহত এর আয়োজন যথারীতি করতে থাকে,মাওলানাদের নিয়ে সর্বত্র ছুটে বেড়ায় মসজিদ মাদ্রাসার চাদা তুলতে,দেশ থেকে আসা নানান দলের রাজনৈতিক নেতা আর আমলাদের নিয়ে সংবর্ধনার আয়োজন করে,কখনো নানান ব্যাবসার সেমিনার আয়োজন করে,এতে তার ভাব-মূর্তি কিছুটা বাড়তে থাকে।টাকার লোভ দেখিয়ে নিজ সন্তানদের ভাই বন্ধু আত্নীয়দের বাধ্য করে নতুন স্ত্রীর সাথে যোগাযোগ এবং ক্ষেত্র বিশেষে বিশেষ সম্পর্ক গড়ে তুলতে,আর এই বিধবা স্ত্রীও তখন টাকার সাহায্য নিয়ে তাদের দিকে হাত বাড়িয়ে দেয় নিজের স্বীকৃতি আদায়ের জন্য।

এই পর্যায়ে বাকী বিল্লাহ নানা ব্যাবসা আর আদম পাচারের নানান নিশ্চিত রুটের কথা বলে আর নব-বিধবা স্ত্রীকে সামনে রেখে লোকদের কাছ থেকে একের পর ধার-কর্জ ও টাকা হাতিয়ে নিতে থাকে,সমানতালে কমিউনিটির সকল ধরনের কর্মকান্ডে চেয়ারের আসনটিও সমানভাবে দখল করে থাকে।

যখন যে দল ক্ষমতায় আসে,তখন সে দলের নেতা সে বনে যায়,মিটিং মিছিল,সভা-সমাবেশ করতে থাকে।সব সময় সে রুপ বদলায়।সে কখনো জামায়াত,কখনো বিএনপি,খেলাফত,আর এখন সে ঘোরতর আওয়ামীলীগ নেতা।

বাকী বিল্লাহর নতুন মিশন-

জনপ্রতিনিধি হওয়ার ব্যার্থ চেষ্টা করে মসজিদ মাদ্রাসার খেদমত করার জন্য এবং গরীবের হক আদায়ের জন্য এবার সে কোমড় বেধে মাঠে নেমেছে।উদ্দেশ্য স্থানীয় মাতবর,চেয়ারম্যানদের ব্যাবহার করে,লোকাল ইমাম আর মুসল্লীদের এক হাত দেখানোর জন্য থানা-পুলিশ হাত করে জঙ্গী,সন্ত্রাসীর ধোয়া তুলে নতুন মিশনে ব্যাস্ত,আদম ব্যাবসার টাকা মারার হাত থেকে জনরোষকে ভিন্ন খাতে নিয়ে নিজের ফায়দা হাসিল,আর বিধবা নয়া স্ত্রীকে নিয়ে ব্যাংকে থাকা ডিপোজিট মানি আর অবৈধ অর্থ আত্নসাথের কৌশল করে স্বার্থ উদ্দ্বার করা।

প্রিয় পাঠক অনেক তরুন-তরুণী এবং পরিবারের সকলের পড়ার সুবিধার্থে আব্দুল্লাহ বাকী বিল্লাহর নীতিহীন প্রতারণার অনেক ছলা-কলা এখানে এড়িয়ে যাওয়ার যথা-সাধ্য চেষ্টা করেছি।তারপরেও অনিচ্ছাকৃত কোন ত্রুটির জন্য ক্ষমা প্রার্থী।

(আগামী সংখ্যায় চাঞ্ছল্যকর তথ্য নিয়ে এক রাজাকারের আত্নকাহিনী)

Syed Shah Salim Ahmed
Salim932@googlemail.com
tweet@salim1689.
01st July 2012.UK.