ইউ এন হিউম্যান রাইটসের রিপোর্টঃব্রিটেনের জীবনযাপনে সেক্সিজম অন্য যে কোন দেশের চাইতে ভয়াবহ

সেলিম আহমেদ
Published : 15 April 2014, 05:06 PM
Updated : 15 April 2014, 05:06 PM

ইউ এন হিউম্যান রাইটসের রিপোর্টঃব্রিটেনের জীবনযাপনে সেক্সিজম অন্য যে কোন দেশের চাইতে ভয়াবহ

সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ-লন্ডন থেকে

ইউনাইটেড ন্যাশনসের হিউম্যান রাইটস এক্সপার্ট মিস রাশিদা মঞ্জু ব্রিটেন কে বলেছেন, ব্রিটেনের জীবন প্রণালীতে সেক্স কালচার মৌর পার্ভেসিভ অন্য যেকোন দেশের তুলনায়।এটা ব্রিটেনের এই বয়েস সেক্স ক্লাব কালচার বৃহদাকারে দেশটিতে ছড়িয়ে পড়েছে।তিনি সম্প্রতি ব্রিটেন সফরে এসে বিভিন্ন জনের সাথে সাক্ষাতকারের ভিত্তিতে তার এই মতামত দিয়েছেন ব্রিটেনে এসে বৈঠক কালীন সময়ে।তিনি বলেন, ব্রিটেনের স্কুলের সেক্সিজম মডিউল রয়েছে (কিন্তু আবশ্যিক নয়! তিনি আবশ্যিক বা ম্যান্ডেটরি করার সুপারিশ করেন), যা আপনি বিশ্বের অন্য কোথাও পাবেননা। এমনকি তিনি বলে ইয়ং ছেলে মেয়েদের জন্য পর্ণ-সাইট এখানে সহজলভ্য এবং বাসে, ট্রেনের টিউবে নারীদের ভক্ষণের ছবি সহ সামাজিক নেটওয়ার্কে পোস্ট করা হয়, এডভার্ট হিসেবে, যা অন্য কোথাও আপনি সচরাচর দেখতে পাবেননা। রাশিদা মঞ্জু আরো বলেন, ব্রিটেনে নারী নির্যাতনের হারের তুলনা অন্য দেশের তুলনায় বেশী এবং এই বয়েস ক্লাব কালচার নারীদের নির্যাতনে উৎসাহিত করছে, যা অন্য কোন দেশে এতো বেশী নেই।তিনি স্কুলগুলোতে ও টিউবে বুলিং কালচার রোধের ব্যবস্থা নিতে বলেন।

সাউথ আফ্রিকার এই হিউম্যান রাইটস এক্সপার্ট মূলত জাতি সংঘের হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলে ব্রিটেনের নারীদের যৌন নির্যাতন, হয়রানি এবং ভায়োল্যান্সের ব্যাপারে মনিটর করে রিপোর্ট প্রদানের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আর তার সেই দায়িত্বের পর্যায়ে তিনি ব্রিটেন সফর করেছেন। তিনি নারীদের সাথে, বিভিন্ন এনজিও কর্মী এবং মানবাধিকার কর্মী ও গ্রুপের সাথে কথা বলেছেন, সরকারি উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করেছেন। তার প্রাথমিক তথ্য পাওয়ার ব্যাপারে তিনি টেলিগ্রাফের সাথে উপরোক্ত কথা বলেছেন।জাতি সংঘে ফিরে গিয়ে তিনি তার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রদান করবেন।

মিস রাশিদা মঞ্জু সাউথ আফ্রিকার কেপ টাউন ইউনিভার্সিটির পাবলিক ল- একজন প্রফেসরও।২০০৯ সালে তিনি নারী নির্যাতনের ও ভায়োল্যান্সের জন্য দশটি দেশের উপর রিপোর্ট জাতি সংঘে জমা দিয়েছিলেন। দেশগুলোর মধ্যে ছিলো- সোমালিয়া, জাম্বিয়া, আলজেরিয়া, জর্ডান, আমেরিকা আর আজকে ইউকে অফিসিয়াল, সিভিল সোসাইটি ও এনজিওর সাথে আলোচনায় তিনি জানালেন ব্রিটেনেও নারীরা ভায়োল্যান্সের শিকার চরমভাবে।বিশ্বের সবচাইতে ভায়োল্যান্সপূর্ণ সেক্সুয়াল এসল্টের ক্ষেত্রে টপ দশটি দেশ তিনি ভ্রমণ করে রিপোর্ট করার ট্র্যাক রেকর্ড রয়েছে।

রাশিদা মঞ্জু অভিযোগ করেন ব্রিটেনের স্কুল লেভেলে সেক্সিজমের উপর মডিউল অপশনাল লেসন দেয়া হয়, যা পৃথিবীর অন্য কোন দেশে দেখা যায়না বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন। তার মতে সঠিকভাবে সেক্সিজম মডিউল আবশ্যিক ভাবে স্কুলে পড়ানোর ব্যাপারে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।

রাশিদা মঞ্জু প্রশ্ন রেখে বলেন, যখন পাবলিক বাসে নারীদেহ টাচ করা হয় ভীড়ের মধ্যে সেটা আজকে সহনীয়, তার মতে ইটস ওকে। কিন্তু যখন রাস্তায় আপনি বের হলেন, আপনাকে শীষ দিয়ে ভর্তসনা করা হলো- যা তিনি বলেন তার জীবনে তিনি কখনো এমন অবস্থার মুখোমুখি হননি। এটা মেনে নেয়া যায়না বলে তিনি মন্তব্য করেন।

মিস রাশিদা মঞ্জু বলেন, সরকারের দায় দায়িত্ব হলো এই সেক্সিজম কালচারের বিরুদ্ধে প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেয়া।

মিস রাশিদা মঞ্জুর মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন কনজারভেটিভের সাবেক হেলথ মিনিস্টার এডউইনা ক্যোরি। তিনি বলেন, অধিকাংশ মহিলাই ব্রিটেনের এই ডাইভার্স সোসাইটিতে স্বাছন্দে বসবাস করছেন যা তারা খুবই এঞ্জয় এবং ইন্টারেস্ট হিসেবে উপভোগ করছেন।

এডউইনা ক্যোরি মিস রাশিদা মঞ্জুর সাথে দ্বিমত পোষণ করে বলেন, তিনি মনে করেননা ব্রিটেন সেক্সিজম কালচারের সমস্যা রয়েছে বলে মনে করছেন না।

তিনি আরো যোগ করেন, বিশ্বের অনেক দেশেই মাতৃমৃত্যুর হার বেশি এবং মাতৃত্বকালীন অনেক সমস্যা রয়েছে, নারীদের অনেক নির্যাতন পোহাতে হয়, যা ব্রিটেনে একজন নারী আমাদের এই ডাইভার্স সোসাইটিতে স্বচ্ছন্দে উপভোগ করছেন নিশ্চিন্তে- মিস মঞ্জুর উচিত সেই সব ভালনারেবল কান্ট্রি সফর করে রিপোর্ট প্রদান করা।

এদিকে এভরি ডে সেক্সিজম প্রজেক্টের ফাউন্ডার লাওরা বেইটস বলেন আমাদের সিরিয়াসলি এই রিপোর্টকে নেয়া উচিৎ এবং প্রতিরোধে কাজ করা উচিৎ।তিনি বলেন স্কুলে শিক্ষা দেয়ার ব্যাপারে তার সাজেশন খুবই উপযোগী এবং গ্রহণযোগ্য বলে তিনি মনে করছেন। তিনি বলেন এখন দেখতে হবে আমরা কিভাবে এটাকে ট্যাকল করার জন্য ডিল করি।

বেইটসের মতে, এটা কেবল সরকারের একার উদ্যোগে নয় বরং আমাদের সকলের, সমাজের সকল অংশের সম্মিলিত সহযোগিতায় এই সমস্যা মোকাবেলা করতে হবে।

15th November 2014,London.