অর্ধেকের বেশী আমেরিকান বিগব্যান থিওরি ও গ্লোবাল ওয়ার্মিং বিশ্বাস করেননা

সেলিম আহমেদ
Published : 23 April 2014, 07:39 AM
Updated : 23 April 2014, 07:39 AM

অর্ধেকের বেশী আমেরিকান বিগব্যান থিওরি ও গ্লোবাল ওয়ার্মিং বিশ্বাস করেননা

সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদ

আমেরিকার অর্ধেক জনগোষ্ঠী বিজ্ঞান আবিষ্কৃত ১৩.৮ বিলিয়ন বছর আগে পৃথিবী তৈরির প্রতিষ্ঠিত "বিগব্যান থিওরি" বিশ্বাস করেননা। এমনকি এই অর্ধেক আমেরিকান জনগণ "গ্লোবাল ওয়ার্মিং" এর বৈজ্ঞানিক কারণের ব্যাপারেও বিশ্বাস নেই। সাইন্স জার্নালে এসোসিয়েটেড প্রেস কর্তৃক এই সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

এসোসিয়েটেড প্রেস-জিএফকে আমেরিকার প্রাপ্ত বয়স্ক ১.০১২ জনগণের মধ্যে এক গবেষণা ধর্মী সার্ভে পরিচালনা করে। প্রাপ্ত সার্ভেতে দেখা গেছে, এই অর্ধেকের বেশী আমেরিকান জনগণ ধূমপান ক্যান্সারের কারণ, মানসিক রোগের মেডিক্যাল ব্যাখ্যা, মানবদেহের কোষ সেলের ভিতর জেনেটিক কোডের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা যেখানে বিশ্বাস করেন, আস্থা রাখেন, ঠিক তার বিপরীতে বিগব্যান থিওরির মাধ্যমে পৃথিবী সৃষ্টির বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যায় বিশ্বাস করেননা। এমনকি তারা মনে করেননা, পৃথিবী উত্তপ্ত হচ্ছে এমন থিওরিতেও বিশ্বাস নেই তাদেরকারণ তারা মনে করেন, ৪.৫ বিলিয়ন বছরের পুরনো এই পৃথিবী তার ন্যাচারাল প্রসেসের মাধ্যমে চলছে।

স্টাডিতে তারা ৫১% আমেরিকানদের কাছ থেকে জানতে পেরেছেন, বিগব্যান থিওরির মাধ্যমে পৃথিবী তৈরি হওয়ার তথ্যে তাদের বিশ্বাস নেই এবং প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৪ জন মনে করেন পৃথিবী তার কক্ষ পথে প্রাকৃতিক উপায়ে চলছে, এখানে গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর ব্যাপারের তারা একমত নন।

বৈজ্ঞানিক এই এসোসিয়েটেড জিএফকে সার্ভেতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যেও ভিন্নতা লক্ষ করেছে। তারা তাদের সার্ভেতে পেয়েছেন রিপাবলিকানদের চাইতে ডেমোক্রেটরা বিগব্যান থিওরি ও গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর ব্যাপারে বিজ্ঞানের ব্যাখ্যার উপর অনেক বেশী আশ্বস্ত।

মজার ব্যাপার হলো আমাদের দেশের মতোই যারা ঘন ঘন চার্চে যান এবং রিলিজিয়াস বিশ্বাসের উপর ভর করে চলেন তাদের মধ্যে অধিকহারে এই বিগব্যান থিওরি ও গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর ব্যাপারে সন্দেহ বেশী মাত্রায়, যতটা না অন্যদের বেলায়।

এপি-জিএফকে এই সার্ভে গত ২০ থেকে ২৪ মার্চ ২০১৪ সালের মধ্যে সম্পন্ন করে, তাদের নিজস্ব সোর্স প্যানেল সহ অনলাইনের মাধ্যমে প্রোগ্রাম ডিজাইন ও কোয়েশ্চানারী ও আমেরিকান জনগণের মধ্যে নির্ধারণ করে, যেখানে অনলাইনের মাধ্যমে প্রাপ্ত বয়স্ক ১,০১২ জন আমেরিকানের ইন্টারভিউ সহ তাদের ডিজাইনের স্যাম্পলের মাধ্যমে যারা রেসপন্স করেছিলেন তাদের মধ্য থেকে আবার ৩-৪ পার্সেন্ট মাইনাস মার্জিন দিয়ে প্রদানকৃত তথ্যের সঠিকতার যাচাই করা হয়।

ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার ২০১৩ সালের মেডিসিনের উপর নোবেল প্রাইজ বিজয়ী র‍্যান্ডি শ্যাকম্যান এ ব্যাপারে বলেন, বিজ্ঞান সমাজের অনেক প্রতিষ্ঠিত সত্য ভিত নাড়া দিয়েছিলো, যা আমাদের অনেক পলিটিশিয়ানরা নতুন আবিষ্কার নিয়ে নিজেদের বক্তব্য প্রতিষ্ঠায় ব্যস্ত থাকেন কিন্তু নতুন এই স্টাডি সেই ভিত্তিমূলে নতুন করে ভাবার সুযোগ এনে দিয়েছে।

এর আগে ন্যাশনাল সাইন্স ফাউন্ডেশন ২,২২০ আমেরিকানের উপর এক সার্ভে করে জানিয়েছিলো প্রতি ৪ জনের মধ্যে ১ জন আমেরিকানের চাঁদে অরবিট পাঠানো সম্পর্কে কোন তথ্য জানা নেই এবং ৫১% আমেরিকানের কোন ধারনাই নেই এন্টিবায়োটিক ভাইরাস কিল করেনা, ৪২% আমেরিকান মনে করেন জ্যোতিষশাস্র "ভেরি সাইন্টিফিক" অথবা "সর্ট অব সাইন্টিফিক"

পাদটীকা- পক্ষান্তরে বাংলাদেশ এখনো অনেক গরীব, উন্নত জীবন যাপন এখনো নাগালের বাইরে, বৃহত্তর জনগোষ্ঠী শিক্ষা ও আধুনিক প্রযুক্তি থেকে বঞ্চিত, বৃহৎ জনগোষ্ঠী আধুনিক সুযোগ সুবিধা থেকেও বঞ্চিত- সেখানে অবৈজ্ঞানিক সূত্র প্রাধান্য পাওয়া কি এমন বিচিত্র কিছু!

21 April 2014,London.