দেশের বাইরে ঈদ

সপ্নকল্পন
Published : 25 August 2011, 01:28 PM
Updated : 25 August 2011, 01:28 PM

ঈদের মজাটা হয়তো এখন অনুভব করি। কিন্তু আসল ঈদের আনন্দ আসলেই অনেক আগে পার হয়ে গেছে, স্কুল লাইফে। তারপরও ঈদের নামাজ পরে বাবা মাকে সালাম করে সেলামি নেয়া, সেমাই খেয়ে বন্ধুবান্ধবদের সাথে বেরিয়ে পড়া ৩৬৫ দিনের মধ্যে সবচেয়ে আনন্দের তা নির্দ্বিধায় বলা যায়। দেশের বাইরে প্রথম ঈদ করি ২০০৮ এ। সেবার ঈদের মজাটা ছিল একটু আলাদা। একেবারে বেদনাদায়ক ছিল তা না।

"রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ,
আপনাকে তুই বিলিয়ে দে , শোন আসমানী তাক্বিদ"
গানটা হয়তো শুনতে পাইনি, বাবা মাকে হয়তো হাত ছুয়ে সালাম করতে পারিনি কিন্তু দেশে আবার ফিরে যাব এই আনন্দ ঈদের বেদনাকে অনুভব করতে দেয়নি।
সেজন্য আমার কাছে মনে হচ্ছে এবারই দেশের বাইরে প্রথম ঈদ। ছোটবেলায় নতুন চকচকে ২/১০টাকার নোট পেলে খুশিতে আত্নহারা হতাম।

আর আমার ছোটচাচা ছিল বিগ বাজেটের মানুষ, উনার কাছ থেকেই একটু টাকা বেশি পেতাম বলে উনি নামাজ পড়ে আসা পর্যন্ত বাড়ি থেকে বের হতাম না। উনি এসেই নতুন টাকা বান্ডিল বের করে সবাইকে টাকা দেয়া শুরু করত। আমার ছোট চাচা আর নেই। হুম। এবার ঈদে তাই মনে হচ্ছে অনেক একা থাকব। কিন্তু এটাই বাস্তবতা। ইউনিভার্সিটি লাইফে আমরা ফ্রেণ্ডরা পথশিশুদের জন্য "সপ্নকুঁড়ি" নামে একটা স্কুল করেছিলাম। যাদের অনেকেরই বাবা মা নেই বা যারা ঈদের আনন্দ অনুভবই করতে পারেনি, সেইরকম ছেলেমেয়েরাই ওই স্কুলে পড়ত। স্কুলটা দিয়েছিলাম তাদেরকে কিছু শেখাব বলে কিন্তু তাদের কাছ থেকে নিজেরা শিখেছি অনেক বেশি। তাদের কথা চিন্তা করলে এবারকার ঈদ অনেক আনন্দের হবে। তাদের ঈদের সেমাই খাওয়ার জন্যও হাত পাততে হয়, (যেটা আসলেই অমানবিক, ঈদের দিনেও কেন মানুষকে অন্যের কাছে হাত পাততে হবে?), সেখানে ইতিমধ্যে কয়েকজন বড় ভাইয়ের কাছ থেকে সেমাই খাওয়ার দাওয়াত পেয়ে গেছি। অনেক আনন্দের নয় কি?

সবাইকে ঈদ মোবারক।