সুনামি মানে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ। ব্যাপক প্রাণহানি। একটি জনবসতি নিশ্চিহ্ন হওয়া। একটা বিশাল ঢেউ সমুদ্র থেকে এসে উপকূলে আছড়ে পড়া। বিশাল ঢেউ এর উচ্চতা ৩০-১০০ ফুট হতে পারে।ঢেউ এর আঘাতে সকল অবকাঠামো ভেঙ্গে নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে।লক্ষ লক্ষ মানুষ জীবজন্তুর সলিল সমাধি হতে পারে।আমাদেরও আছে বিশাল জলরাশি,সমুদ্র; বঙ্গোপসাগর।সুনামি যদি আঘাত হানে ১৫ কোটি মানুষের এই দেশে।দেশের প্রায় ৫ কোটি উপকূলবাসীর কি অবস্থা হবে? সুনামির কোন পূর্বাভাস করা অনেক কঠিন।যেহেতু তা সৃষ্টি হয় কয়েক ইঞ্চি উঁচু ঢেউয়ের আকারে, অশান্ত বিশাল সমুদ্রবক্ষে।মাত্র কয়েক সেকেন্ড সময়ে তা আঁচড়ে পড়ে সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায়।নিমিষেই ঘটে যায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ।
সুনামির উৎপত্তি ও তীব্রতা নির্ভর করে কয়েকটি বিষয়ের উপর সুনামি হতে হলে সমুদ্রপৃষ্ঠে ভূমিকম্প হতে হবে অবশ্যই সাবডাকশন এলাকায়; ভূমিকম্প উৎস হবে অগভীর এবং তীব্র মাত্রার ৭.৫ মাত্রার। ভূমিকম্প এর ফলে চ্যুতি সৃষ্টি হয়। চ্যুতি রেখার লম্ব বরাবর তা সঞ্চালিত হয়। সমুদ্রোপকূলের আকার ও প্রকৃতি সুনামি সংঘটন নিয়ন্ত্রণ করে।
আমাদের উপকূল এলাকা অগভীর। ফলে ঢেউ ভেঙ্গে যায়। শক্তি অপচয় হয়। ঢেউয়ের সর্বোচ্চ উচ্চতা সম্ভব হয় মাত্র-৭ মিটার। ১৭ জুলাই, ২০০৬ এর সুনামিতে নোয়াখালী-বরিশাল-চিটাগাং উপকূলের ৫০ কিলোমিটার দূরত্বে ঢেউয়ের উচ্চতা ছিল মাত্র ১.৪ মিটার।
বাংলাদেশের ১৮০ কিলোমিটার সুদীর্ঘ কন্টিনেন্টাল শেল্ফ সুনামিকে দূর্বল করে দেয়,এর গতি ও উচ্চতা প্রশমন করে দেয়। তাই বাংলাদেশ উপকূল সুনামি দুর্যোগ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম। দুর্যোগপূর্ণ রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃত হলেও সুনামি ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পারবে না বাংলাদেশে। যদি অদূর ভবিষ্যতে কোন গভীর সমুদ্রবন্দর বাংলাদেশের সমুদ্রকূলে স্থাপন করা হয়। তা হবে নিরাপদ অন্তত সুনামী ঝুঁকিমুক্ত।
***
ছবি নেট থেকে সংগৃহীত