কক্সবাজারের রামু, উথিয়া এবং টেকনাফের ধ্বংসযজ্ঞ আর শেখ হাসিনার ঘোলা পানিতে মৎস শিকার

সেলিম আনোয়ার
Published : 3 Oct 2012, 06:23 AM
Updated : 3 Oct 2012, 06:23 AM

কক্সবাজারের রামু, উথিয়া এবং টেকনাফের সাম্প্রতিক সহিংসতা বর্বরোচিত হামলা।বৌদ্ধমন্দিরের ভাঙা হলো।আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি ও ধর্মীয় মূল্যবোধের উপর চরম ঘৃণিত ও বিকৃত আঘাত।ধর্মীয় স্থাপনাও বসতিতে হামলা ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বিভিন্ন থানায় ২০টি মামলা হয়েছে।এসব ঘটনায় মোট আসামী প্রায় ৫ হাজার লোক।গ্রেফতার করা হয়েছে ১৬৬ জনকে। বিএনপি নিরপেক্ষ ব্যক্তির নেতৃত্বে বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবী করেছেন। আওয়ামীলীগ দাবী করেছেন বিএনপি জামাত এর সাথে জড়িত।বিএনপি-জামাত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করতে চায়।

আদতে বিএনপি জামাত জোটবদ্ধভাবে অন্দোলন করছে না। বিএনপির সাথে জামাত জোট বলে বিএনপিকে মৌলবাদী তকমা লাগানো আওয়ামী লীগের কূটচাল।

বিতর্কের শুরু একদল উগ্র নাস্তিক মহানবী (স:)কে বিদ্রুপ করে নির্মিত ছবি ইনোসেন্স অব মুসলিম কে কেন্দ্র করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের আন্দোলন সমাবেশ এর বিপক্ষে ফেইসবুক মিডিয়াতে বিবৃতি দেয়া এবং সরকারও তাদের সমাবেশে লাঠিচার্জ করেছে।একজন বৌদ্ধ উস্কানিমূলক বিবৃতি দিয়েছে। আর রামুতে বৌদ্ধমন্দিরে আঘাত হানা হয়েছে।ব্যাপারটা এই রকম নয়।উপাসনালয়ে জঘন্য হামলা কোনভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।

এবার আসি ইসলাম ধর্মের উৎপত্তি কিভাবে?আরবের লোকেরা আইয়ামে জাহেলিয়াত কায়েম করেছিল। তাহারা আল্লাহতায়াকে ভুলে মূর্তি পূজা শুরু করে।পরস্পর দাঙ্গা হাঙ্গামায় লিপ্ত হয়ে যায়।চুরি যেনা ব্যাভিচার ইত্যাদি তাদের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার।মৃত্যুকালে বাবা পুত্রকে প্রতিশোধ নেয়ার উপদেশ করতো এভাবে বংশ পরম্পরায় যুদ্ধ বিগ্রহ চলতে থাকতো। কন্যাসন্তানদের জীবিত কবর দিত। বাবার মৃত্যুর পর সৎমাকে বিবাহ করার প্রতিযোগিতা লেগে যেত। এত খারাপ অবস্থা আর কখনই আসবে না। আইয়ামে জাহেলিয়াত।কোন শাসক তাদের শাসন করতে চাইতো না।সেই অন্ধকার জমানায় আলোকবর্তিকা হয়ে হযরত মুহাম্মদ (সাঃএর আগমন।তিনি সবাইকে আলোর দিকে ডাকলেন।মক্কার বিধর্মীরা তাদের মুসলমানদের উপর অকথ্য নির্যাতন করলো। তারপরও লোকজন ইসলাম গ্রহণকরতে লাগলেন্ ।কাফেররা মুসলমানদের সাথে চুক্তি করলেন সুস্পষ্ট পক্ষপাতদুষ্ট।মুসলমানদের বিপক্ষে। নবী সন্ধি করলেন।হুদায়বিয়ার সন্ধি।পড়লে বুঝা যাবে মুসলমানদের ঠকানো হয়েছে।অথচ সেটিই ছিলো প্রকাশ্য বিজয়। অন্যধর্মাবলম্বিরা মুসলমানদের সঙ্গে মেশার সুযোগ পেল।আর ইসলাম ধর্মের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে অনেক বেশি লোক ইসলাম গ্রহণ করলো।

সম্প্রীতি সহিংসতার সাথে ইসলাম প্রচার আর প্রসারের ঘটনার কোন মিল খুজে পাওয়া যাবে না।মুসলমান আঘাত করে না ।আঘাতের বিপক্ষে পালটা আঘাত করে।মুসলমানদের মুসলমানির গল্প পড়লে আদর্শ আর শান্তির পথের সন্ধান পাওয়া যাবে। সংঘর্ষের নয়।

উত্তম বড়ুয়া বিরূপ মন্তব্য করলেন যুক্তরাষ্ট্রের এক ইহুদী ইনোসেন্স অব মুসলিম নিয়ে আর মুসলমানরা বৌদ্ধদের উপর হামরে পড়লো ব্যাপরটা এমন হবার নয়।
বাংলাদেশ শান্তিপ্রিয় মানুষের দেশ্ হিন্দু- মুসলমান সহাবস্থান সারা পৃথিবীর জন্য দৃষ্টান্তমূলক।

সমস্যা যদি হয়ে থাকে সেটা উগ্র নাস্তিকতাবাদ্ ।এই নাস্তিকরা মুসলমানের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে।মানুষের ধর্ম নিয়ে ঠাট্টা মসকরা বিদ্রুপ করেন একটি পর্যায়ে ঘটে যায় নাশকতা।এই সমস্ত নাশকতার মূলে রয়েছেন তারা।কারণ সমূলে উৎপাটন করলে ফলাফল আসার সুযোগ থাকে না।যারাই এই হামলার সাথে জড়িত তাদের হামলা করতে যারা প্রণোদিত করলো তারা কিন্তু সমান অপরাধী।

এই নাশকতা নিয়ে শুরু হয় ঘৃন্য রাজনীতি।পারস্পারিক দোষারোপ করে ফায়দা হাসিলের চেষ্টা।শেখ হাসিনা স্বয়ং এই দেশে জঙ্গিবাদ আছে বলে আন্তর্জাতিক মহলে তোলপার সৃষ্টি করেছেন।আর নিজেকে জঙ্গিবাদ মৌলবাদ হটানোর জন্য অবশ্যম্ভাবি হিসেবে দাবী করেছেন।বিএনপি অন্তত এ কাজটি করেনি।তবে বিএনপির দাবি আওয়ামীলীগ দেশে জঙ্গিবাদ প্রণোদিত করে।

ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে মানুষ ক্ষেপিয়ে লাভ কি?উপাসনালয় ধ্বংস হবে কেন?এর দায় কি ইহুদী নাস্তিক চক্রের ঘারে পরে না।ধর্ম আমাদের সামাজিকতা ,নৈতিকতা,মহানুভবতা ক্ষমাশীলতা শিক্ষা দেয়।মানুষকে প্রকৃত মানুষ হতে শিখায়।ধর্মীয় কুসংস্কার আমাদের বিভ্রান্ত করে।নাস্তিকতা আমাদের জন্য অমঙ্গল ডেকে আনে।

রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় যেতে চাইবে।এটা রাজনৈতিক দলের বৈশিষ্ট।শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে হাতে তজবী আর জোব্বা পরে নির্বাচণী প্রচারণায় নেমেছেন।তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ঘারে চরে ক্ষমতায় আসা প্রথম দল আওয়ামীলীগ।১/১১ হলো ।এইবার পরিবর্তনের ভাওতাবাজি।জয় ইতিমধ্যেই অ্যামেরিকান ইহুদিকে বিয়ে করেছেন। শেখ হাসিনা বেশিরভাগ সময় আমেরিকাতেই কাটিয়েছেন।সুশীল সমাজের ঘারে পা দিয়ে সরকারের সীমাহীন তোয়াজ করে পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে তার মসনদে আরোহন।দ্বিতীয় তত্ত্বাবধায়ক (দুই বছর মেয়াদী???) সরকারের সকল গৃহীত কর্মসূচী সম্পাদন করার প্রতিজ্ঞাও তিনি করেছেন।

রূপকথার আষাঢ়ে গল্প শুনিয়ে তার ক্ষমতায় আসা। ১০ টাকায় চাল,প্রত্যেক ঘরে চাকুরী আরও কত কি?দেশ কি পেল? আকাশছোঁয়া দ্রব্যমূল্য,বিডিআর ট্রাজেডি(স্বাধীনতা যুদ্ধের পর এত সেনা সদস্য নিহত হওয়ার ঘটনা নাই)শেয়ার বাজার ধ্বস,লক্ষ লক্ষ মানুষ এই ধ্বসে অর্থহীন সর্বশান্ত।সীমাহীন অতীতের সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে,হত্যা,গুম আর আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি,হলমার্ক কেলেংকারী, সংবিধানে পরিবর্তন এনে নিরপেক্ষ নির্বাচন পদ্ধতি বাতিল করে গণতন্ত্র হত্যা আর শেখ হাসিনার মতই বাক সর্বস্ব মন্ত্রীসভা,যাদের বক্তব্য শুনে মানুষজন মহাবিরক্ত।দেশটা এখন ১৫ ফেব্রুয়ারীর নির্বাচনের দিকে যাচ্ছে।তাই যদি হয় তাহলে তো খালেদা জিয়ার সেই সরকারই বৈধ আর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মাধ্যমে নির্বাচিত বর্তমান সরকার প্রশ্নবিদ্ধ।

সোজা পথে ক্ষমতায় যেতে পারবে না বিধায় শেখ হাসিনার এই বাঁকা পথ।জঙ্গিবাদ ইস্যু সৃষ্টি করে যুক্তরাষ্ট্রের স্নেহভাজন হওয়া।আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায় করা, ২০২১ সাল পর্যন্ত গণতন্ত্র হত্যা করে ক্ষমতায় থেকে যাওয়া।দেশটা সংকটের দিকে যাচ্ছে।দেশটা সংঘর্ষের দিকে যাচ্ছে।চরম রাজনৈতিক অসহনশীলতা আর ধ্বংস আসন্ন প্রায়।

৭১ এর চেতনা, ৫২ এর আন্দোলনের ৯১ এর গণঅভ্যুত্থান সব কিছুই আজ অর্থহীন মনে হচ্ছে।