৭ই নভেম্বর সিপাহী জনতার বিপ্লব নাকি মুক্তিযোদ্ধা হত্যা দিবস?

সেলিম আনোয়ার
Published : 4 Nov 2012, 05:46 PM
Updated : 4 Nov 2012, 05:46 PM

বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ও সৈনিকদের কাছে গ্রহণযোগ্য ছিলোনা বলেই তারা ৩/১১-এর বিপক্ষে রাজনৈতিকভাবে অবস্থান গ্রহণ করেছিলো এবং সিপাহী-জনতা মিলে সেই ৩/১১–এর অভ্যুত্থানকে ব্যার্থ করে দিয়েছিলো। ওই সময়কার ভিডিও ফুটেজ বা পত্রিকাগুলোতে দেখা যায় যে, সিপাহী-জনতা একাত্ম হয়ে সংহতি প্রকাশ করে বলছে "সিপাহী-জনতা ভাই ভাই"। ওই অভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে জনগণ যে ম্যাসেজ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলো তা হলো – আমরা বাংলাদেশকে আর ওই একদলীয় বাকশালী শাসনব্যবস্থা বা ইন্ডো-সোভিয়েট লবীর দিকে ফিরে যেতে দিতে রাজী নই।১৯৭৫ সনের ৩রা নভেম্বর ক্যু করে ক্ষমতা দখল করতে চেষ্টা করেছিলেন, তাদেরকে বিতাড়িত করে সিপাহী-জনতা প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সাহেবকে ৭ই নভেম্বর ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করেছিলেন।

কর্ণেল তাহের স্বাধীনতা আন্দোলনের নিমিত্তে প্রয়োজনীয় সামরিক বুৎপত্তি অর্জনের লক্ষ্যে সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন ।তিনি পাকিস্তান থেকে পালিয়ে এসে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন এদেশকে স্বাধীন করতে লড়াকুদের ট্রেনিং দিতেন ।সর্ববৃহৎ ১১ নং সেক্টর এর অধিনায়কত্ত্ব করেছিলেন ।যিনি কামালপুর সম্মুখযুদ্ধে তার বাম পা হারিয়েছিলেন ।সেনা অফিসারদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্ছার হয়েছিলেন । যিনি জাসদ'র বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা ও গণবাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ।সিপাহি জনতার বিপ্লবে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ,মুক্ত করেছিলেন জিয়াকে ।জিয়া বলেছিলেন 'ইউ আর মাই ব্রাদার ,ইউ আর মাই সেভার '।কর্নেল তাহেরতুমি আমাকে বাঁচালে। কর্ণেল তাহের প্রথম মুক্তিযোদ্ধা সেনা অফিসার যাকে ফাঁসি দেয়া হয়েছিল ।তারিখ ২১ শে জুলাই ১৯৭৬ , ভোর ৪টা ।৭ ই নভেম্বর সিপাহী জনতার অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্র জাসদ জ্যাকসন হাইটসে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ১৯৭৫ সালের ৭ই নভেম্বর বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক ও সেনাবাহনীর মধ্যে যে অস্থিরতা, বিশৃঙ্খলা, গণহত্যা চলছিল তা থেকে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গড়ে উঠা সেনাবাহিনী ও দেশকে রক্ষার জন্য এগিয়ে আসেন যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্ণেল আবু তাহের।

তার নেতৃত্বে বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা ৭ই নভেম্বর বিপ্লবের মাধ্যমে সেনাবাহিনী ও জনগণের মধ্যে আস্থা তৈরী করে হানাহানি, হত্যা বন্ধ করে সেনাবাহিনীর মধ্যে চেইন অব কমান্ড ফিরিয়ে এনে দেশে শান্তি শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছিলেন।বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে এদিন সরকারি ছুটি থাকে।গুরুত্বপূর্ণ দিবস হিসেবে উদযাপিত হয়।আর আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় থাকলে তা হয়না।এটিকে বিপরীত দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার অপপ্রয়াস চালানো হয়।বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে ৭ই নভেম্বর দিনটি জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসাবে পালিত হয়। আর বর্তমান সরকার দিনটিকে "মুক্তিযোদ্ধা হত্যা দিবস" হিসাবে পালিত করছে। ভবিষ্যত প্রজন্ম কোন্ ইতিহাসটা প্রাধান্য দিবে?আমার জন্মের আগের কাহিনী।ঘটনাটা কি আসলে বলেন দেখি?একটু ইতিহাস চর্চা হয়ে যাক।