ডিজিটাল নয়, মানবিক বাংলাদেশ চাই: আনু মুহাম্মদ

শাহাদাত হোসাইন স্বাধীন
Published : 12 Jan 2017, 02:30 AM
Updated : 12 Jan 2017, 02:30 AM
ডিজিটাল নয়, মানবিক বাংলাদেশ গড়ার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ। রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রশ্নে ছাত্র ইউনিয়ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের উদ্যোগে আয়োজিত গণশুনানিতে তিনি এই মন্তব্য করেন।
বুধবার (১১ জানুয়ারী) বেলা ২.৩০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের গ্যালারী কক্ষে এই গণশুনানী অনুষ্ঠিত হয়।
ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সভাপতি দীপাঞ্জন সিদ্ধান্ত কাজলের সভাপতিত্বে আয়োজিত এই গণশুনানিতে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব ও অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি ড. মোহাম্মদ আমির হোসেন ভূঁইয়া ও ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক জি এম জিলানী শুভ।
শুনানিতে ড. আনু মুহাম্মদ বলেন, যে গুটি কয়েক মানুষ রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্রের পক্ষে তারা শুধু বলছেন ক্ষতি হবে না ক্ষতি হবে না কিন্তু তা প্রমাণ করছে না। আজকে ড. জাফর ইকবালের মতো বিজ্ঞজনেরা এই ইস্যুতে চুপ করে আছেন।
তিনি বলেন, সরকার বলছে ২০২০ সালের মধ্যে ২০,০০০ হাজার  মেগাওয়াট, ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০,০০০ হাজার মেগাওয়াট, ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০,০০০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা তৈরী হবে। পরিবেশ বান্ধব প্রকল্পের মাধ্যমে এই চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুত প্রকল্পে কিলাওয়াট প্রতি ২ টাকা খরচ হবে যা কয়লা বা তেল ভিত্তিক প্রকল্পের চেয়ে কম খরচের ও অপেক্ষাকৃত পরিবেশবান্ধব। এসময় তিনি সৌর বিদ্যুত কেন্দ্রের প্রস্তাব রাখেন।
তিনি বলেন, এক একর অয়তন বেষ্টিত সোলার প্যানেল থেকে এক মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে অথচ বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানীর বেদখলে রয়েছে সরকারের ১২ হাজার একর জমি। তাছাড়া বায়োগ্যাস বিদ্যুৎ ও মানুষের  বজ্র রিসাইক্লিং করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে চাহিদা মেটানো সম্ভব। এই ধরনের একটি প্রস্তাব শীঘ্রই সরকারের কাছে জমা দেয়া হবে বলে জানান তিনি।
জাবির অর্থনীতি বিভাগের এই অধ্যাপক বলেন, ডিজিটাল নয়, আমরা মানবিক বাংলাদেশ চাই। ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বলে পরিসংখ্যানগত হিসেব দিয়ে জনগণকে আচ্ছন্ন করা যাবে না। বিজ্ঞাপন দিয়ে ফ্রুটিকা  বিক্রি করা যায় কিন্তু রামপাল বিক্রি করা যাবে না বলে তিনি সতর্ক করেন।
পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি আমির হোসেন ভূইয়া বলেন, শুধু বাংলাদেশ নয় ভারতের মানুষও কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুত কেন্দ্র চায় না। অথচ ভারত সরকার তাদের নিম্ন মানের কয়লার বাজার তৈরীর জন্য বাংলাদেশের উপর এই ধরনের বিপজ্জনক প্রকল্প চাপিয়ে দিচ্ছে।
গণশুনানিতে অংশগ্রহণকারীদের আগামী ২৬ তারিখের ঢাকা বন্ধ সফল করার আহবান জানান ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জি এম জিলানী শুভ।