ডঃ জাফর ইকবাল বিতর্ক: কিছু অভিযোগ ও তার উত্তর

শফিকুল ইসলাম(শফিক)
Published : 20 May 2015, 06:27 PM
Updated : 20 May 2015, 06:27 PM

দেশে চলমান ডঃ জাফর ইকবাল স্যার কে নিয়ে বিতর্কের রেশ ধরে শ্রদ্ধেয় জাহেদ-উর-রহমান ও কাওসার জামান এর দুটি লেখা আমার নজরে এসেছে। জাহেদ ভাই একজন মানুষ জাফর ইকবালের দোষ-গুণ ব্যাখ্যা করতে সচেষ্ট হয়েছেন। অপরদিকে কাওসার জামান ভক্তদের কাছে অতিমানবীয় জাফর ইকবাল কে তীব্র ভাষায় সমালোচনার পাশাপাশি জাফর ইকবালের জন্য দুই একটি অনিচ্ছুক প্রশসাসূচক শব্দও ব্যয় করেছেন। ভেবেছিলাম এই বিষয়ে আর লিখব না, কারণ এর আগেও লিখেছি। প্রজন্মের দায়, তাই আবার লিখতে হচ্ছে।

জাহেদ ভাইয়ের সচেয়ে বড় অভিযোগ ছিল জাফর স্যার কেনো ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচন নিয়ে কিছু বললেন না। সম্ভবত তিনি ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের নৈতিকতার ব্যাপার টা নিয়ে জাফর স্যারের বক্তব্য শুনতে চেয়েছেন। আমিও ভাবছিলাম তিনি কেনো বক্তব্য রাখেননি? একটা ইউটিউব লিঙ্ক আমার এই ভাবনার অবসান ঘটায়।তিনি তাঁর অবস্থান ব্যখ্যা করে বলেন তিনি যেকোন মানুষ কে তিনি বিচার করেন মুক্তিযুদ্ধের ফিল্টারে। গনতন্ত্রের নামে সহিংসতা বন্ধ না করে, মুক্তিযুদ্ধ কে অস্বীকার করে কেউ রাজনীতি করতে পারেন না। তিনি দাবি করেন তিনি সুশীল হতে চান না, তিনি একটা রাজনীতিতে বিশ্বাস করেন সেটার নাম বাংলাদেশ। তিনি এই বক্তব্যে এর সমাধান কি হতে পারে তাও উল্লেখ করেন। এখানে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো আদর্শ। বায়বীয় আদর্শ নাকি তাঁর মতো অবিচল আদর্শ কোনটা ভাল?

জাহেদ ভাই বলেছেন অনিয়ম, দুর্নীতি, মানবাধিকার লঙ্ঘন ইত্যাদি নিয়ে জাফর স্যার অন্য সরকারের আমলে কথা বললেও এই সরকারের আমলে কেনো চুপ আছেন? আমার কাছে মনে হয় উনি ওনার মুল ফোকাস যুদ্ধাপরাধীর বিচার, আর প্রশ্নপত্র ফাঁস, আর শিক্ষা বিষয়ক লিখায় বেশি জোর দিতে চেয়েছেন । আদর্শিক অবস্থানের কারণে মন্দের ভালো বেছে নিয়ে কিছু বিষয়ে নীরব থাকাকে শ্রেয় মনে করেছেন। তবে তাঁর মতো মানুষের এসব ভেবে যে হৃদয়ে রক্ত ক্ষরণ হয়নি তা নয়। তাই তিনি চুপ থাকতে পারেন নি। কথা বলেছেন যার ফলে তিনি আজ ব্লগার!

এরপর আসি জনাব কাওসার জামানের কথায়। তিনি জাফর ইকবালের নেতৃত্ব নিয়ে নির্মম প্রশ্ন করেছেন। একজন নেতা হিসেবে জাফর ইকবালের মুল্যায়ন এই লেখার শেষাংশে একটু ব্যাপক পরিসরে করব।

জনাব কাওসার তার লেখায় শাবি তে শিকক্ষদের মারামারি দেখেছেন। আমি ১০-১৫ পত্রিকা পড়েও মারামারি কথা পাইনি। তিনি সাংসদ কয়েসের মতো উপাচার্যের ছুটির পেছনে জাফর ইকবালের দায় দেখেছেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় তার এই অভিযোগের কতটুকু ভিত্তি আছে। উপর মহলের নির্দেশ ছাড়া ভিসি ছুটিতে যাবেন এই কথা সাম্প্রতিক বিষয়ে খোঁজ খবর রাখেন এমন কেউ বিশ্বাস করবেন বলে মনে হয় না। কারণ মাসের পর মাস শিক্ষকদের অবস্থান ধর্মঘট , অনশন কর্মসূচীর পরেও সরকার নির্বাচিতদের স্বপদে টিকে থাকার নজির সাম্প্রতিক বাংলাদেশে আছে। যেখানে প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা ৩৭ জন শিক্ষকের মধ্যে ৩৫ জন পদত্যাগ করেছেন সেখানে জাফর ইকবাল কে একাকি দোষ দেওয়ার কয়েসীয় রীতির কারণ কী? বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কী প্রাইমারির বাচ্চা? একজনের প্রসাবের চাপ দিলে সবার প্রসাবের চাপ দেয়।

আর জয়ের মন্তব্যের ব্যাপারে জাফর ইকবাল স্যারের প্রতিবাদে জাহেদ ভাইয়ের ভাষায় বলতে হয় শত হোক জাফর স্যার তো আর হালুয়া রুটির ভাগ পাওয়া সহস্র নাগরিক কমিটির সদস্য নন, তাই তিনি সরকারের সবকিছুকে চোখ বন্ধ করে সমর্থন করতে পারেননি।অতীতে মোসাহেবরা আওয়ামীলীগের অনেক ক্ষতি করেছে। সাম্প্রতিক সময়ের উদাহরণ হলো গোলাম মওলা রনি এবং এ কে খন্দকার । আওয়ামীলীগের বড়ি যতদিন খেয়েছে ততদিন আওয়ামীলীগের গুণকীর্তন করেছে । আওয়ামীলীগের বড়ি খাওয়ার সময় শেষ হওয়ার সাথে সাথে কাদের মোল্লার মুরিদ হয়েছে। বা বঙ্গবন্ধুর মুখে জয় পাকিস্তান শুনেছে। জয়ের বক্তব্য জাফর ইকবালের ভাল লাগেনি। তাই তিনি প্রতিবাদ করেছেন।তিনি নিজেদের ব্যবস্থা নিজেদের নিতে বলেছেন ।তিনি প্রতিবাদে যে ভাষা ব্যবহার করেছেন তা কিন্তু কাট কাট মার মার শব্দে ভরপুর নয়। তাঁর কি প্রতিবাদ করার অধিকার নেই?বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে জনাব জয়ের বক্তব্য কী চাপাতি ওয়ালাদের স্বস্তি দেবে না? জাফর ইকবাল কে ব্লগার আখ্যা দিয়ে তাঁর বিচার দাবিতে জামায়াত পন্থী পত্রিকা গুলোর প্রতিবেদন তার প্রাথমিক আলামত ধরে নিতে পারেন।

জাফর ইকবাল সাংসদ কয়েসকে নিয়ে কোন কথা বলেননি, কিন্তু সাংসদ কয়েস জাফর ইকবালের উপর কেনো এতো ক্ষ্যাপা? এর উত্তরেও বেরিয়ে আসবে সাংসদ কয়েসের অযৌক্তিক অবস্থান । এর আগে গুচ্ছ পদ্ধতিতে যবি ও শাবির পরীক্ষা নিতে গেলে জাফর ইকবালের বিরুদ্ধে আন্দোলন হয়। জাফর ইকবাল চেয়েছেন দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণির অর্থ ও সময় বাঁচাতে। তাই তিনি চেয়েছিলেন নিজস্ব উদ্ভাবিত প্রযুক্তির মাধ্যমে মেডিকেল ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যায় ভর্তিচ্ছুরা সারা দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় এক প্রশ্নে পরীক্ষা দেবে এবং মেধা অনুযায়ী পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবে। তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কার্যক্রম নিজে পরিচালনা করে দেখিয়ে দিয়েছিলেন এটা সম্ভব। কিন্তু অর্থ লোলুপ বিশ্ববিদ্যালয় গুলো তাঁর এই সৎ উদ্দেশ্য কে বুঝতেও চায়নি উপরন্তু সিলেটে তাঁর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংসের অভিযোগ এনে আন্দোলন হয়। সিলেটের কিছু মানুষ শাবিতে সিলেটিদের জন্য ৫০% কোটা সংরক্ষণের দাবি জানায়। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে আঞ্চলিক কোটার জন্য আন্দোলন এই এলাকার শিক্ষিত মানুষদের জন্য কত বড় লজ্জার একটু ভেবে দেখবেন। জাফর ইকবাল এসব অন্যায্য দাবির তীব্র বিরোধীতা করেছেন। তাই এখানে জয়ের মন্তব্যের প্রতিবাদ নয়, সাংসদ কয়েস ব্যক্তিগত অবিবেচনাপ্রসূত ইচ্ছা চরিতার্থ করতে না পারার ব্যর্থতায় সৃষ্ট ক্ষোভ থেকে জয়কে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছেন এবং জাফর ইকবাল বিরুদ্ধে একের পর এক অসভ্য কথা বলেছেন ও কাজ করে যাচ্ছেন। আওয়ামী নেতৃত্ব তা বুঝতে পারছেনা, তাই এই ঘটনা এতো ডালপালা মেলছে।

জনাব কাওসার তার পোষ্টে বলেছেন,
"খুব সচেতন থাকলেই কেবল এসব ভুলকে পাশ কাটানো যায়। নতুবা এমন নেতৃত্ব ভুলের সংখ্যা শুধু বাড়ায়। জাফর ইকবাল এখন এ পর্যায়েই আছেন।"

একজন জাফর ইকবাল সম্পর্কে কতটা অজ্ঞ হলে এমন কথা বলা যায়। বাংলাদেশে জাফর ইকবালের মতো অরাজনৈতিক কল্যাণকামী নেতা আর দ্বিতীয় কেউ আছে বলে আমি মনে করিনা। আসুন একজন নেতা জাফর ইকবাল কে মুল্যায়ন করি তাঁর নেতৃত্বে পরিচালিত কিছু কাজ ও গবেষণা কর্মের আলোকে।

একমুখী শিক্ষা আন্দোলন
একমুখী শিক্ষা নাম দিয়ে বিজ্ঞান বিমুখ এক শিক্ষা ব্যবস্থা জাতির উপর চাপিয়ে দেওয়ার চার দলীয় জোট সরকারের চেষ্টার কথা মনে আছে। এই জাফর ইকবাল এই ব্যবস্থার তীব্র প্রতিবাদ করেছেন । কলাম লিখে, বই লিখে, মানুষ কে বুঝিয়ে এর বিরুদ্ধে তীব্র জনমত সৃষ্টি করেছেন।বিভিন্ন মহলের প্রতিবাদের মুখে সরকার ওই শিক্ষা ব্যবস্থা বাস্তবায়নের পথ থেকে সরে আস্তে বাধ্য হয়। এই ঘটনা প্রমাণ করেনা জাফর ইকবাল স্যারের সম্মোহনী নেতৃত্ব।

মুঠোফোনে ডিজিটাল ভর্তি কার্যক্রম,চাকরির আবেদন এবং অন্যান্য
সম্ভবত জাফর ইকবালের নেতৃত্বে সবচেয়ে জনকল্যানঅমুখী আবিষ্কার।শাবি ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষ থেকে সর্বপ্রথম বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে মুঠোফোনে এসএমএসের মাধ্যমে ডিজিটাল ভর্তির কার্যক্রম চালু করেছে। এমন একটি জটিল প্রক্রিয়াকে সহজভাবে সম্পন্ন করায় প্রধানমন্ত্রীসহ দেশ-বিদেশে অনেক সম্মান, প্রশংসা ও পুরস্কার কুড়িয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এতে ঘরে বসে পরীক্ষার জন্য রেজিস্ট্রেশনের আবেদন করতে পারায় হাজারো পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সময় ও অর্থের অপচয় থেকে মুক্তি মিলেছে। বর্তমানে ঢাকা ,শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতীত দেশের অধিকাংশ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এ পদ্ধতিটি অনুসরণ করে আসছে।এই প্রক্রিয়ায় এসএসসি, এইচএসসির ফলাফল জানা ও পুনঃনিরীক্ষনের আবেদন করা যায় দ্রুত। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে পিএসসি,বিভিন্ন সরকারি ব্যংকের নিয়োগ পরীক্ষার আবেদন এই পক্রিয়ায় হচ্ছে। আর শাবি কতৃপক্ষ শুধুমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল অপারেটর টেলিটক কে এই সফটওয়্যার ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। টেলিটক এই প্রক্রিয়ায় যেকোন আবেদনের জন্য ১০% হারে চার্জ নেয়। একটা ছোট্ট হিসেব দিই। গত ৩৫ তম বিসিএসে মোট আবেদনকারী ছিল ২ লক্ষ ৪৬ হাজার। একটা আবেদন করার জন্য দুটি মেসেজ পাঠাতে হয় যেখানে সরকারের আয় ১১ লক্ষ ৩১ হাজার ৬০০ টাকা (প্রতি মেসেজ ২ টাকা ৩০ পয়সা) এবং আবেদন ফি বাবদ প্রত্যেক প্রার্থী জমা দেয় ৭০০ টাকা যা থেকে টেলিটকের আয় ৬৩ টাকা(প্রায়)। এ খাত থেকে আয় ১৫ কোটি ৪ লক্ষ ৯৮ হাজার টাকা। মেসেজ ও ভর্তি ফি বাবদ মোট আয় ১৬ কোটি ৬ লক্ষ ২৯ হাজার ৬০০ টাকা। এরকম লাখ লাখ আবেদন টেলিটকের মাধ্যমে হয় যা সরকার কে কোটি কোটি টাকা আয়ের ব্যবস্থা করে দেয়। ১৬২২২ এই নাম্বারে যত এসএমএস সংক্রান্ত কাজ সব জাফর স্যারের নেতৃত্বের ফসল।টেলিটক লাভজনক সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে সুনাম অর্জন করার পেছনে জাফর স্যারের নেতৃত্বে আবিষ্কৃত সফটওয়্যারের কী অবদান তা টেলিটকের কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসা করলে জানতে পারবেন ।আপনারা স্যারকে কত টাকা বেতন দেন? আর উনি কত দিচ্ছে? এই আবিষ্কার ২০১০ সালে এম বিলিয়ন অ্যাওয়ার্ড লাভ করে।ইউরোপের কোন দেশে হলে হয়তো নোবেল পুরস্কার পেত।

প্রথম বাংলা সার্চ ইঞ্জিন উদ্ভাবন
গত বছর এপ্রিলে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় বাংলাদেশের প্রথম ও পূর্ণাঙ্গ সার্চ ইঞ্জিন পিপীলিকার। গ্রামীণফোন আইটির অর্থায়ন ও ব্যবস্থাপনায় এ সার্চ ইঞ্জিনটির তৈরি করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের একদল শিক্ষার্থী। অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের পরিচালনায় এর নেতৃত্ব ও তত্ত্বাবধানে ছিলেন বিভাগের শিক্ষক রুহুল আমীন সজীব। এর মাধ্যমে বাংলা তথ্য অনুসন্ধান ও বিশ্লেষণের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে চার ধরনের সুবিধা পাওয়া যাবে-সংবাদ অনুসন্ধান, ব্লগ অনুসন্ধান, বাংলা উইকিপিডিয়া অনুসন্ধান ও জাতীয় ই-তথ্যকোষ অনুসন্ধান। যা বাংলাদেশ ও বাংলা ভাষার জন্য একটি মাইলফলক।

ট্র্যাকিং ডিভাইস
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন তরুণ গবেষক উদ্ভাবন করেছে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যানবাহনের অবস্থান নির্ণয়ের ভেহিকল ট্র্যাকিং ডিভাইস। ট্র্যাকিং ডিভাইস হচ্ছে গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম (জিপিএস) ভিত্তিক একটি পদ্ধতি। একটি জিপিএস বস্তু তার অবস্থানের স্থানাঙ্ক পাঠায় একটি সার্ভারে। এ সার্ভার থেকে বস্তুটির অবস্থান নির্ণয় করা সম্ভব। এ পদ্ধতিতে এসএমএস বা ওয়েবের মাধ্যমে সহজেই গাড়ির অবস্থান, গাড়ির ইঞ্জিনের অবস্থা, গাড়ি স্থির অথবা চলন্ত অবস্থায়, গাড়ি কত বেগে কোন দিকে চলছে তা জানা সম্ভব। বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি পরিবহন বাসে পরীক্ষামূলকভাবে এ ডিভাইস ব্যবহার করে সফল হয়েছেন গবেষকরা। এ পদ্ধতি উদ্ভাবনে গবেষণা দলে কাজ করেছেন অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক রুহুল আমিন সজীব, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সৈয়দ রেজওয়ান নাবিল এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী নওশাদ।

মানববিহীন ড্রোন
বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ উল্লেখযোগ্য উদ্ভাবন হচ্ছে মানববিহীন ড্রোন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকটিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালে তত্ত্বাবধানে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সৈয়দ রেজোয়ানুল হক নাবিলের নেতৃত্বে একদল তরুণ গবেষক পরীক্ষামূলকভাবে চালকবিহীন বিমান (ড্রোন) আকাশে ওড়াতে সক্ষম হয়। যা দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় তথা বাংলাদেশের জন্য একটি বিরাট অর্জন। বর্তমানে গবেষকরা ড্রোনটিকে আরো উন্নত করতে কাজ করে যাচ্ছেন।

জাফর ইকবালের নেতৃত্বের কথা আরো বলা যাবে।সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে খ্যাত দেশের প্রথম বিজ্ঞান-প্রযুক্তিনির্ভর একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয় এর যে খ্যাতি তার পেছনে জাফর ইকবালের নেতৃত্ব অস্বীকার করার সাহস কার আছে? গণিত অলিম্পিয়াডের মাধ্যমে বাংলাদেশের অনেক ছাত্রছাত্রীর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিভার স্বাক্ষর রাখার পেছনেও আছে তাঁর অবদান । অনেক তরুণ –তরুণীর জীবনের গল্প পরিবর্তন করার পেছনেও রয়েছে তাঁর ভালোবাসা মিশ্রিত শাসন।তাঁর অসাধারণ নেতৃত্বের কথা পড়ুন তার ছাত্র ও পরে সহকর্মীর লেখায়।আর নির্লোভ ও দেশপ্রেমী জাফর ইকবালের গল্প শুনুন তাঁর শিক্ষকের মুখে। যারা বুঝবে এতটুকুতে বুঝবে।যারা জাফর ইকবালের শুধু সাদা চুল দেখেন, বিমূর্ত অনুপ্রেরণাদায়ী জাফর ইকবালকে উপলব্ধি করতে পারেন না অথবা করতে চান না তাঁদের হাজার বলেও কোন লাভ নেই।বাংলাদেশে জাফর ইকবালের জায়গা না হলেও আমেরিকার বেল ল্যাবে ঠিকই হবে।

আর বাড়াতে চাই না । শেষ করব শ্রদ্ধেয়জন জুলফিকার জুবায়েরের একটি কথা দিয়ে- বর্তমান সময়ের রাজনীতি কিভাবে মানুষকে ক্ষতিগস্থ করে তার বাস্তব উদাহরণ জাফর ইকবাল স্যার হয়ে উঠুক তা আমি কখনও চাইনি। চোর কিংবা অপরাজনীতিবিদরা চুরি করলে বিষয়টা আমাদের কাছে মামুলী, কিন্তু কোন ভদ্রলোক মানুষ হবার কারণে ভুল করলে আমার বড় নির্মম হয়ে উঠি ।