আমি যখন কলেজ ছাত্র তখন শুনতাম, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করতে চাইলে যুদ্ধ করতে হয়। ওই সময় অবাক হলেও এখন হাড়ে হাড়ে বুঝেতে পেরেছি কেন শুনতে হয়েছিলো এই কথা।পাবলিক বিশ্বববিদ্যালয়ে একটি আসন পাওয়া মানে হচ্ছে হঠাৎ আকাশ ছুঁয়ে ফেলা।
ভর্তিযুদ্ধে টিকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করার টিকিট নিশ্চিত হলো এ বছর। ভর্তি হলাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগে।
বছরের প্রথম দিন ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ে ওরিয়েন্টেশন।
সকালের নাস্তা ভাবী তৈরি করেছেন। আগেই বলা ছিলো আমি সকাল সাড়ে ৮টায় বের হবো।
তখনো থাকার জন্য মেসের ব্যবস্থা হয়নি। এ এম এম জাহিদুল কবির সম্পর্কে ভাই হবেন। আছেন খুলনা র্যাব -৬ এ। আমি যে পরিবেশ বিজ্ঞান ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয় পেয়েছি এতে ভাইয়া সবচেয়ে খুশি হয়েছিলেন।
খুলনা থেকে গোপালগঞ্জ যাওয়া অনেকটা আত্মহারা হওয়ার মত ঘটনা ছিল আমার জন্য। ভাই থাকায় আমার যাতায়াতেও কোনও সমস্যা হয়নি।
ওরিয়েন্টেশনে উপস্থিত ছিলেন ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান স্যার। এছাড়াও অন্যান্য শিক্ষকরা।
আর মঞ্চের সামনে ছিলেন কয়েক হাজার শিক্ষার্থী; তাদের মধ্যে আমিও একজন।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড .খোন্দকার নাসিরউদ্দিন স্যারের বক্তব্য শুনে আমি আরো মুগ্ধ হই। আমি উপলব্ধি করলাম, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও সেশনজট নেই।
ওরিয়েন্টেশন শেষ হয়েছিলো বিকাল ৩টায়। সবার জন্য দুপুরের খাবারের ব্যবস্থাও ছিল। এরই ফাঁকে আমার বিভাগের একজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে পরিচয়ও হয়ে গেল। ওর নাম মাহমুদ গাজী।
ক্যাম্পাসের ভেতর এক পা করে এগুছি আর মুগ্ধ হচ্ছি। দারুণ সবুজ এক উঠান যেন।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আছে আধুনিক ল্যাব। আছে পর্যাপ্ত বই নিয়ে দুই তলা গ্রন্থাগার। এই লাইব্রেরির এক পাশে আছে 'বঙ্গবন্ধু কর্ণার' যেখানে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে সকল ইতিহাস সংরক্ষিত।
শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে ইন্টারনেট সুবিধা নিশ্চিতে ১২০টি কম্পিউটার নিয়ে ই-লাইব্রেরি।
শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে বশেমুরপ্রবিতে ১০টি বাস নিয়মিত ব্যবহৃত হয়।
নতুন একটি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়টি এতো তাড়াতাড়ি সবকিছু গুছিয়ে নিয়েছে এটা খুবই আশাব্যঞ্জক। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী হিসেবে গর্ব হয় তাই।