বোরকা পড়া কি অপরাধ?

ইমুবিডি
Published : 3 March 2012, 03:09 PM
Updated : 3 March 2012, 03:09 PM

শুরুতে প্রশংসা করছি মহান আল্লাহ তাআলার যিনি আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, জীবন ও সম্পদ দিয়েছে এবং তার দেয়া সেই জীবন ও সম্পদ ক্রয় করে নিয়েছেন জান্নাতের বিনিময়ে। দরুদ ও সালাম পেশ করছি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালামের প্রতি, যাকে আল্লাহ তাআলা নির্দেশ দিয়েছেন মুমিনগনকে সর্বাত্নকভাবে ইসলামে প্রবেশ করার জন্য।

'হে মুমিনগন! তোমরা সর্বাত্নকভাবে ইসলামে প্রবেশ কর এবং শয়তানের পদাংক অনুসরন করিও না। নিশ্চয় সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।(২ঃবাকারাঃ২০৮)।
আল্লাহ ও প্রিয় রসুল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সালামের নির্দেশের সাড়া দিয়েই ইসলামের ফরজ বিধান পর্দা পালন করছেন রাজধানীর রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের ছাত্রী সুমাইয়া ইসলাম ও অন্যরা। আল্লাহ ও তাঁর নবী(সাঃ) এর নির্দেশ যথাযথ ভাবে পালন করাই উক্ত ছাত্রীদেরকে কলেজে প্রবেশ করতে দেননি অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার মোহাম্মদ গোলাম হোসেন সরকার। তিনি সাংবাদিককে লম্বা বোরকা 'অড বা দৃষ্টিকটু ড্রেস হিসাবে উল্লেখ করে বলেন,'একটা মেয়ে এ বিষয়ে জোরালো আপত্তি করেছে, সে পায়ের নখ পর্যন্ত বোরকা পরে এসেছে। এটা দৃষ্টিকটু। আমরা এটা অ্যালাউ করতে পারি না। তাই তাকে ক্লাসে ঢুকতে দেয়া হয়নি'।অধ্যক্ষ গোলাম হোসেন সাহেবের নিকট আল্লাহর হুকুম(যা সূরা আন-নূর এর ৩১নং আয়াতে বর্ণিত হয়েছে) অপেক্ষা একটি মেয়ের আপত্তি অধিক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। অথচ কুরআনের সূরা নূর এর ৩১ নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন,

'মুমিন নারীদেরকে বল, তাহারা যেন তাহাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাহাদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে। তাহারা যেন যাহা সাধারণত প্রকাশ থাকে (চেহারা ও উভয় হাতের কব্জি পর্যন্ত) তাহা ব্যতীত তাহাদের আভরণ(অলংকার বা আর্কষয়ণীয় পোশাক) প্রদর্শন না করে, তাহাদের গ্রীবা ও বক্ষদেশ যেন মাথার কাপড় দ্বারা আবৃত করে…।"
আল্লাহর এই হুকুম পালনের সর্ব উৎকৃষ্ট পোষাক হল বোরকা। শরয়ী প্রয়োজন ব্যতীত নারীদেরকে বাইরে বের হতে নিষধে করে সূরা আল-আহযাবে ৩৩নং আয়াতে আওল্লাহ তাআলা বলেন
'তোমরা গৃহাভ্যন্তরে অবস্থান করবে মুর্খতা যুগের অনূরুপ নিজেদেরকে প্রদর্শন করবে না…।'
কোন মুমিন মুসলিমদের পক্ষে আল্লাহর হুকুমের বিরোধিতা ও তার আয়াতকে প্রত্যাখ্যান করা সম্ভব নয়।কারণ কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন –
' যাহারা আমার আয়াতকে প্রত্যাখ্যান করে তাহাদিগকে দগ্ধ করিবই , যখনই তাহাদের চর্ম দগ্ধ হইবে তখনই উহার স্থলে নূতন চর্ম সৃষ্টি করিব, যাহাতে তাহারা শাস্তি ভোগ করে। নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশা্লী প্রজ্ঞাময়।
(৪ নিসাঃ ৫৬)।

প্রকৃতপক্ষে এরাই ইয়াহূদী ও খৃষ্টানদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নকারী মুনাফিক। এরা আল্লাহর বিধানের পরিবর্তে জাহিলী যুগের বিধি-বিধান কামনা করে। এদের সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন- 'তবে কি তাহারা জাহিলী যুগের বিধি-বিধান কামনা করে? নিশ্চয় বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য বিধান দানে আল্লাহ অপেক্ষা কে শ্রেষ্ঠতর?(৫ মায়িদাঃ৫০)
আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা) পর্দার বিধান দিয়েছেন মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদেরকে পূর্ণরুপে পূত- পবিত্র রাখার উদ্দেশ্যে আর এই সকল লোক চাই মুমিনদের মাঝে অশ্লীলতার প্রসার ঘটাতে, যা তার বর্তমান কার্যক্রমই প্রমাণ করছে। এ সকল লোককে আল্লাহ তাআলা মর্মান্তুদ শাস্তির সংবাদ দিয়ে বলেন "যারা মুমিনদের মধ্যে অশ্লীলতার প্রসার কামনা করে তাদের জন্য আছে দুনিয়া ও আখেরাতের মর্মান্তুদ শাস্তি এবং আল্লাহ জানেন তোমরা জান না" (২৪ঃনুরঃ১৯)
তাই এই সকল মুসলিম নামদারী মুনাফিকদের উচিৎ তাওবা করে দ্বীনের দিকে পরিপূর্ণভাবে প্রবেশ করা। তা না হলে তারা দুনিয়াতে লাঞ্চিত ও অপমানিত হবে মুমিনদের দ্বারা এবং আখেরাতে রয়েছে আল্লাহর মর্মান্তুদ আপ্যায়ন জাহান্নামের শাস্তি। রাজঊক মডেল কলেজ কর্তৃপক্ষের নিকট অনুরোধ করছি আপনারা এই ইসলাম বিদ্বেষী অধ্যক্ষকে বহিস্কার করুন এবং দেশের সরকার ও প্রশাসনের নিকট অনুরোধ করছি এই অধ্যক্ষকে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির ব্যবস্থা করুন এবং যেভাবে পর্দা পালন করার জন্য বাধ্য করা যাবে না বলে আইন প্রনয়ন করেছেন, একই ভাবে এই আইন করুন পর্দা পালনে কোনভাবে বাধা প্রদান করা যাবে না। দেশবাসীর নিকট অনুরোধ অধ্যক্ষ গোলাম হোসেনের মত অন্যান্য সকল ইসলাম ও মুসলিমের শ্ত্রুদের পরিত্যগ করুন, তাদের বিরুদ্বে কঠোর প্রতিরোদ গড়ে তুলুন । কারন যারা নিজ স্বার্থ উদ্বার করতে গিয়ে দ্বীন- ধর্ম ও ইমান ত্যগ করতে পারেন তারা কখোনই দেশ ও জাতির কল্যাণকামী হতে পারে না