যে শিক্ষাব্যবস্থায় মস্তিষ্কে মেধার ভিত মজবুত হয় না, বরং দুর্বল ও মানসিক প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয় আমরা তা চাই না। কারণ শিশুরা সারাক্ষণ ইচ্ছার বিরুদ্ধে বই নিয়ে ব্যস্ত থাকে। খেলাধুলার সময় নেই। এতে শিশুরা অনেক কিছু থেকেই বঞ্চিত হচ্ছে। তৈরি হয় মানসিক প্রতিবন্ধকতা। প্রতিদিন নানান সূত্র থেকে বিভিন্ন বয়সী শিশুদের মানসিক সমস্যার কথা শুনে অনুমান করছি এর জন্য শিশুর এককেন্দ্রিক জীবন যাপনই মনে হয় দায়ী।
শিশুদের মানসিকসহ বিভিন্ন বিকাশের ক্ষেত্রে সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার পথ রুদ্ধ করে সামাজিকতা, আনন্দ বিনোদন সব বাদ দিয়ে যে শিক্ষা জাতির উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে তা তোতাপাখির শিক্ষা। এতে পাখির বেঁচে থাকা ও সুস্থতার ও সাফল্যের খবর আসছে না, আসছে প্রতিদিন দুঃসংবাদ।
শিশুর সার্বিক বিকাশসহ ভিত যাতে শক্ত হয় সে বিষয়ে অভিভাবকের সচেতন হতে হবে। ভিত শক্ত না হলে বইয়ের তথ্য, প্রশ্নের উত্তর মুখস্থ করে কিচ্ছু হবে না।আর এজন্যই কত শিক্ষার্থী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পায় না। কত শিক্ষার্থী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে নিম্নমাধ্যমিকে ঝরে পড়ছে. কত শিক্ষার্থী মাধ্যমিক পর্যায়ে ঝরে পড়ছে. বা তারপর আর এগুতে চাচ্ছে না কে তার খবর রাখে? নাকি কোনো গবেষণা করা হচ্ছে। কারো যেন কোনো দায় নেই।
ফলে, দেশের প্রতিটি বাবামা ও শিক্ষা-সংশ্লিষ্টজন – ব্যতিক্রম নগণ্য, যারা বেনিয়াগিতে সংশ্লিষ্ট তারা ছাড়া আমরা সবাই দুশ্চিন্তায় আছি শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা বাংলা মাধ্যম, ইংরেজি মাধ্যম, নানাভার্সনে ভাগ হয়ে গেছে। এজন্য শিশুরাও অভিভাবকরা একটা দোটানায় পড়ছে। এতে করে মানসিক প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয় অনেকেরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিপরীক্ষায় কত শিক্ষার্থী ফেইল করলো। এটি কিন্তু আমাদের এক প্রকার তথ্য দিয়েছে যে জিপিএ পাঁচ-ই সব নয়। এটা ঠিক, পরীক্ষাও ভালো করতে হবে, তবে সব বিকাশের অন্যান্য ক্ষেত্রকে বাদ দিয়ে শিশুদের শুধু পরীক্ষার ক্ষেত্রে ভালো করানোর জন্য চেষ্টা একক ক্ষেত্রভিত্তিক প্রচেষ্টা তার পরিণাম পঙ্গুত্ব। আপনার শরীরের শুধু একটা অঙ্গের যদি পুষ্টি ও বৃদ্ধি হয়, আর অন্য অঙ্গগুলোর সমভাবে উন্নতি না ঘটে তাকে তো আপনি পঙুত্ব বলবেন, নাকি? তাই বলছি, শিশুকে শিক্ষা, সামাজিকতা আবেগ নিয়ন্ত্রণ, বুদ্ধিতে, ভাষায় প্রতিটি ক্ষেত্রে সমানভাবে সুস্থভাবে বিকশিত হওয়ার সুযোগ
এখন সব কিছুতেই প্রতিযোগিতা। জীবনের আসল প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে নিজের মেধাকে মজবুত করতে হবে।
আব্দুল মোনেম বলেছেনঃ
বড়ই বড় সমস্যা। পড়্..পড়্..নম্বর কম কেন্? এছাড়াও আরও একটা ব্যাপার আমার নজরে পড়ে। কোন শিক্ষক ভুল করে সঠিক উত্তর কেটে দিয়ে নম্বর কম দিলে কোন কোন পেরেন্ট শিক্ষকের উপর যেন হামলে পড়েন। নম্বরটাই যেন সব। ছেলেটা বা মেয়েটা যে ঠিকমতো অংকটা করতে পারল সেটা নিয়ে সন্তুষ্টি নেই। নম্বর কেন কেম দিল? ঠিক উত্তরকে শিক্ষক কেন কেটে দিল? শিক্ষকের ভুলটাই এতো বড় হয়ে বাজে যে একটা হারমার অবস্থা।
এক সময় দূর হবে। যদি পিতা-মাতা’রা নিজেদের সন্তানকে অন্তত ৫/৬ ক্লাশ পর্যন্ত নিজেরাই পড়াতে সক্ষম হন তবে বিষয়টা সহজ হয়ে আসবে। আমার ধারণা নিজে পড়ানোর সময় না পাওয়ার কারণে, বা স্কুলের উপর আস্থা না থাকার কারণে বিচলিত অবস্থার চাপ গিয়ে সন্তানের উপর পড়ে।
শহীদুল্লাহ শরীফ বলেছেনঃ
ধন্যবাদ। আপনার বর্ণিত ঘটনা বাস্তব ও সম্ভবত, খুবই অভিজ্ঞতাপ্রসুত, মন্তব্যও খুবই গঠনমূলক। আমার সন্তান স্কুলে যায়, কলিগদের কাছে, আত্মীয়-স্বজনদের জীবনাভিজ্ঞতা আমাকে ভাবিয়ে তোলে, দুশ্চিন্তায় ফেলে প্রায়ই। তাই মন অনুভূতিগুলো লিখি। আবারো ধন্যবাদ।
কাব্য বলেছেনঃ
বাচ্চাদের অসুস্থ প্রতিযোগিতা থেকে বের করে , সুস্থ শিক্ষা দেয়ার সুযোগ তৈরি করে দিতে হবে আমাদেরকেই …