বিজয় দিবস উপলক্ষে সাকিব-এর অটিস্টিক শিশুদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি ও সামাজিক দায়বদ্ধতা

শহীদুল্লাহ শরীফ
Published : 15 Dec 2014, 04:51 PM
Updated : 15 Dec 2014, 04:51 PM

সাকিব হাসিমুখে হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন একটি অটিস্টিক শিশুর দিকে, শিশুটির চোখেমুখে হাসি, বুকজুড়ে সীমাহীন খুশি। ছবিটি দেখে মনটা ভরে যায়। সোয়াক অটিস্টিক শিশুদের জীবনে আজকের দিনের আনন্দ মুহূর্তগুলো ছিল এমনই স্বর্গীয়, অকল্পনীয়। কারণ, ওরা আগে থেকে বিষয়টি জানত না। আজকের এই যে অটিস্টিক শিশুদের সঙ্গে বিজয় দিবসের আনন্দ ভাগাভাগি করার পরিকল্পনাটি সাকিব আল হাসান-এর নিজের। তাই সোয়াক অটিস্টিক শিশু, সেখানকার নিবেদিত কল্যাণকর্মীবৃন্দ সবাই আজ বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিবকে তাদের ঘরেই পেয়ে যেন হাতে চাঁদ পেয়েছিলেন। ছবিতে দেখুন না? সাকিবের স্ত্রীসহ সোসাইটি ফর দ্য ওয়েলফেয়ার অব অটিস্টিক চিলড্রেনের (সোয়াক) এর কর্মীবৃন্দ সবার মুখের খুশিতে কি স্বগীয় আভা পাওয়া যায় না? মানুষ যদি মানবতার জন্য এভাবে নিজে থেকে এগিয়ে যায় সেখানে স্বর্গের সুখ নেমে আসে। আজ সোয়াক কার্যালয়ে কল্পনার স্বর্গই নেমে এসেছিল। অটিস্টিক শিশুদের সঙ্গে বিজয় দিবসের আনন্দ ভাগাভাগি করলেন না সাকিব আল হাসান, আসলে স্বর্গকে মর্তে নিয়ে এসেছিলেন।

রাজধানীর শ্যামলীতে অবস্থিত সোসাইটি ফর দ্য ওয়েলফেয়ার অব অটিস্টিক চিলড্রেনের (সোয়াক) কার্যালয়ে অটিস্টিক শিশুদের সঙ্গে অন্যরকম সময় কাটান বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডার। এরপর শিশুদের সঙ্গে দুপুরের খাবার খান তিনি। শিশুদের নিজ হাতে খাওয়ান। হাত মিলান। আদর করেন। আমরা তারকাদের এরকম মানবতার কাজে দেখতে চাই। শুধু নিজের তারকা খ্যাতি নিয়ে অর্থ নিয়ে উল্লাস করাই যে প্রকৃত জীবনের সুখ নয়; মানুষের জন্য আর্ত-পীড়িত, সমাজে অবহেলিত, প্রকৃতিগতভাবে বা যেকোনভাবে যারা বিশেস চাহিদাসম্পন্ন তাদের পাশে দাাঁড়ালে যে কী সুখ তা সাকিব মনে হয় পেয়েছেন। তাই বারবার তিনি ছুটে যাচ্ছেন সেবার মনোবৃত্তি নিয়ে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে যাঁরা কাজ করেন তা;রে কাছে। আজ গেলেন অটিস্টিক শিশুদের কল্যাণে যাঁরা কাজ করেন তাঁদের সাথে সহানুভূতি জানাতে। সাকিবের সামাজিক দায়বদ্ধতা, মানবিক মূল্যবোধ, সেবার মানসিকতা সবার মধ্যে, বিশেষ করে অন্যান্য তারকাদের মধ্যেও দৃষ্টান্ত হিসেবে ছড়িয়ে পড়ুক।

বিজয়ের মাসে একজন তারকা কর্তৃক এর চেয়ে ভালো কাজ আর সামাজিক-মানবিক দায়বদ্ধতার এরচেয়ে অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত কিছুই হতে পারে না।

তবে, এটিই সাকিব আল হাসান-এর প্রথম সামাজিক দায়বদ্ধতার দৃষ্টান্ত নয়।

এই তো কিছু দিন আগেই (০৫/১২/২০১৪) তিনি তাঁর প্রতিষ্ঠান কসমিক জোভিয়ানের পক্ষ থেকে মালিক হিসেবে, কর্মীবৃন্দ ও সকল ক্রেতাদের পক্ষ থেকে আর্থিক সাহায্যের একটি চেক প্রদান করেছিলেন সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে কর্মরত বেসরকারি সংস্থা 'অপরাজেয় বাংলা'কে। সেটিছিল এই বিজয়ের মাসে দেশে আর্থিক অনুদান ও সামাজিক দায়বদ্ধতার আরেকটি অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত।

বাংলাদেশে অনেক খ্যতিসম্পন্ন তারকা যারা একাধারে বিত্তবান ও অনেকের কাছে অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব, তারাও আশা করি সাকিবের এই আর্থিক অনুদানের দৃষ্টান্তটি অনুসরণ করবেন।

সাকিব এরকমই একটি সমাজসেবাব্রতী ও দানশীল হওয়ার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে তাঁর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন তারকা মর্যাদার সাথে আরেকটি তারকা যুক্ত করে দিয়েছে। ভক্তদের কাছে তাকে নিয়ে গর্ব করার মতোএকটি অনুষঙ্গ তিনি তৈরি করে দিয়েছেন।সাকিব বলেছেন, আর্থিকভাবে সক্ষম প্রতিটি নাগরিকেরই সামাজিক দায়বদ্ধতা রয়েছে। সমাজের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে কাজ করা "অপরাজেয় বাংলাকে" আজ কসমিক জোভিয়ানের মালিক, কর্মীবৃন্দ ও সকলক্রেতাদের পক্ষ থেকে আর্থিক সাহায্যের একটি চেক প্রদান করা হয়। এতে রাতারাতি কোনো পরিবর্তন আসবে না আমি জানি। তবেআমরা ছোটো বড়ো সবাই যদি এগিয়ে আসি, অবশ্যই পরিবর্তন আসবে। আসুন সবাই মিলে সুন্দর একটি বাংলাদেশ গড়ি।

কৃতজ্ঞতা: ছবিগুলো বিডিনিউজডটকমের ক্যামেরাম্যান জনাব আসাদুজ্জ্মান  প্রামাণিক এর  তোলা ও কয়েকটি ইন্টারনেট /ফেইচবুক থেকে সংগৃহীত।