প্রতিদিন ব্লগে রোহিঙ্গা ইস্যুতে লেখা পোস্ট এবং মন্তব্যগুলো পড়ে অবাক হয়ে ভাবি, ধর্ম বিরোধীরা কিভাবে ধর্মের নাম ভাংগিয়ে ফায়দা লুটে। যে ধর্ম নিয়ে ব্যবসার অভিযোগ জামাতের বিরুদ্ধে সেই একই ধর্ম নিয়ে ব্যবসা করতে দেখা যায় ধর্ম বিরোধীদের। একজন বাগানে ফুল গাছ বোনার কথা বলে ভিক্ষা করে তো আরেক জন বাগানের ভূত তাড়ানোর কথা বলে ভিক্ষা করে। কী আশ্চর্য মিল এদের।
সীমান্ত খুলে দিয়ে সব রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ঢুকতে দেয়া হোক এটা আমরা অধিকাংশ মানুষই চাই না। কেন চাই না তার পেছনে অনেক যুক্তিও আছে। কিন্তু আমরা মানবতা বিসর্জন দিয়ে যা তা কথাবার্তা বলা শুরু করব তা কিরে হয়। রোহিঙ্গাদের বিষয়ে সহানুভূতি জানিয়ে লেখা সাধারণ ব্লগারদের উপর যে ভাষায় মন্তব্য করা হচ্ছে, তাতে তো অনেকেরই সভ্যতা নিয়ে প্রশ্ন আসবে। মানুষ হত্যাকারী, ধর্ষণকারী ও নির্যাতনকারী প্রত্যেকের বিচার আমরা চাই। সে আওয়ামিলীগ, বিএনপি, জামাত, রোহিঙ্গা নাকি রাখাইন তা দেখার বিষয় নয়।
একাত্তরের গণহত্যা পৃথিবীর ভয়াবহ ঘটনা গুলোর মধ্যে একটি। সেখানে শুধুই গণহত্যা ছিল না, ছিল গণধর্ষণ। আমাদের লজ্জা করা উচিত যে এইরকম ঘটনা আমাদের সাথে ঘটার পরও অন্য দেশের গনহত্যা, গণধর্ষণ দেখে নির্বিকার থাকি, প্রতিবাদ এবং নিন্দা জানাই না। একাত্তরে কুকর্মের সাথে জড়িত প্রত্যেক কুলাঙ্গারের নিকৃষ্টতম শাস্তি হওয়া উচিত যাতে সারা পৃথিবী মনে রাখে। দুনিয়ার যেখানেই ঘটুক এমন ঘটনা আমরা তার প্রতিবাদ জানাই, নিন্দা জানাই, বিচার চাই। একাত্তরে যেমন আমাদের প্রতি অনেকেই হাত বাড়িয়েছে, আমাদেরও উচিত হাত বাড়িয়ে দেয়া। ততটুকুই যেখানে নিজেরা বিপদে পড়ব না।
বিপদে আপদে মানুষের পাশে দাড়ানোই মানুষের ধর্ম, এটা নিয়ে রাজনীতি করা ঠিক না। নিজের বিবেক দিয়ে আমরা বিবেচনা করতে পারি কী করা উচিত। এক ধর্মকে পুঁজি করে নামধারী ধার্মিক এবং ধর্ম বিরোধী উভয়েই ভাল কামায় তা আমরা ভালই জানি।
শাহরিয়ান আহমেদ
17.06.2012