পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জঙ্গিরা!

শাহরিয়ান আহমেদ
Published : 11 August 2012, 05:11 PM
Updated : 11 August 2012, 05:11 PM

মানবেন্দ্র নারায়ন লারমা (১৯৪১-১৯৮৩) যিনি একজন বাংলাদেশী চাকমা, পার্বত্য চট্রগ্রামের মানুষের অধিকার আদায়ের নামে ১৫ই ফেব্রুয়ারী ১৯৭২ সালে গঠন করেছিলেন পার্বত্য চট্রগ্রাম গণ সংহতি সমিতি (United People's Party of the Chittagong Hill Tracts) যা PCJSS নামেও পরিচিত। একই সালে লারমা গঠন করেন পার্বত্য চট্রগ্রাম গণ সংহতি সমিতি এর জঙ্গি সংগঠন "শান্তিবাহিনী"। শান্তি বাহিনী নামের এই জঙ্গি গ্রুপটি প্রতিষ্ঠা লাভের পর থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নামার। বার্মা ও ভারতীয় সামরিক বাহিনীর সহায়তায় অতি দ্রুত শান্তি বাহিনী হিংস্র জঙ্গি গ্রুপে রূপ নেয়।


১৯৮৯ সালের ১১ই জুন, দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস এর শিরোনামে আসে Bangladeshi Insurgents Say India Is Supporting Them , সেখানে বলা হয়- "প্রায় এক যুগেরও সময় ধরে ইন্ডিয়া গোপনে বাংলাদেশের ভিতর উপজাতি বিদ্রোহীদের অস্ত্র ও অর্থ সাহায্য দিয়ে আসছে যারা স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করছে।" সেখানে আরও বলা হয় – "একজন উর্দ্ধতন নিরাপত্তা কর্মকর্তা এখানে সাহায্যের ব্যপারটি নিশ্চিত করেছেন এবং বলেছেন অগণিত সংখ্যক বিদ্রোহী যোদ্ধারা সীমান্ত ঘেষে ইন্ডিয়ান প্যারামেলেটরি ক্যাম্পের কাছে অবস্থান করছে। বিস্তারিত না বলে, তিনি আরও যোগ করেন "সরকার তাদের সাহায্য করছে"।
"বিদ্রোহীদের একজন মুখপাত্র বলেছিলেন ইন্ডিয়ান অফিসিয়ালস ১৯৭৬ সাল থেকে অর্থ ও অস্ত্র দেয়া শুরু করেছে, বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ও ভারতের বন্ধু শেখ মুজিবর রহমান সামরিক কু তে নিহত হওয়ার পর।"

লেখাটির শেষে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস আরও জানায়, "শান্তি বাহিনীর বলেছে তারা ৫০০ জনকে হত্যা করেছে, যারা বাংলাদেশ মেলেটরির সদস্য, পুলিশ ও সাধারণ জনগণ।"


১৯৭৭ সালে শান্তি বাহিনী প্রথম বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ওপর আক্রমণ করে। এবং ১৯৭৭ থেকে ১৯৯৭ পর্যন্ত দীর্ঘ ২০ বছর তারা যুদ্ধে সরাসরি লিপ্ত থাকে। এক পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, ১৯৭৯ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত হতাহতের মধ্যে ১৭৬ জন আর্মি, ৯৭ জন বিডিআর, ২৩ জন এপিবিএন, ৪৩ জন পুলিশ, ৮ আনসার, ৪জন ভিডিপি রয়েছে, এছাড়া আট শতাধিক বাঙ্গালীও আছে। এর পাশাপাশি সরকারী কর্মকর্তা, পর্যটক, এনজিও কর্মী ও বাঙালিদের গণ অপহরণ ও গুম করা শুরু করে। পার্বত্য চট্রগ্রাম পরিণত হয় মৃত্যু ফাঁদে। বিদেশী মিশনগুলো তাদের নাগরিকদের বাংলাদেশ ভ্রমণের উপর সতর্কতা জারি করে।

১৯৯৭ সালের পার্বত্য চট্রগ্রাম শান্তি চুক্তির পর সম্পূর্ণ না হলেও অনেকটাই শান্ত হয়েছে পার্বত্য এলাকা। তারপরও পুরো নিরাপদ নয় চলাচল বা পর্যটনের জন্য। সন্তু লারমার নতুন করে যুদ্ধে নামার হুমকি তাই আবার তৈরি করেছে উদ্বেগ, আতংক।

শাহরিয়ান আহমেদ।

সুত্র:


http://pcjss-cht.org/photo-gallery.php
http://en.wikipedia.org/wiki/Manabendra_Narayan_Larma
http://en.wikipedia.org/wiki/Chittagong_Hill_Tracts_Conflict