যাদেরকে গালি দিলে গালিরও অমর্যাদা হয়!

শাহরিয়ান আহমেদ
Published : 26 July 2011, 10:49 AM
Updated : 26 July 2011, 10:49 AM

১৫ মিনিট থেকে ২০ মিনিট লাইনে দাড়িয়ে থাকার পর হুড়োহুড়ি করে বাসে উঠলাম। অসহ্য গরম, ভয়াবহ যানজট আর প্রচন্ড ভিড়ে মারা যাবার অবস্থা। এর মধ্যে মেজাজ খারাপ করা আরেকটা কারণ, এক লোক বাসে উঠেই চিত্‍কার চেঁচামেচি "ওই ড্রাইভার ! এত জোরে গাড়ি ব্রেক করছ কেন? এত মানুষ যে বাসে ঢুকাইলি অহন কী তর মাথায় জাগা দিবি? এমন আরও অনেক কথা উচ্চস্বরে বকেই যাচ্ছিল।
কথা বার্তার অসংলগ্ন তার মতই আচরণ করছিল সে। সংরক্ষিত মহিলা আসনের পাশেই ১২ থেকে ১৩ বছরের ছোট্ট একটি মেয়ের গা ঘেষে দাঁড়ানো ছিল লোকটা। এবং এভাবে দাড়িয়ে ছিল যেভাবে দাঁড়ানো উচিত না। বাচ্চা মেয়েটির অস্বস্তির ব্যাপারটি আমরা বুঝতে পারছিলাম ভাল করেই। লোকটা যেন একটু বেশিই বাড়াবাড়ি করছিল তাই আমি ভদ্রভাবেই বললাম " ভাই একটু সরে গিয়ে ঠিক হয়ে দাঁড়ান"।
শয়তানটা আমার মুখের সামনে মুখ এনে আস্তে আস্তে বলল "ভাই মহিলা সিটে চুম্বক লাগানো আছে, আমারে টানে"।

বুঝতে পারছিলাম না কী বলব বা কী করা উচিত। মনে পড়ছিল আলপনা নামের ছোট্ট অবুঝ শিশুটির কথা, টঙ্গীর একটি বাড়ির ছাদে যাকে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছিল, অসহ্য যন্ত্রনা নিয়ে নিষ্পাপ মেয়েটি আমাদের ছেড়ে চলে গেছে। হয়ত তার অভিশাপ আমাদের জন্য ছেড়ে গেছে! অভিশাপ ছাড়া আর কিইবা আমরা পাব, সৃষ্টির সেরা জীব হয়ে যা আমাদের দারা ঘটে সৃষ্টির নিকৃষ্ট জীবও তা করে না। হায়রে মানুষ!
আমি শেষমেষ শয়তনটাকে বলেই বসলাম " তোরে গালি দিলে তো গালিরও অমর্যাদা হবে"। ঘাড়টা বাঁকিয়ে বলল ওই কি হইছে? আমার পাশে আমার বয়সী একটা ছেলে দাঁড়ানো ছিল ও সামনে এসে বলল "ভাই ওরে লাত্থি মাইরা বাস থেকে নামাইয়া দেন"।

ঘটনাটি আর আগে বাড়েনি। আমি বাস থেকে নেমে ভাবছিলাম একটা উচিত শিক্ষা দিয়ে দিলেই বোধহয় ভাল হতো। এরাই তো মানব জাতিকে কলংকিত করেছে। প্রতিদিন কোথাও না কোথাও কারও না কারও সাথে এই ঘটনা গুলো ঘটছে। অনেকে যন্ত্রনা সহ্য করতে না পেরে পৃথিবী থেকে বিদায় নিচ্ছে আবার অনেকে সম্ভ্রম হারিয়ে সুইসাইড করছে। ওরা আমাদেরই কারো বোন, কারো মা অথবা কারো অবুঝ শিশু। প্রতিবাদ এবং প্রতিরোধ যদি কঠোর হয় অবশ্যই আমরা ফল পাব।