মটরসাইকেলের ড্রাইভার সিটের পিছনে কেউ আরোহী হলে তাকে ইংরেজিতে পিলন প্যাসেঞ্জার (pillion passenger)বলা হয়। যখন কেউ মোটর সাইকেলের পিছনে আরোহণ করে, আক্ষরিক অর্থেই সে নিজের জীবন ড্রাইভারের হাতে ছেড়ে দেয়। এটা খুব ঝুঁকিপূর্ণ রাইড, কিন্তু সাথে সাথে মজার এবং সাশ্রয়ীও। তাই নিরাপত্তার কথা ভেবে একে বন্ধ করা মুশকিল। বিশেষ করে আমাদের মত গরীব দেশে যেখানে বেশিরভাগ মানুষের গাড়ি কেনার সামর্থ্য নেই, রাস্তাঘাট নিম্নমানের এবং পাবলিক ট্রান্সপোর্ট অপ্রতুল, সেখানে মটরসাইকেলের পিলন প্যাসেঞ্জার হওয়ার বিকল্পই থাকে না অনেক সময়।
পৃথিবীর সবচেয়ে বিখ্যাত পিলন প্যাসেঞ্জার হলেন চে গুয়েভারা। তিনি তার বন্ধু আলবার্তো গ্রানাদোকে নিয়ে মাত্র সাড়ে চার মাসে দক্ষিণ আমেরিকার ১৪০০০ কি.মি. পথ পাড়ি দিয়েছিলেন মজা এবং দুঃসাহসিক কাজ করার ইচ্ছা থেকে। পরে এই অভিজ্ঞতাই তাকে বিপ্লবী হতে অনুপ্রাণিত করে।
আমার কাছে মটরসাইকেল হল রবীন্দ্রনাথের ছুটি গল্পের ফটিকচাঁদ (তেরো-চৌদ্দ বৎসরের ছেলের মতো পৃথিবীতে এমন বালাই আর নাই)। ফুটপাথে শান্তিমত হাঁটতে দেয় না, পিছন থেকে হর্ণ দেবেই। রাস্তা পার হতে গেলে বাস- ট্রাক ভয় পাই, তার থেকে বেশি ভয় পাই এদের উন্মাদ গতি দেখে। দেখেই বুঝা যায়, যানের উপর কনট্রোল নাই চালকের! আর পিছনের সিটে যদি কেউ বসে থাকে তার অবস্থা ভেবে সত্যি মায়া হয়।
এ প্রসঙ্গে একটা কৌতুক মনে পড়ছে। একবার রাশেদ, মিতু আর হাবিবের মটরসাইকেল ট্রাফিক পুলিশ দাঁড় করাল। রাশেদ ড্রাইভ করছিল। ওকে পুলিশ জিজ্ঞাসা করল, আপনি জানেন না মটরসাইকেলে দুইজনের বেশি উঠা নিষেধ? তিনজন একসাথে উঠেছেন কেন? রাশেদ পিছনে মিতুর দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে বলল, তিনজন! তাহলে কংকর আর প্রবালের কি হল? (ওই দুইজনও মটরসাইকেলে ছিল, রাস্তায় কোথাও খসে পড়েছে)।
ঢাকা শহরের নতুন বালাই হল পাঠাও-উবারের মটরসাইকেল। আচ্ছা, এরা যে এভাবে পিলন প্যাসেঞ্জার নিচ্ছে, দেশের আইন কি পারমিট করে? করলে কিভাবে করে! এইসব উবার চালকরা কি যাত্রীর জন্য হেলমেট রাখে? মনে হয় না। রাস্তায় এত মটরসাইকেল, আনেকগুলোর পেছনেই যাত্রী। কই কারো মাথাতেই তো হেলমেট দেখিনা।